Advertisement
০৭ মে ২০২৪
ordinance

‘লোকসভা ভোটের আগেই বিজেপিকে হারানোর সুযোগ’! ‘দিল্লি দখলের’ অধ্যাদেশ রুখতে কেজরী-মমতা জোট

পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান, দিল্লির মন্ত্রী অতিশী এবং আপ সাংসদ রাঘব চড্ডাকে সঙ্গে নিয়ে নবান্নে পৌঁছে মঙ্গলবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে বৈঠক করেন কেজরীওয়াল।

TMC chairperson Mamata Banerjee supports AAP chief and Delhi CM Arvind Kejriwal against the ordinance of Narendra Modi government

নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে পাশাপাশি কেজরীওয়াল, মমতা এবং মান। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২৩ ১৭:৪২
Share: Save:

দিল্লিতে ‘ক্ষমতা দখলের’ জন্য জারি করা বিতর্কিত অধ্যাদেশ (অর্ডিন্যান্স)-কে স্থায়ী রূপ দিতে কেন্দ্র সংসদে বিল আনলে তৃণমূল তার বিরোধিতা করবে। মঙ্গলবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল-সহ তথা আম আদমি পার্টি (আপ)-র নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পরে নবান্নে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যসভায় বিজেপি বিরোধী সব দল একজোট হলে ওদের হারানো যাবে। লোকসভা ভোটের আগেই বিজেপিকে হারানোর সুযোগ এসেছে।’’ এমনকি, ‘অত্যাশ্চর্য’ (মিরাক্যাল) কিছু ঘটলে লোকসভা ভোটের আগেই মোদী সরকারের ‘ভবিষ্যৎ’ অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে বলেও জানান মমতা!

পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান, দিল্লির মন্ত্রী অতিশী এবং আপ সাংসদ রাঘব চড্ডাকে সঙ্গে নিয়ে নবান্নে পৌঁছে মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে বৈঠক করেন কেজরীওয়াল। মমতার সমর্থনের ঘোষণার পরে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি কোনও রাজ্যে বিরোধীদের সরকারকে কাজ করতে দেয় না। আমরা জানি, কী ভাবে রাজ্যপালের পদকে কাজে লাগিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাজে বাধা দেওয়া হয়েছে।’’ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে দিয়ে বিরোধীদের ভয় দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

কলকাতায় আসার আগেই মঙ্গলবার বার্তা দিয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরীওয়াল। জানিয়েছিলেন, দেশের রাজধানীতে ‘ঘুরপথে ক্ষমতা দখলের’ জন্য নরেন্দ্র মোদী সরকার সুপ্রিম কোর্টের রায় এড়িয়ে যে বিতর্কিত অধ্যাদেশ (অর্ডিন্যান্স) জারি করেছে, তার বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা শুরু করবেন তিনি। কেন্দ্রীয় অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে বিরোধী ঐক্য গড়ার জন্য তাঁর সেই প্রয়াস শুরু হল বাংলা থেকেই। আর সেখানেই পেলেন সাফল্য।

দিল্লির ‘ক্ষমতা দখলের’ ওই অর্ডিন্যান্সকে স্থায়ী চেহারা দিতে সংসদের বাদল অধিবেশনে মোদী সরকার সংসদের আসন্ন বাদল অধিবেশনে বিল পাশ করাতে পারে। কেজরীওয়াল সোমবার দিল্লিতে জানিয়েছিলেন, তিনি চান রাজ্যে রাজ্যে ঘুরে বিজেপি দলের ওই অর্ডিন্যান্সের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে। বিষয়টি নিয়ে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসও এ বার কেজরীর পাশে দাঁড়াতে পারে বলে সূত্রের খবর। সে ক্ষেত্রে লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধী ঐক্য নতুন মাত্রা পাবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।

প্রসঙ্গত, গত ১১ মে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছিল, আমলাদের রদবদল থেকে যাবতীয় প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে দিল্লির নির্বাচিত সরকারের। কিন্তু শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ অর্ডিন্যান্স এনে ১০ পাতার গেজ়েট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কেন্দ্র। তাতে বলা হয়, জাতীয় রাজধানী সিভিল সার্ভিসেস কর্তৃপক্ষ গঠন করা হচ্ছে। আমলাদের নিয়োগ ও বদলির ব্যাপারে তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন। (দিল্লির) মুখ্যমন্ত্রী হবেন এর চেয়ারপার্সন। কিন্তু কমিশনে কেন্দ্র এবং লেফটেন্যান্ট গভর্নরের প্রতিনিধি সংখ্যা বেশি থাকায় তাঁরাই কার্যত ‘নির্ণায়ক’ হবেন আমলাদের বদলি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে।

শনিবার থেকেই বিষয়টি ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ প্রধান কেজরীওয়াল বিষয়টি নিয়ে সরাসরি নিশানা করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদীকে। তাঁর অভিযোগ, ওই অধ্যাদেশ পুরোপুরি অসাংবিধানিক। তিনি বলেছেন, ‘‘শীর্ষ আদালতের নির্দেশে দিল্লির নির্বাচিত সরকারের হাতে জনসেবামূলক কাজের ক্ষমতা চলে যাওয়ায় ভয় পেয়েছে বিজেপি। তাই তা আটকাতে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে।’’

বিতর্কিত অর্ডিন্যান্সের বিরোধিতায় কংগ্রেসও এ বার আপের পাশে দাঁড়াতে চলেছে বলে এআইসিসির একটি সূত্র উদ্ধৃত করে প্রকাশিত কয়েকটি খবরে বলা হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, সংসদের আসন্ন বাদল অধিবেশনে আপ সাংসদদের পাশে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় অর্ডিন্যান্সের বিরোধিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খড়্গেরা। কার্যক্ষেত্রে তা দেখা গেলে লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধী ঐক্য নতুন মাত্রা পাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE