Advertisement
E-Paper

চিংড়ি চাষে অ্যান্টিবায়োটিক বন্ধে প্রচার মৎস্য দফতরের

বাংলার বাগদা চিংড়ির (ব্ল্যাক টাইগার) বিশেষ কদর রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিতে। কিন্তু বাগদা চিংড়ি চাষে নানা ঝুঁকিও আছে।

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:১৩

চিংড়ি চাষে অতিরিক্ত অ্যান্টোবায়োটিকের ব্যবহার রুখতে সচেতনতা প্রচার শুরু করল রাজ্যের মৎস্য দফতর। সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুরে বেশ কয়েকটি শিবির খুলে চিংড়ি চাষিদের নিয়ে সভা করেন মৎস্য বিজ্ঞানীরা। নানা তথ্য ও বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যাখ্যা দিয়ে চাষিদের বোঝানো হয়, মাত্রাতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে কী ভাবে চিংড়ি চাষের ক্ষতি হয়। যার জেরে মার খায় চিংড়ি রফতানি।

সম্প্রতি ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ বাংলার চিংড়ি আমদানির বরাত বাতিল করে দেয়। তাদের মূল অভিযোগই ছিল, চিংড়ির শরীরে ক্ষতিকারক অ্যান্টিবায়োটিক মিলছে। যা ইউরোপের দেশগুলিতে নিষিদ্ধ। এর ফলে বেশ কিছু রফতানি সংস্থার লোকসান হয়। এই ঘটনার পর রফতানিকারক সংস্থাগুলি মৎস্য দফতরের পাশাপাশি নবান্নেও চিঠি লিখে তাদের বিপদের কথা জানায়। কিন্তু চাষিদের সচেতনতার অভাবে কিছু কিছু জায়গায় এই সমস্যা থেকেই গিয়েছে। সেই কারণেই মৎস্য দফতরের উদ্যোগে জেলা স্তরে এই প্রচার অভিযান শুরু হয়েছে বলে এক আধিকারিক জানিয়েছেন। মেদিনীপুরের পরে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও সচেতনতা শিবির খোলার পরিকল্পনা রয়েছে।

বাংলার বাগদা চিংড়ির (ব্ল্যাক টাইগার) বিশেষ কদর রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিতে। কিন্তু বাগদা চিংড়ি চাষে নানা ঝুঁকিও আছে। সামান্য রোগেই এই চিংড়ি প্রচুর পরিমাণে মারা যায়। সে কারণে চিংড়ির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও নিরাময়ের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার এ রাজ্যে দীর্ঘদিনের রীতি। বিশেষ করে হ্যাচারিতে যদি চিংড়ির লার্ভার বৃদ্ধি ঠিক মতো না হয়। ওই সময় কোনও ভাবে যাতে জীবাণুর সংক্রমণ না হয়, তার জন্য যথেচ্ছ ভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

সম্প্রতি বাগদার জায়গায় চাষিরা ভ্যানামেই চিংড়ি চাষ শুরু করেছেন ব্যাপক ভাবে। এই চিংড়ি রোগে ভোগে কম। মারাও যায় না চট করে। তা ছাড়াও বাগদার তুলনায় এদের শরীর স্বাস্থ্যও বেশি ভাল হয়। বিদেশের বাজারেও এই চিংড়ির ভাল চাহিদা রয়েছে। কিন্তু এই চিংড়ির ক্ষেত্রেও মাত্রাতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বন্ধ হয়নি।

মৎস্য বিশেষজ্ঞদের মতে, চিংড়ি মাধ্যমে এই অ্যান্টিবায়োটিক মানুষের শরীরে গেলে নানা ধরনের জটিলতা তৈরি হতে পারে। বিভিন্ন ধরনের রোগ সংক্রমণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ কাজ না করার আশঙ্কা রয়েছে। এক মৎস্য বিজ্ঞানীর কথায়, ‘‘চাষের প্রয়োজনে সঠিক ওষুধ ব্যবহার ক্ষতিকারক নয়। কিন্তু তার মাত্রা জানা দরকার। কিন্তু অধিকাংশ চাষিরই সে ব্যাপারে সম্যক জ্ঞান নেই।’’

রফতানিকারক সংস্থাগুলির অনেকে এ অভিযোগও করেছে যে, চিংড়ি জল থেকে তোলার পর বরফ জলে চুবিয়ে রাখা হচ্ছে। ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ দিয়ে তার শরীরে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে অন্যান্য পদার্থ। যাতে চিংড়ির ওজন বেড়ে যায়। এগুলিও রফতানির পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক। বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত মৎস্য আধিকারিকরাও। যে কারণে প্রচার অভিযান চালিয়ে যাওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছে।

Black Tiger Prawns Prawn Pisciculture বাগদা চিংড়ি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy