E-Paper

সরকারি শুভেচ্ছাবার্তাতেও এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতার ‘শুভনন্দন’, জেলায় জেলায় পড়ল হোর্ডিং

নামকরণে বারবার চমক দিয়েছেন মমতা। কখনও নবান্নের সঙ্গে মিল রেখে ‘উপান্ন’, কখনও ‘সত্যজিৎ রায় ধরণী’। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন ‘শুভনন্দন’।

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:৩১
Hoarding

এই সেই হোর্ডিং। মেদিনীপুরে। —নিজস্ব চিত্র।

বাংলা নববর্ষের সময়ে প্রথম শব্দটি বলেছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে মুখে তৈরি সেই শব্দ ‘শুভনন্দন’ এ বার দেখা যাচ্ছে সরকারি হোর্ডিংয়েও। শারদ শুভেচ্ছা জানাতে জেলায় জেলায় হোর্ডিং দিচ্ছে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ। মুখ্যমন্ত্রীর ছবি-সহ সেই হোর্ডিংয়ে লেখা, ‘শারদীয়ার আন্তরিক শুভনন্দন’। সঙ্গে আর একটি লাইন, ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’।

নামকরণে বারবার চমক দিয়েছেন মমতা। কখনও নবান্নের সঙ্গে মিল রেখে ‘উপান্ন’, কখনও ‘সত্যজিৎ রায় ধরণী’। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন ‘শুভনন্দন’। বাংলা নববর্ষের আগে দিঘায় রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘আপনাদের সকলকে শুভ নববৈশাখের শুভনন্দন জানাচ্ছি। আমরা বলি অভিনন্দন। আমি আজ থেকে শুরু করলাম শুভনন্দন।’’ তাঁর যুক্তি ছিল, ‘‘নতুন নতুন কথার আমদানি করতে হবে। শুভকামনা, অভিনন্দন যদি হতে পারে, তা হলে শুভনন্দন কেন নয়?’’ নতুন সেই শব্দই এ বার জায়গা করে নিয়েছে সরকারি শুভেচ্ছা-বার্তায়, জেলায় জেলায় সরকারি হোর্ডিংয়ে।

নতুন শব্দকে স্বাগত জানালেও এর অর্থ, ব্যাকরণসম্মত প্রয়োগ নিয়ে দ্বিধান্বিত বিশেষজ্ঞরা। বৈয়াকরণ, তথা সংসদ বাংলা অভিধানের অন্যতম সংকলক অধ্যাপক সুভাষ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শব্দটি আগে কখনও শুনিনি। ঠিক বুঝতে পারছি না, কী অর্থে, কেন এই শব্দ ব্যবহার করা হচ্ছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এমন শব্দচয়নের কোনও প্রয়োজন ছিল না।’’ বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সরোজ পানের মতে, ‘‘এই শব্দের কোনও অর্থই হয় না।’’

সাহিত্যিক বাণী বসু ঠিক-ভুলের বিতর্কে ঢুকতে চান না। তিনি বলছেন, ‘‘ধরণী, শুভনন্দন কত শব্দই তো শুনছি। নন্দনের অর্থ আনন্দ দেওয়া। সম্ভবত সেই অর্থেই সত্যজিৎ রায় সিনেমাচর্চার কেন্দ্রের নাম নন্দন রাখেন। তা বলে শুভনন্দন হয় কি না, বলতে পারছি না।’’ বাণী জুড়ছেন, ‘‘কোন শব্দ টিকবে বা টিকবে না, সময়ই বলতে পারে।’’

এ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি শমিত দাশের মন্তব্য, ‘‘ভেবেছিলাম উনি মুখ ফসকে কথাটা বলে ফেলেছেন। এখন সরকারি হোর্ডিংয়েও ওই শব্দের ব্যবহার দেখে বোঝা যাচ্ছে, উদ্ভট শব্দটির প্রচার এবং প্রসারের দায়িত্ব তৃণমূল সরকার কাঁধে তুলে নিয়েছে।’’ পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূল কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতির মত, ‘‘শুভনন্দন আনন্দবোধক শব্দ। দিনে দিনে শব্দটি আরও জনপ্রিয় হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Durga Puja 2023 Mamata Banerjee

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy