হাতি কেন এলাকায় আসবে— এই প্রশ্ন তুলে বিট অফিসারকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। ক’দিন আগের ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করে বন দফতর। বন দফতরের পক্ষ থেকে ঝাড়গ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগও জানানো হয়েছে।
ঘটনাটি খড়্গপুর ডিভিশনের কলাইকুন্ডা রেঞ্জের বড়গহিরা গ্রামের। বন দফতর সূত্রের খবর, গত পাঁচদিন ধরে ওই রেঞ্জে ৫৪টি হাতির দল রয়েছে। ওই এলাকা থেকে হাতির দলকে সরাতে হিমশিম খাচ্ছেন বনকর্মীরা। ধান চাষের মুখে ক্ষয়-ক্ষতি বাড়ছে। বাড়ছে ক্ষোভ। তার মধ্যেই ওই মারধরের ঘটনা।
বন দফতর সূত্রে খবর, গত ৫ অগস্ট ঝাড়গ্রাম ডিভিশনের মানিকপাড়ার দিক থেকে ওই ৫৪টি হাতি খড্গপুর ডিভিশনের কলাইকুন্ডা রেঞ্জে ঢুকে পড়ে। ৬ অগস্ট রাতে কলাইকুন্ডা রেঞ্জের বারডাঙা বিটের বড়গহিরা গ্রামে ‘ডিউটি’তে ছিলেন বারডাঙর ভারপ্রাপ্ত বিট অফিসার মিন্টু চক্রবর্তী-সহ বনকর্মীরা। অভিযোগ, ওই দিন রাত আটটা নাগাদ ওই হাতির দলটিকে অন্যত্র সরানো হচ্ছিল। তখন আট-দশজন লোক এসে বিট অফিসারের গাড়ির উপর হামলা চালায়। বিট অফিসারকে গাড়ি থেকে বের করে কিল, চড়, লাথি মারা হয়। মিন্টু বলেন, ‘‘হাতি যাতে ক্ষয়-ক্ষতি না করে সেই জন্যই আমরা তাদের সরাচ্ছিলাম। এই কথা ওদের বোঝানোর পরেও শোনেনি। আচমকা কিল, চড়, লাথি মারতে শুরু করে। কয়েকজনের হাতে অস্ত্র ছিল। কোনওমতে এলাকা থেকে পালিয়েছি।’’
পরে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজে ওই বিট অফিসারের চিকিৎসা হয়। ঝাড়গ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগও জানান তিনি। মিন্টু বলছেন, ‘‘ওই ঘটনার পরেও প্রতি রাতে ডিউটি করছি। এলাকায় হাতির দল রয়েছে।’’ খড়্গপুরের ডিএফও মণীশ যাদব মানছেন, ‘‘হাতি তাড়ানোর সময়ে এক অফিসারকে মারধর করেছে। থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে।’’ তিনি জানান, হাতির দলটিকে সরানো হচ্ছে। কিন্তু দলটি যেতে চাইছে না। যে দিকে অভিমুখ রয়েছে দলটিকে সে দিকেই নিয়ে যাওয়া হবে। পুলিশ জানিয়েছে, মারধরের ওই ঘটনার মামলা রুজু করা হয়েছে।
এদিকে হাতির হানায় আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন কলাইকুন্ডা রেঞ্জের বাসিন্দারা। জানা গিয়েছে, হাতির ওই দলটি তিনটি দলে ভাগ হয়ে চাষ জমিতে নেমে যাচ্ছে। শুক্রবার রাতে বারডাঙা বিটের কেন্দডাংরিতে দু’টি ও ছোট গহিরাতে একটি বাড়িও ভেঙেছে দলটি। শুধু কলাইকুণ্ডা রেঞ্জই নয়, চিন্তা রয়েছে অন্যত্রও। শনিবার খড়্গপুর ডিভিশনে ৭৮টি ও ঝাড়গ্রাম ডিভিশনে ৩৩টি হাতি ছিল। শুক্রবার রাতে ঝাড়গ্রাম রেঞ্জের শিরষি গ্রামে ধান চারা খেয়ে ও মাড়িয়ে নষ্ট করেছে হাতির দল। হাতির নজরদারির জন্য শিরষি এলাকার বাসিন্দারা গাছের উপর মাচা করে পাহারা দিচ্ছেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)