ফাঁকা বাড়িতে ঢুকে ঘরদোর লন্ডভন্ড করে চুরি। সেখানেই শেষ নয়। রীতিমতো এসি চালিয়ে ফ্রিজে থাকা মিষ্টি ও খাবার খেয়ে চম্পট দিয়েছে চোরেরা। দক্ষিণ দমদম পুরসভা এলাকার ন’নম্বর ওয়ার্ডে খোদ স্থানীয় পুরপ্রতিনিধির বাড়ির পিছনে এক রবার ব্যবসায়ীর বাড়িতে এ ভাবেই নগদ টাকা ও গয়না-সহ কয়েক লক্ষ টাকার সামগ্রী চুরি হয়েছে। ওই ব্যবসায়ীর এক আত্মীয় জানান, মুম্বই থেকে আজ, বুধবার শহরে ফেরার কথা পরিবারটির। তাঁরা ফিরলে তার পরেই নির্দিষ্ট ভাবে জানা যাবে, কত টাকার, কী কী জিনিস চুরি হয়েছে। চুরির ধরন দেখে পুলিশের ধারণা, চোরের সংখ্যা ছিল একাধিক।
এই ঘটনায় নাগেরবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ পাল সপরিবার মুম্বইয়ে তাঁর মেয়ের বাড়িতে গিয়েছেন। তাঁরা ২৭ এপ্রিল কলকাতা থেকে রওনা দেন। ওই ব্যবসায়ীর দাদা মানস পাল জানান, তাঁর ভাইয়ের শ্বশুর-শাশুড়ির সেই বাড়িতে এসে থাকার কথা ছিল। কিন্তু কোনও কারণে তাঁরা সেখানে থাকতে পারেননি। সোমবার সন্ধ্যায় তাঁরা জামাইয়ের বাড়িতে এসেছিলেন। তখনই চুরির ঘটনাটি জানা যায়। বাড়ির দরজা খুলে শ্বশুর-শাশুড়ি দেখেন, ঘরের ভিতরে তছনছ করা হয়েছে। তিনটি আলমারি ভেঙে চুরি করা হয়েছে টাকা ও গয়না। এর পরে পিছনের দরজা খুলে বেরিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। গৃহকর্তার শ্বশুর-শাশুড়ি জানান, বেরিয়ে যাওয়ার আগে এসি চালিয়ে ফ্রিজে থাকা মিষ্টি ও খাবারও খায় চোরেরা।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, চুরির ঘটনাটি তাঁরা কেউ টের পাননি। বিষয়টি জানাজানি হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। জনবহুল ওই এলাকায় স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি রীতা রায়চৌধুরী ও তাঁর স্বামী, পুর চেয়ারম্যান পারিষদ সুরজিৎ রায়চৌধুরীর (ট্যাবলা) বাড়ির পাশেই এই ঘটনা ঘটেছে। জায়গাটি দমদম স্টেশনের কাছে হওয়ায় অপরাধ ঘটিয়ে দ্রুত পালানো সহজ, তাই নজরদারি আরও বাড়ানো দরকার বলে মনে করছেন স্থানীয়দের একাংশ। যদিও প্রশাসনের দাবি, এলাকায় নজরদারি রয়েছে। সিসি ক্যামেরাও রয়েছে। পুলিশের টহলদারি চলে নিয়মিত।
রীতা জানান, ওই ব্যবসায়ী যে মুম্বইয়ে গিয়েছেন, তা তাঁরা জানতেন না। বাড়ি বন্ধ ছিল। সারা বাড়ি লন্ডভন্ড করা হয়েছে। অনেক সামগ্রী চুরি গিয়েছে। পুলিশ বিষয়টি দেখছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযোগ পেয়ে দ্রুত তদন্ত শুরু করা হয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোনও দুষ্কৃতী-চক্র এই ঘটনা ঘটিয়েছে কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)