Advertisement
E-Paper

‘বেঁধে রাখুন বিজেপি কর্মীদের’! আবহসঙ্গীতকে ‘আইটেম নম্বর’ করলেন অভিষেক, এসআইআর নিয়ে বুথের বাহিনীকেও বার্তা

অভিষেক তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সংগঠনের বেশির ভাগ বিষয় প্রাথমিক পর্যায়ে তিনিই দেখেন। ফলে তিনি যখন বুধবার এ কথা বলছেন, তা দলের উদ্দেশে বার্তা হিসাবেই ধরে নিচ্ছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ২০:৪৮
পানিহাটিতে প্রয়াত প্রদীপ করের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর সাংবাদিক সম্মেলনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

পানিহাটিতে প্রয়াত প্রদীপ করের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর সাংবাদিক সম্মেলনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —সংগৃহীত

ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) নিয়ে তৃণমূলের আবহসঙ্গীত বাজিয়ে রেখেছিলেন ব্যারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিক। বুধবার পার্থকে পাশে দাঁড় করিয়ে সেই আবহসঙ্গীতকে ‘আইটেম নম্বর’ করে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

ব্যারাকপুরের তৃণমূল সাংসদ পার্থ বলেছিলেন, ‘‘এসআইআরে যদি এক জনও বৈধ ভোটারের নাম বাদ যায়, তা হলে পাড়ার বিজেপি নেতাদের আমরা আটকে রাখব।’’ বুধবার পানিহাটিতে ‘এনআরসি আতঙ্কে আত্মঘাতী’ প্রদীপ করের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘জ্ঞানেশ কুমারের (জাতীয় নির্বাচন কমিশনার) বাবার নাম আছে ভোটার লিস্টে? দেখাতে পারবেন? রেলমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী দেখাতে পারবেন বাবা-ঠাকুর্দার জন্মের সার্টিফিকেট?’’

সেখানেই না থেমে অভিষেক বলেন, ‘‘বিজেপির লোকেরা এখানে এলে বাবা-ঠাকুর্দার সার্টিফিকেট চাইবেন। না দিতে পারলে বেঁধে রাখবেন। গায়ে হাত তুলবেন না। আমরা কারও গায়ে হাত তোলায় বিশ্বাস করি না। বলবেন বাবা-ঠাকুর্দা-দিদিমার সার্টিফিকেট নিয়ে আয়। তার পরে ছাড়বেন।’’

অভিষেক তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সংগঠনের বেশির ভাগ বিষয় প্রাথমিক পর্যায়ে তিনিই দেখেন। ফলে তাঁর বক্তব্যকে দলের উদ্দেশে ‘বার্তা’ হিসাবেই ধরে নিচ্ছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। অভিষেকের এ হেন ‘নিদান’ নিয়ে প্রধান বিরোধীদল বিজেপি পাল্টা সরব হয়েছে। দলের রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘কী করবেন? বিএলও-দের মারবেন? গাছে বেঁধে রাখবেন? এটা সরকার চলছে একটা? এটা কি অঘোষিত জরুরি অবস্থা? পশ্চিমবঙ্গ কি একটা বিচ্ছিন্ন রাষ্ট্র? নাকি দুটো মিলিয়ে একসঙ্গে বাংলাদেশ করে দেবেন!’’

সোমবার বিকালে পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এসআইআর ঘোষণা করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। কিন্তু তার প্রেক্ষাপট আগে থেকেই তৈরি ছিল। সেই প্রেক্ষাপটেই তৃণমূলের নেতাদের বক্তব্যে উঠে আসছিল তাঁদের দলের বুথবাহিনীর শক্তির কথা। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ঘেরাওয়ের কথা। কখনও জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দফতর ঘেরাওয়ের কথা বলেছেন দলের সর্বময় নেত্রী মমতা, কখনও কোনও ছাত্রনেতা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কাঁথির বাড়ি ‘শান্তিকুঞ্জ’ ঘেরাও করার। এ বার অভিষেক পাড়ায় বিজেপির লোকজনকে বেঁধে রাখার নিদান দিলেন। তবে গায়ে হাত তুলতে নিষেধ করেছেন তিনি।

যেমন বিজেপি নেতাদের কথায় ধরা পড়ছিল ‘কেন্দ্রীয় সাহায্যের’ উপর আস্থা। এসআইআর নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘‘যদি ভাঙচুর করেন, দোকানঘর পোড়ান, বাড়িতে আক্রমণ করেন, তৃণমূলের কোনও নেতার ছেলের জীবন যাবে না। কেন্দ্রীয় বাহিনী নামলে কিন্তু গুলি চলবে! আপনার বাড়ির লোকেদের গুলি লাগবে। তৃণমূলের নেতারা এসি ঘরে বসে থাকবেন। তাঁদের গুলি লাগবে না। তাই তৃণমূলের ফাঁদে পা দেবেন না।’’

তৃণমূল অবশ্য ইতিমধ্যেই দলীয় স্তরে সব বুথ কমিটিকে ময়দানে নামতে বলেছে। বার্তা দেওয়া হয়েছে বিএলও-দের ‘সাহায্য’ করারও। অভিষেক বলেছেন, ‘‘৪ নভেম্বর (ওই দিন থেকেই এসআইআর-এর ফর্ম নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাওয়া শুরু করবেন সরকারি কর্মীরা) থেকে আমি টানা এক মাস রাস্তায় থাকব। চিন্তা করবেন না। ভয় পাবেন না। বুকের রক্ত থাকতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী থাকতে কোনও বৈধ ভোটারের নাম বাদ যেতে দেব না।’’

Abhishek Banerjee SIR TMC Panihati
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy