বেলেঘাটার তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল এবং দুই কাউন্সিলরকে আগাম জামিন দিল কলকাতা হাই কোর্ট। তাঁদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা করেছিলেন কাঁকুড়গাছিতে নিহত বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের দাদা বিশ্বজিৎ সরকার। গাছ কাটা নিয়ে বিবাদের জেরে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। পরেশ ছাড়াও নাম জড়িয়েছিল ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর স্বপন সমাদ্দার এবং ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পাপিয়া ঘোষের। স্বপন আবার কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদও (বস্তি) বটে। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত শর্তসাপেক্ষে এবং এক লক্ষ টাকার বন্ডে তিন জনের আগাম জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
২০২১ সালে কাঁকুড়গাছিতে বিজেপি কর্মী অভিজিৎ খুন হন বলে অভিযোগ। সেই মামলায় সিবিআইয়ের অতিরিক্ত চার্জশিটে পরেশ, পাপিয়া এবং স্বপনের নাম ছিল। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে পৃথক ভাবে খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করেন অভিজিতের দাদা। অভিযোগ, গাছ কাটার নাম করে স্বপন, পাপিয়াদের গুন্ডাবাহিনী অভিজিতের বাড়ির এলাকা শীতলাতলা লেনে উপদ্রব করে। গাছ কেটে তাঁদের গ্যারাজের কাছে গাড়ির উপর ডাল ফেলে। এমনকি, এলাকার বিদ্যুতের তারের উপরও গাছের ডাল পড়ে। বিশ্বজিৎ জানান, গুন্ডাবাহিনী তাঁকে মারধর করেছিল এবং মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিল। পরেশ অবশ্য বিশ্বজিৎকে চেনেন না বলে দাবি করেন। নারকেলডাঙা থানায় পরেশ-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করেন বিশ্বজিৎ।
আরও পড়ুন:
সেই মামলায় হাই কোর্ট বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, আগাম জামিন পেলেও তিনটি শর্ত মানতে হবে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাদের। প্রথমত, শীতলাতলা লেনে তাঁরা কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না। দ্বিতীয়ত, তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে এবং তৃতীয়ত, এই মামলার কোনও সাক্ষীকে প্রভাবিত করা যাবে না।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরে রাজ্যের নানা অশান্তির অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ, শাসকদলের রোষানলের শিকার হয়েছিলেন বিরোধী নেতা-কর্মীরা। কাঁকুড়গাছিতেও সেই কারণেই বিজেপি কর্মী অভিজিৎ খুন হন বলে অভিযোগ। হাই কোর্টের নির্দেশে সেই ঘটনার তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। সেই মামলায় পরেশ-সহ তিন তৃণমূল নেতার নাম জড়িয়েছিল। পরেশদের দাবি, রাজনৈতিক স্বার্থে ও কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ব্যবহার করে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে তাঁদের। অভিজিতের দাদার করা মামলায় আপাতত আদালত থেকে তাঁরা কিছুটা স্বস্তি পেলেন।