সংস্কার করলেও খাল আবর্জনামুক্ত রাখতে কলকাতা-সহ প্রতিটি পুরসভাকে উদ্যোগী হতে হবে, এমনটাই জানাচ্ছে সেচ দফতর। এমনকি, খাল আবর্জনামুক্ত রাখতে সেচ দফতরও পুরসভাগুলির সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ করবে বলে জানালেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া।
সেচ দফতরের দাবি, বর্ষার আগে কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলার শহরাঞ্চলে ১২৩৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের খাল বার্ষিক চুক্তির ভিত্তিতে পরিষ্কার করা হচ্ছে। কচুরিপানা ও প্লাস্টিক খাল থেকে তোলা হচ্ছে। একই সঙ্গে কলকাতা পুরসভার সঙ্গে যৌথ পরিদর্শন করে নিকাশি খালে জল আটকে থাকার জায়গাগুলি চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বর্ষার আগে খালের সংস্কার প্রতি বারই হয়। কিন্তু প্রশ্ন অন্য দিক নিয়ে। কলকাতা শহরকে ঘিরে থাকা ৯৬৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের খালের সিংহভাগই দখল করে বসতি তৈরি করেছেন লোকজন। খাল কিংবা খালপাড় মানেই সেখানে আবর্জনা ফেলার যে প্রবণতা খাল দখল করে থাকা বাসিন্দা কিংবা কাগজকুড়ানিদের মধ্যে রয়েছে, তা ঠেকানো যায়নি কখনও। এমনকি, খালে প্লাস্টিক বা বর্জ্য ফেলাকেও দণ্ডনীয় অপরাধে শামিল করার হুঁশিয়ারি দেয়নি সরকার, অভিযোগ পরিবেশকর্মীদের। সম্প্রতি কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমও মেনেছেন, খালে আবর্জনা ফেলা না আটকালে শহরের নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।
সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়াও শুক্রবার স্বীকার করেছেন, খালে আবর্জনা, প্লাস্টিক ফেলা বন্ধ করা যাচ্ছে না। অথচ, খাল সংস্কার করে প্লাস্টিক ও আবর্জনা তোলার লোক এবং অর্থবল সেচ দফতরের নেই বলেও তিনি জানান। সেচমন্ত্রী বলেন, ‘‘খালের সংস্কার সেচ দফতরের কাজ। কিন্তু খালে আবর্জনা ফেলা বন্ধে পুরসভাগুলিকে উদ্যোগী হতে হবে। আমরা একসঙ্গে কাজ করব।’’ যদিও খাল দখলদারদের নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে মন্তব্য করেননি সেচমন্ত্রী। তিনি শুধু জানান, এ সব সিদ্ধান্ত নেবে অনেক উপর মহল।
অন্য দিকে, বন্যা মোকাবিলায় রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন বাঁধ, সেতু মেরামতি-সহ নানা প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে সেচ দফতর। দুর্যোগের মোকাবিলায় পদক্ষেপ ঠিক করতে বৃহস্পতিবার সেচ দফতর প্রতিটি জেলার প্রশাসনিক আধিকারিক, পঞ্চায়েত, ডিভিসি, আবহাওয়া দফতর, ডিভিআরআরসি-সহ একাধিক সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেছে। সল্টলেকে সেচ ভবনে বিশেষ কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত তা খোলা থাকবে। সেচমন্ত্রী জানান, ওই কন্ট্রোল রুম থেকে জেলা থেকে পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত নদীবাঁধে নজরদারি-সহ বন্যা মোকাবিলায় কাজের নজরদারি চলবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)