Advertisement
১২ জানুয়ারি ২০২৫
Crime

কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ককে গুলি করে খুন

নদিয়ার তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, ‘তিনি, বিধায়ক এবং স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী রত্না ঘোষ ফুলবাড়ি এলাকার একটি সরস্বতী পুজোর অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। সেখানেই মঞ্চ থেকে নামার পর তাঁকে গুলি করা হয়।’

নিহত তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস।

নিহত তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২১:২৮
Share: Save:

সরস্বতী পুজোর অনুষ্ঠানে ঢুকে গুলি করে খুন করা হল তৃণমূল বিধায়ককে। নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিত্ বিশ্বাসের উপর এই প্রাণঘাতী হামলা চলে শনিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ। কয়েক জন দুষ্কৃতী খুব কাছ থেকে গুলি করে তাঁকে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিত্সকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এলাকায় তুমুল উত্তেজনা রয়েছে।

পুলিশ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তারা বিশাল বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। ঘটনাস্থলে থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। দুষ্কৃতীরা বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালিয়েছিল বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে পুলিশ।

এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই তীব্র রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। নদিয়ার ভারপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল সরাসরি অভিযোগ এনে বলেন, ‘‘এই খুনের পিছনে বিজেপির ষড়যন্ত্র রয়েছে। তারাই এই খুন করিয়েছে।’’ উল্টো দিকে, রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘যে দিন থেকে অনুব্রত মণ্ডল নদিয়ার দায়িত্ব পেয়েছেন সে দিন থেকেই খুনোখুনির খেলা চলছে। কিছু দিন আগে জয়নগরে যা হয়েছিল, এখানেও তাই হল। ওখানে বিধায়ক কোনওক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন। কিন্তু এখানে বাঁচলেন না।’’

ফুলবাড়ির অনুষ্ঠানে তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র (ইনসেটে)।

তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, “আমি, সত্যজিত্ এবং মন্ত্রী রত্না ঘোষ ফুলবাড়ি এলাকার একটি সরস্বতী পুজোর অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। সেখানেই মঞ্চ থেকে নামার পর সত্যজিত্‌কে গুলি করা হয়।” তিনি আরও বলেন, ‘‘এর পিছনে মুকুল রায় আছেন। যেই খুন করে থাকুক তার পিছনে মুকুল রায়ের আশীর্বাদ আছে।’’

তবে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি পাল্টা বলেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডল বীরভূম থেকে খুনের রাজনীতি আমদানি করেছেন। আমরা চাই যে এই কাজ করেছে তাঁর শাস্তি হোক। তদন্ত হোক। দেখা যাবে নিজেদের দ্বন্দ্বেই খুন হয়েছেন সত্যজিৎ বিশ্বাস।’’
বিজেপি সূত্রে খবর, নিহত বিধায়ক বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে রাজনৈতির মহলে জল্পনা ছিল।

আরও পড়ুন: ‘তথ্য পাচারে’ গ্রেফতার ঘনিষ্ঠ পুলিশকর্মী, ভারতীর বিরুদ্ধে তদন্তে নামছে সিআইডি

তবে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা খুব পরিকল্পিত এই খুন। দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে। নদিয়ার এই সীমান্ত এলাকায় সম্প্রতি বিজেপি যথেষ্ট শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। মতুয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে বিজেপি সম্প্রতি ভাল সংগঠন তৈরি করেছে। সেই নিয়ে সম্প্রতি বিজেপি-তৃণমূল একটা চাপা লড়াই চলছিল তা স্বীকার করছেন জেলার শীর্ষ পুলিশ কর্তারাও। রাতে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পরিকল্পনা করে সত্যজিৎকে খুন করল বিজেপি। ওদের খুনের রাজনীতির পরিণাম বাংলা বুঝতে পারছে, প্রতিরোধও করবে।’’

বিধায়ক সত্যজিত্ বিশ্বাসকে লক্ষ্য করে এলোপাথারি গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা।

আরও পড়ুন: ৮ ঘণ্টারও বেশি সময় পর সিবিআই দফতর থেকে বেরোলেন রাজীব, ফের আসতে হবে কাল সকালে

সত্যজিত্ বিশ্বাসের আগে কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক ছিলেন সুশীল বিশ্বাস। ২০১৪-র অক্টোবরে তাঁর মৃত্যু হয়। এর পর ২০১৫-র উপনির্বাচনে জিতে সত্যজিত বিশ্বাস। বিধায়ক হন। পরে ২০১৬-য় ওই আসনেই জেতেন তিনি।

সত্যজিত্ বিশ্বাসের আগে আরও এক তৃণমূল বিধায়কের উপর হামলা চালানোর ঘটনা ঘটেছিল। গত ১৩ ডিসেম্বর জয়নগরের তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বনাথ দাসের গাড়ি লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি-বোমা চালায় দুষ্কৃতীরা। আততায়ীদের ছোড়া এলোপাথাড়ি গুলি এবং বোমার আঘাতে খুন হন বিধায়কের গাড়ির চালক, বিধায়ক ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল নেতা এবং এক পথচারী। বরাতজোরে বেঁচে গিয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক। সেই হামলার ঘটনায় তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব দাবি করেছিল, বিজেপি-সিপিএম মিলে বাইরে থেকে লোক এনে এই খুন করিয়েছে। যদিও বিরোধীরা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে দায়ী করেছে।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Murder Nadia Krishnaganj Krishnaganj TMC MLA murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy