Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Suvendu Adhikari

মুকুলের বিরুদ্ধে তৎপর শুভেন্দু, শিশিরের বিরুদ্ধে সুদীপ

মুকুলবাবুর বিরুদ্ধে দলত্যাগ-বিরোধী আইন প্রয়োগের বিষয়ে শুভেন্দুবাবু-সহ ৫০ জন বিজেপি বিধায়ক এ দিন বিধানসভায় বৈঠক করেন।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২১ ০৬:১১
Share: Save:

এক দিকে তৃণমূলে যাওয়া বিধায়ক মুকুল রায়। অন্য দিকে বিজেপিতে যাওয়া সাংসদ শিশির অধিকারী এবং সুনীল মণ্ডল। দ‌লত্যাগ-বিরোধী আইন প্রয়োগের ব্যাপারে উভয় ক্ষেত্রেই দাবি জোরদার হচ্ছে।

বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সোমবার বলেন, ‘‘মুকুলবাবু মঙ্গলবারের মধ্যে বিধায়ক পদে ইস্তফা না দিলে বুধবার স্পিকারকে চিঠি দেব। তাতেও কাজ না হলে আদালতে যাব।’’

একই যুক্তিতে সরব লোকসভায় তৃণমূলের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে এ দিনই ফোন করে তিনি জানতে চান, শিশিরবাবু এবং সুনীলবাবুর ক্ষেত্রে দলত্যাগ-বিরোধী আইন প্রয়োগের দাবি জানিয়ে যে চিঠি দেওয়া হয়েছি‌ল, তার কী হল? পরে সুদীপবাবু জানান, এ বিষয়ে তাঁরা ইতিমধ্যেই দু’টি চিঠি লোকসভার স্পিকারকে দিয়েছেন। সুদীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘লোকসভার স্পিকার আমাকে বলেছেন, এ বিষয়ে একটি কমিটি করার কথা ভাবা হচ্ছে। সেই কমিটিতে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ-সহ অভিযোগ জমা পড়লে তা দেখা হবে। তখন ওই দুই সাংসদকে ডাকা হবে। আমাকেও ডাকা হবে। আমি যেন সেই মতো তৈরি থাকি।’’ সুদীপবাবুর আরও মন্তব্য, ‘‘আমি তৈরিই আছি। আমার কাছে যা নথিপত্র আছে, সব স্পিকারকে দিলেই আমাদের দাবির যৌক্তিকতা প্রমাণ হবে।’’

অন্য দিকে, শুভেন্দুবাবুকে প্রশ্ন করা হয়— মুকুলবাবুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তোলা হলে সংসদে শিশিরবাবুদের কী হবে? তিনি ‘‘ওটা দিল্লির ব্যাপার’’ বলে উত্তর এড়িয়ে যান।

মুকুলবাবুর বিরুদ্ধে দলত্যাগ-বিরোধী আইন প্রয়োগের বিষয়ে শুভেন্দুবাবু-সহ ৫০ জন বিজেপি বিধায়ক এ দিন বিধানসভায় বৈঠক করেন। বিধানসভা থেকে মিছিল করে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছেও একই দাবি জানান তাঁরা। ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়েও রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ জানান বিজেপি বিধায়করা। বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেছেন, ‘‘বাইরে কে কী বলছেন, তার ভিত্তিতে কিছু হয় না। এই বিষয়ে কোনও চিঠি পেলে তার পরে যা ভাবার, ভাবা হবে।’’

তবে এ দিন বিধানসভায় বিজেপির পরিষদীয় দলের বৈঠকে কেন ৫০ জন বিধায়ক ছিলেন এবং ২৪ জন ছিলেন না, তা নিয়ে দলের ভিতরে-বাইরে নতুন জল্পনা শুরু হয়েছে। মুকুল-কাণ্ডের পর ওই অনুপস্থিত বিজেপি বিধায়কদের ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ নিয়ে চর্চা চলছে রাজনৈতিক শিবিরে। বিজেপি নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, কার্যত লকডাউনে যাতায়াতের সমস্যায় অনেক বিধায়ক আসতে পারেননি।

এ দিকে, বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা তথাগত রায় মুকুলকে ‘ট্রয়ের ঘোড়া’ বলে কটাক্ষ করে তাঁর বিরুদ্ধে দলে অন্তর্ঘাতের অভিযোগ তুলেছেন টুইটারে। রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত তার বিরোধিতা করে পাল্টা টুইটে লিখেছেন, ‘‘যাঁরা বিজেপিতে এসেছেন, তাঁদের সকলকে ট্রয়ের ঘোড়া হিসাবে দেখা ঠিক নয়। অনেক নবাগতই মন দিয়ে ভোটের লড়াই লড়েছেন। রাজনীতি বাদ দেওয়ার খেলা নয়। সমর্থন বাড়িয়ে নতুন নেতা তৈরি করাই রাজনীতির কাজ। যারা রাজনৈতিক দলকে কেবল ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার যন্ত্র হিসাবে দেখে, তাদের জন্য রাস্তা খোলাই আছে।’’ গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ধ্যানেশ নারায়ণ গুহ এ দিনই মুকুলবাবুর সল্টলেকের বাড়িতে গিয়ে তৃণমূলে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suvendu Adhikari Jagdeep Dhankhar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE