Advertisement
E-Paper

মুখ্যমন্ত্রীর বিমানে সত্যিই কি সে দিন জ্বালানি ফুরিয়ে এসেছিল?

মুখ্যমন্ত্রীর ইন্ডিগো বিমানের পাইলট পটনা থেকে কলকাতার আকাশে পৌঁছে দেখেন, নামার লাইনে তিনি ৯ নম্বরে। তিনি চক্কর কাটতে শুরু করেন এবং কিছু সময় পরে কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-র কাছে ‘লো অন ফুয়েল’ জানিয়ে বার্তা পাঠান। দাবি করেন, ওখানে চক্কর কাটার জন্য আর ৮ মিনিটের মতো জ্বালানি আছে।

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:৩৮

বুধবার রাতে মুখ্যমন্ত্রীর বিমান নিয়ে কী সমস্যা হয়েছিল?

• মুখ্যমন্ত্রীর ইন্ডিগো বিমানের পাইলট পটনা থেকে কলকাতার আকাশে পৌঁছে দেখেন, নামার লাইনে তিনি ৯ নম্বরে। তিনি চক্কর কাটতে শুরু করেন এবং কিছু সময় পরে কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-র কাছে ‘লো অন ফুয়েল’ জানিয়ে বার্তা পাঠান। দাবি করেন, ওখানে চক্কর কাটার জন্য আর ৮ মিনিটের মতো জ্বালানি আছে। তার মধ্যে নামার অনুমতি না পেলে ডিজিসিএ-র নিয়ম নেমে উড়ে যেতে হবে রাঁচীর আকাশে।

এটিসি কী সিদ্ধান্ত নিল?

• নামার লাইনে ইন্ডিগোর আগে থাকা এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানের কাছে এটিসি জানতে চায়, ইন্ডিগোকে আগে নামতে দেওয়া যাবে কি না। এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলট জানান, তিনিও ‘লো অন ফুয়েল’। তাঁর কাছে কলকাতায় আর ৪ মিনিট চক্কর কাটার মতো জ্বালানি আছে। ফলে ইন্ডিগোকে অপেক্ষা করতে হয়। রানওয়েতে বিমান নামার পরে হইচই শুরু হয়।

বিমানযাত্রীদের তরফে হইচই কেন?

• নামার পরে ইন্ডিগোর যাত্রীরা দেখেন, রানওয়ে থেকে কিছু দূরে দাঁড়িয়ে রয়েছে দমকল ও অ্যাম্বুল্যান্স। তাঁদের অনেকের ধারণা হয়, বিমানের জ্বালানি শেষ হয়ে এসেছিল বলে জরুরি পরিস্থিতির আশঙ্কায় এই ব্যবস্থা। সে ক্ষেত্রে কেন মুখ্যমন্ত্রীর বিমানকে আগে নামতে দেওয়া হল না, সেই প্রশ্ন ওঠে।

রানওয়ের পাশে দমকল-অ্যাম্বুল্যান্স ছিল কেন ?

• প্রধান রানওয়ে বন্ধ করে সারাইয়ের কাজ চলছে। বুধবার সন্ধ্যায় দ্বিতীয় রানওয়েতেই একের পর এক বিমান নামছিল। সেই সময় আচমকা দৃশ্যমানতা কমে যায়। কোনও বিমান মাটি ছোঁয়ার মূহূর্তে দৃশ্যমানতা আরও কমে যদি বিপদ হয়, তাই দমকল ও অ্যাম্বুল্যান্স রাখা হয়েছিল। সেটা হয়েছিল ইন্ডিগো কলকাতায় নামার ১ ঘণ্টা আগেই। মুখ্যমন্ত্রীর বিমানের সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই।

সত্যিই কি বিমানে জ্বালানি বিপজ্জনক মাত্রায় কমে গিয়েছিল?

• না। পটনা থেকে ওড়ার সময়ে ৭ টনের কাছাকাছি জ্বালানি ছিল ইন্ডিগোর বিমানে। কলকাতায় নামতে না পারলে ৩০ মিনিট এবং রাঁচী গিয়ে সেখানে আরও ৩০ মিনিট চক্কর কাটার মতো জ্বালানি ভরেছিলেন পাইলট। কলকাতায় নামার পরেও বিমানের পেটে অন্তত ৪ টন জ্বালানি ছিল।

পাইলটরা সাধারণত কখন ‘লো-অন ফুয়েল’ বার্তা পাঠান?

• বিমানবন্দরে নামার আগে আকাশে চক্কর কাটার হিসেব মাথায় রেখে সব বিমানেই একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ জ্বালানি ভরা হয়। চক্কর কাটার জন্য নির্দিষ্ট জ্বালানি কমে এলে পাইলট ‘লো অন ফুয়েল’ বলেন। এটিসি আগের বিমানের সম্মতি সাপেক্ষে ওই বিমানকে আগে নামার অনুমতি দেয়।

সত্যিই কি ইন্ডিগোর বিমান লো-অন ফুয়েলে ছিল?

• যে সময় ইন্ডিগোর পাইলট লো-অন ফুয়েলের সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন, তখন ৮ মিনিট চক্কর কাটার মতো জ্বালানি ছিল বলে তাঁর দাবি। তাঁর বক্তব্য, ২২ মিনিট চক্কর কাটা হয়ে গিয়েছিল তাঁর। সেই মুহূর্তে নামার লাইনে তাঁর আগে ছিল ২টি বিমান। ২টি বিমানের পরে নামতে ৮ মিনিটের বেশি সময় তাঁর লাগত কি না, সেটা তদন্তসাপেক্ষ। সঙ্গে এটিসি-র দাবি, ২২ মিনিট নয়, বিমানটি ১৩ মিনিট চক্কর কেটেছিল।

কখন একটা বিমানকে সবার আগে তড়িঘড়ি নামানো হয়?

• বিমানের জ্বালানি যদি পুরোপুরি ফুরিয়ে আসে, তখন সেই পাইলট এটিসি-কে ‘শর্টেজ অব ফুয়েল’ বলে সতর্ক করেন। ওই পরিস্থিতিতে পাইলট ইমার্জেন্সি ল্যান্ডিংয়ের আবেদন জানান। তখন সবার আগে বিমানটিকে নামানো হয়। বুধবার ইন্ডিগোর পাইলট ইমার্জেন্সি ল্যান্ডিং চাননি।

‘লো-অন ফুয়েল’ আর ‘শর্টেজ অব ফুয়েল’-এর পার্থক্য কী?

• ‘লো-অন ফুয়েল’ বলার অর্থ, পরিবর্ত বিমানবন্দরে উড়ে যাওয়া এবং সেখানে চক্কর কাটার মতো পর্যাপ্ত জ্বালানি রয়েছে। আর ‘শর্টেজ অব ফুয়েল’ মানে বিমান অন্যত্র আর যেতেই পারবে না। তখন ইমার্জেন্সি ল্যান্ডিং ছাড়া কোনও উপায় নেই।

তথ্য: সুনন্দ ঘোষ|

সূত্র: কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ

CM Plane problem
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy