ভূষণ সিংহ। নিজস্ব চিত্র
দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোচবিহারের সভায় মূলমঞ্চে জায়গা না পেয়ে ক্ষুব্ধ স্থানীয় পুরপ্রশাসক ভূষণ সিংহ। তাঁর মূল ‘রাগ’ জেলা তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ের উপরে। পার্থ তাঁকে ‘ইচ্ছে করে অসম্মান’ করেছেন বলে বুধবার অভিযোগ করেছেন ভূষণ। তাঁর দাবি, দল ছেড়ে দেওয়ার ইচ্ছে হলেও তিনি এই মুহূর্তে মমতাকে সমস্তটা অভিযোগ আকারে তিনি জানাবেন।
কোচবিহারের রাসমেলা ময়দানে মমতার জনসভা ছিল। সেই সভায় তিনটি মঞ্চ করা হয়। তিনটি মঞ্চেই তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু ভূষণের অভিযোগ, মূল মঞ্চে অর্থাৎ যেখান থেকে মমতা ভাষণ দেবেন, সেখানে তাঁর ওঠার কোনও ‘অধিকার’ ছিল না। কারণ, প্রতিটি মঞ্চে কারা থাকবেন, তার আলাদা তালিকা তৈরি হয় আগে থেকেই। সেই তালিকা তৈরির দায়িত্বে ছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি। বুধবার মূল মঞ্চে যখন উঠতে যান ভূষণ, সেই সময় তাঁকে নিরাপত্তাকর্মীরা আটকে দেন। তালিকায় তাঁর নাম নেই বলে মূল মঞ্চের পাশের একটি মঞ্চে তাঁকে যেতে বলা হয়।
ভূষণের অভিযোগ, পাশের মঞ্চে বসে ছিলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত এবং অঞ্চল স্তরের নেতারা। কিন্তু তিনি পুরপ্রশাসক। এমনকি ওই মঞ্চে তাঁর বসার কোনও ব্যবস্থা ছিল না বলেও ভূষণের অভিযোগ। যে মাঠে ওই সভা হচ্ছে, সেটি তাঁর পুর এলাকার মধ্যেই পড়ে। এতেই অসম্মানিত বোধ করেন ভূষণ। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমাকে ওই মঞ্চে যেতে বলায় খুবই আপমানিত বোধ করছি। আমি ওই মঞ্চে না উঠে, নীচে নেমে আসি। মূল মঞ্চে যদি উঠতেই না পারি, তা হলে আর আমার কী দাম থাকল! মূল মঞ্চে কিন্তু জেলা সভাপতির ঘনিষ্ঠ লোকেরাই ছিল।’’ ভূষণের ক্ষোভ, ‘‘আমি এই সভার জন্য জেলা সভাপতিকে সব রকম ভাবে সাহায্য করেছি। প্রস্তুতির সব কিছু তো বটেই, বাঁশ বাঁধার সময়েও আমি ছিলাম। তার এই প্রতিদান! মূল মঞ্চেই আমাকে উঠতে দিল না!’’
আরও পড়ুন: বিধায়ক পদ ত্যাগ করলেও মুখে কুলুপ শুভেন্দুর, দিল্লি যাত্রা কি বৃহস্পতিবারই
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গ থেকে জিতেন্দ্রকে ফোন দিদির, মাথা ঠান্ডা রাখার পরামর্শ
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের সঙ্গে ভূষণের সম্পর্ক সর্বজনবিদিত। সে প্রসঙ্গে ভূষণ বলেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে আমার দ্বন্দ্ব ছিল। উনি যা করতেন সরাসরি করতেন। কিন্তু পার্থপ্রতিম তো আমাকে ঘুরিয়ে অপমান করল। ইচ্ছে করছে, দল ছেড়ে চলে যাই। সবটা জানিয়ে দলনেত্রীকে নালিশ করব। এটা মেনে নিতে পারছি না।’’
এ বিষয়ে জানতে পার্থপ্রতিমকে ফোন করা হয় একাধিক বার। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।
তবে জেলার সাধারণ সম্পাদক ও কোর কমিটির সদস্য আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, ‘‘মূল মঞ্চে কারা থাকবেন সেই তালিকা রাজ্য স্তর থেকে ঠিক করা হয়। মঙ্গলবার বিমানবন্দরে দলনেত্রী একটি বৈঠক করেন। জেলার পাঁচটি পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীরাও সেখানে ছিলেন। ভূষণের যদি কোনও রাগ বা ক্ষোভ থেকে থাকে সেটা প্রকাশ্যে এ ভাবে না বলাই উচিত। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে নেওয়াই ভাল ছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy