জাকিরের বাড়িতে আয়কর বিভাগের হানার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বর্তমান তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেনের বাড়ি থেকে ১১ কোটি টাকা উদ্ধার করেছে আয়কর বিভাগ। সেই নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। তাঁর ঔরঙ্গাবাদের বাসভবনে উদ্ধার হওয়া টাকার ছবি প্রকাশ্যে এনেছে আয়কর বিভাগ। আর তারপরেই নিজেদের অবস্থান জানিয়ে দিল তৃণমূল। তাঁরা একদিকে যেমন বিধায়ক জাকিরের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে। তেমনই, কেন আয়কর বিভাগ উদ্ধার টাকার ছবি প্রকাশ্যে আনল সে বিষয়েও প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
তিনি বলেন, ‘‘বিধায়ক জাকির হোসেনর বাড়িতে আয়কর হানা নিয়ে ও টাকা উদ্ধার হয়েছে বলে যে প্রচার চলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। খানিকটা বিভ্রান্তির মায়াজাল ছড়িয়ে কুৎসার দিকে ব্যবহৃত হচ্ছে। জাকির একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তৃণমূলে আসার আগে থেকেই তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। বিড়ি ব্যবসা থেকে শুরু করে তাঁর নানা ধরনের ব্যবসা রয়েছে।’’ কুণাল আরও বলেন, ‘‘অনেক ব্যবসায়ীকে লেবার পেমেন্ট করতে হয়। বিপুল সংখ্যায় লেবারদের নগদে টাকা দিতে হয়। তাই তাঁর বাড়িতে যদি টাকা থেকে থাকে, তাতে তো দোষের কিছু নেই। যদি ধরা যায় এটা তদন্তের বিষয়, তা হলে যাঁর বাড়িতে রেড হয়েছে, তাঁকেও সুযোগ দেওয়া হোক।’’
সতীর্থের পাশে দাঁড়িয়ে কুণাল বলেন, ‘‘তাঁকে সুযোগ দিলে তিনিও তাঁর তরফে যুক্তি, প্রমাণ দেখাবেন। তার আগেই যে ভাবে মিডিয়ার সামনে সবকিছু দিয়ে দেওয়া হল, এর থেকেই স্পষ্ট এই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে কাণ্ডটি করানো হয়েছে।’’ ২০২১ সালের নিমতিতা স্টেশনে বোমায় গুরুতর আহত হন জাকির। সেই প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূল মুখপাত্র জানান, তাঁর ওপরে প্রাণঘাতী হামলা হয়েছিল। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন তিনি। তাতেও তাঁকে হারানো যায়নি। বিপুল ভাবে জিতে এসেছেন। এখন তাঁকে অন্যপথে কলুষিত করার চেষ্টা হচ্ছে। কুণালের প্রশ্ন, ‘‘তাঁর উপর হামলার ঘটনায় তো এনআইএ তদন্ত হচ্ছিল। সেই তদন্তের সুরাহা হল না কেন? বিজেপি নেতারা বলে দেবেন, যে এর বাড়ি যেতে হবে, তারপরে এজেন্সি তাঁর বাড়ি যাবে। সাহস থাকলে আদালতে যান। কিন্তু একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর ভাবমূর্তি কলুষিত করতে টাকার ছবি এ ভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হবে?’’
কুণাল বলেন, ‘‘যে সব শ্রমিক তাঁর কাছে কাজ করেন বিড়ি শিল্প বা কৃষিভিত্তিক শিল্পের সঙ্গে যাঁরা জড়িত। সেই মানুষগুলির আয় যদি বন্ধ হয়ে যায়, কর্মসংস্থান বন্ধ হয়ে যায়, কে তার দায় নেবে? দু’তিনটি জেলায় ছড়িয়ে রয়েছেন তাঁরা, কে দায়িত্ব নেবেন এ সব অসহায় মানুষের?’’
জাকিরের বাড়িতে আয়কর বিভাগের হানার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূল বিধায়কের বাড়িতে আয়কর দফতরের হানায় তিনি অভিযুক্ত করেন কেন্দ্রীয় সরকার তথা রাজ্যের শাসকদলকে। সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের কাঁচা টাকার ব্যবসায় যে কেন্দ্রীয় সরকার ইচ্ছাকৃত ভাবেই আঘাত হানছে, সেই অভিযোগও করেন তিনি। পরিষদীয় মন্ত্রী বলেন, ‘‘অনেক রাজ্যেই কাঁচা টাকায় ব্যবসা হয়। বাংলাতেও যেমন হয় গুজরাত ও উত্তরপ্রদেশেও হয়। কিন্তু সেই সব রাজ্যে এই ধরনের আয়কর হানা হয় না। কারণ বাংলাকে দুর্বল করতে হবে। তাই যেনতেন প্রকারেণ এই কাজ করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy