Advertisement
E-Paper

ভারত-পাক সংঘাতের আবহে সমাজমাধ্যমে নজর রাখুন! সর্ব স্তরে বার্তা, মুর্শিদাবাদ থেকে ‘শিক্ষা’ নিয়ে সজাগ তৃণমূল

আগামী ডিসেম্বরে বিহারে বিধানসভা ভোট। বছর ঘুরলে পশ্চিমবঙ্গেও বিধানসভা ভোট। সে কথা মাথায় রেখেই বর্তমান পরিস্থিতিকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে চাইছে রাজ্যের শাসক তৃণমূল।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২৫ ১৮:০৭
TMC is sending a message to all levels of the party to stop false propaganda on social media amid India-Pakistan conflict

—প্রতীকী ছবি।

ভারত-পাক সংঘাতের পরিস্থিতিতে নবান্নে বৈঠক করে প্রশাসনকে বিভিন্ন বিষয়ে ‘সক্রিয়’ হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সমান্তরাল ভাবে সংগঠনেও সতর্ক থাকার বার্তা পাঠাতে শুরু করেছে রাজ্যের শাসক তৃণমূল। সেই তালিকায় যেমন বাজারদরের উপর নজর দিতে বলা হয়েছে, তেমনই বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা হচ্ছে সমাজমাধ্যমে প্রচারের কথা।

মুর্শিদাবাদের হিংসার ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েই সমাজমাধ্যমের ভুয়ো প্রচারের ক্ষেত্রে ‘প্রতিষেধক’ চাইছে তৃণমূল। এ বিষয়ে পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গেও সমন্বয় রাখার কথা বলা হয়েছে শাসকদলের তরফে। রাজ্য তৃণমূলের সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার শুক্রবার বলেন, ‘‘সব এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা যাতে বজায় থাকে, সে ব্যাপারে দলের তরফে সংগঠনের সর্ব স্তরে বার্তা দেওয়া হচ্ছে।’’ তৃণমূলের প্রথম সারির নেতাদের অনেকেরই আশঙ্কা, ভারত-পাক সংঘাতের আবহকে কাজে লাগিয়ে নতুন করে ‘মেরুকরণ’ আরও জোরালো করার কৌশল নেওয়া হতে পারে। সে বিষয়েই দলকে সতর্ক করছে তৃণমূল।

তৃণমূলের এক প্রবীণ নেতার কথায়, ‘‘ভারত-পাক সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে খুব সূক্ষ্ম ভাবে জাতীয়তাবাদের সঙ্গে হিন্দুত্বকে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সীমান্তবর্তী জেলা বা মিশ্র বসতি রয়েছে, এমন এলাকার জন্য পরিস্থিতি স্পর্শকাতর। সে কথাও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে দলের জেলা ও ব্লক স্তরের নেতাদের।’’ মুর্শিদাবাদের সুতি, ধুলিয়ান, শমসেরগঞ্জের হিংসায় বড় ভূমিকা নিয়েছিল সমাজমাধ্যমের ‘ভুয়ো প্রচার’। এক মাস আগের সেই ক্ষত এখনও দগদগে। সদ্য ঘটে যাওয়া হিংসার কথা মাথায় রেখেই সংগঠনে বার্তা পাঠাচ্ছে তৃণমূল।

বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কালোবাজারি করা যাবে না। কৃত্রিম ভাবে সঙ্কট তৈরি করে দাম বৃদ্ধি করা, মজুতদারি বা লাভের জন্য অন্যত্র পণ্য পাঠিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনায় রাজ্য সরকার যে কড়া পদক্ষেপ করতে পিছপা হবে না, তা-ও খোলাখুলি বলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল চাইছে, সরকারের সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে সংগঠনকেও ময়দানে রাখতে। কারণ, মুর্শিদাবাদের ঘটনায় শাসকদলের একদম স্থানীয় স্তরের নেতাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। আগামী ডিসেম্বরে বিহারে বিধানসভা ভোট। বছর ঘুরলে পশ্চিমবঙ্গেও বিধানসভা ভোট। সে কথা মাথায় রেখেই বর্তমান পরিস্থিতিকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে চাইছে শাসকদল। তৃণমূলের এক সাংসদের বক্তব্য, ‘‘বাংলাদেশের টালমাটাল পরিস্থিতির প্রভাব রয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। তার মধ্যেই মুর্শিদাবাদ ঘটে গিয়েছে। তা থিতিয়ে যাওয়ার আগেই আবার ভারত-পাক সংঘাত! ভোটের যখন আর এক বছরও বাকি নেই, তখন এই ধরনের অবস্থা নানা দিকে মোড় নিতে পারে। তা আগে থেকে ভাবনার মধ্যে না রাখলে বিপদ আকস্মিক ভাবে এসে পড়লে সামলানো মুশকিল হবে। আগে থেকে প্রস্তুতি রাখা ভাল।’’

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামায় সেনাবাহিনীর কনভয়ে জঙ্গি হামলার পরে বালাকোটে ভারতীয় বায়ুসেনার বিমানহানা হয়েছিল। ওই অভিযান নিয়ে সেই সময়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন স্বয়ং মমতা। বিদেশি সংবাদসংস্থার রিপোর্ট উল্লেখ করে বলেছিলেন, ‘‘বোমাটা মিস্‌ হয়েছিল। কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।’’ সত্য কী, তা জানার দাবিও তুলেছিলেন মমতা। তবে এ বার ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পরবর্তী সময়ে মমতা ভারত এবং সেনাবাহিনীর জয়ধ্বনি দিয়ে এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেন। তৃণমূল এবং রাজ্য সরকার যে কেন্দ্রের পাশে রয়েছে, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।

TMC India-Paksitan Conflict
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy