Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

দিলীপ নিগ্রহের তরজা, আজ পাল্টা পথে শাসক

দিলীপবাবু-সহ বিজেপি নেতারা বৃহস্পতিবার দার্জিলিঙে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা-কর্মীদের হাতে নিগৃহীত হন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:১১
Share: Save:

পাহাড়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ-সহ দলীয় নেতৃত্বের নিগ্রহ ঘিরে কুশপুতুল-রাজনীতিতে সরগরম হয়ে উঠল রাজ্য। বৃহস্পতি ও শুক্রবার রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিজেপির বিক্ষোভ-অবরোধে মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল পোড়ানোর পাল্টা তৃণমূলও আজ, শনিবার পথে নেমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কুশপুতুল দাহ করবে বলে ঘোষণা করেছে।

দিলীপবাবু-সহ বিজেপি নেতারা বৃহস্পতিবার দার্জিলিঙে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা-কর্মীদের হাতে নিগৃহীত হন। তার প্রতিবাদে ওই দিনই কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। তাদের দাবি, শুক্রবারও রাজ্যের প্রায় ৫০০টি জায়গায় অবরোধ-বিক্ষোভ বা মিছিল করেছে তারা। হাজরা মো়ড় এবং মহাত্মা গাঁধী রোডের মোড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কুশপুতুল পোড়ানো হয়। কোথাও কোথাও তাঁর ছবিও ছেঁড়া এবং বিকৃত করা হয় বলে তৃণমূলের অভিযোগ। এর জবাবে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় আজ, শনিবার রাজ্য জুড়ে তৃণমূলকে পথে নামানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এ দিন পার্থবাবু বলেন, ‘‘গুন্ডাবাজ, দাঙ্গাবাজদের হাত থেকে রক্ষা করতে শনিবার তৃণমূলের সব শাখা সংগঠন বেলা ১টা থেকে দু’টো পর্যন্ত সব জেলার প্রধান কেন্দ্রে প্রতিবাদ করবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কুশপুতুল নিয়ে কলকাতার বিভিন্ন রাস্তাতেও বিক্ষোভ দেখানো হবে।’’

আরও পড়ুন: জিমখানার জমি দখল, কেশরীকে বিঁধল রাজ্য

এ দিন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ এবং মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে হাজরা মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল এবং অবরোধ হয়। হাজরা থেকে আশুতোষ কলেজ হয়ে কালীঘাট ট্রাম ডিপো ঘুরে ফের হাজরায় ফিরে আসে মিছিল। মিনিট ১৫ অবরোধ চলাকালীন রাহুলবাবু বলেন, ‘‘দিলীপবাবুর উপর তৃণমূল পরিকল্পিত আক্রমণ করেছে।’’ বিজেপির রাজ্য দফতর থেকে মহাত্মা গাঁধী রোড পর্যন্ত মিছিলে নেতৃত্ব দেন প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, শমীক ভট্টাচার্য প্রমুখ। হাওড়ার গুলমোহর ময়দান থেকে স্টেশন পর্যন্ত মিছিলে নেতৃত্ব দেন সায়ন্তন বসু। পরে রাহুলবাবুর নেতৃত্বে বিজেপির প্রতিনিধিরা রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে দেখা করে তৃণমূল এবং রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ জানান। বিজেপির অভিযোগ, হেনস্থার সময় পুলিশ ত্রিসীমানায় ছিল না। এ ব্যাপারে দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার মিথ্যা বলেছেন। তাই দার্জিলিং-কাণ্ডের তদন্তভার কোনও বিচারপতি বা কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থাকে দেওয়ার দাবি রাজ্যপালের কাছে জানিয়েছেন রাহুলবাবুরা।

বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) রামলালের কাছে এ দিনের সব প্রতিবাদ কর্মসূচির রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। কোথাও দু’শো, কোথাও চারশো কর্মী-সমর্থক কর্মসূচিগুলিতে যোগ দিয়েছিলেন বলে রামলালকে জানানো হয়েছে। বিজেপি সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব প্রতিবাদের বহরে খুশি।

বিজেপির এই প্রতিবাদ কর্মসূচি রাজনৈতিক ‘শিষ্টাচারের’ সীমানা ছাড়িয়েছে বলে অভিযোগ করে পার্থবাবু বলেছেন, ‘‘ক্ষমতা প্রদর্শনের নামে গুটিকয়েক লোক মুখ্যমন্ত্রীর ছবি বিকৃত করেছে। আমাদের নেত্রীকে অসম্মান করা হলে চুপ করে থাকতে পারি না। শাসক দল বলে শুধু মার খেতেও পারি না। তাই পাল্টা পথে নামতেই হচ্ছে।’’ আজ, দুপুর ১টা থেকে ২টো পর্যন্ত শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণের নানা গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় তৃণমূলের বিক্ষোভ-আন্দোলন হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE