জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।
বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গ্রেফতার হওয়ার পর প্রথম সাংবাদিক বৈঠকেই বিজেপির তীব্র সমালোচনা করল তৃণমূল। লোকসভা ভোটের আগে বাংলার শাসকদলকে ‘কালিমালিপ্ত’ করতেই কেন্দ্রের শাসকদল ইডি-সিবিআইকে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ তাদের। শুক্রবার সকালে দলের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করতে এসে মন্ত্রী শশী পাঁজা বিজেপির উদ্দেশে প্রশ্ন তুলে বলেন, “জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতার করে আপনারা উত্তর ২৪ পরগনায় তৃণমূলকে দুর্বল করার চেষ্টা করছেন?” ওই জেলায় তৃণমূল যথেষ্ট শক্তিশালী বলে জানান তিনি। তার পরই বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে শ্যামপুকুরের তৃণমূল বিধায়ক বলেন, “দেখুন আগামী নির্বাচনে কী হয়।”
বিজেপি ছেড়ে অন্য দলে যাওয়া নেতাদের বিরুদ্ধে কেন কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না, সেই প্রশ্নও তোলেন শশী। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর প্রসঙ্গ টেনে তিনি প্রশ্ন তোলেন যে, টিভি ক্যামেরার সামনে টাকা নিতে দেখা গেলেও কেন তাঁকে ডাকছে না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। তৃণমূলের সমালোচনা না করে বিজেপির নিজের দুর্নীতিগ্রস্ত লোকেদের নিয়ে আগে ভাবা উচিত বলে খোঁচা দেন তিনি। শশীর অভিযোগ, ভোট এলেই বিভিন্ন রাজ্যে সরকার ফেলতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করে থাকে বিজেপি। তবে এই রাজ্যে সেই পরিকল্পনা সফল হবে না, এমনটা দাবি করে তিনি বলেন, “বিজেপি এই রাজ্যে ভীষণ দুর্বল। ভোটে জিততে না পেরে নানা রকম অজুহাত দেয়। তৃণমূলকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করে।”
বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। উত্তর ২৪ পরগনায় রয়েছে মোট ৫টি লোকসভা আসন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বনগাঁ এবং ব্যারাকপুর কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। অন্য দিকে, দমদম, বারাসত এবং বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে জয় পেয়েছিল তৃণমূল। পরে অবশ্য ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। এক সময় উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সভাপতি, পর্যবেক্ষক-সহ একাধিক সাংগঠনিক পদে ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। ওই জেলারই হাবড়া কেন্দ্রের বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় জেলার রাজনীতিতে ‘প্রভাবশালী’ হিসাবেই পরিচিত। সেই প্রেক্ষিত থেকে জ্যোতিপ্রিয় ওরফে বালুর গ্রেফতারি তৃণমূলকে ওই জেলায় অপেক্ষাকৃত দুর্বল করবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। রাজ্যের শাসকদল অবশ্য তেমন সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিল।
রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলার তদন্তে সল্টলেকের বাড়িতে ২০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ইডি গ্রেফতার করে জ্যোতিপ্রিয়কে। গ্রেফতারির খবর আসার পরেই তৃণমূলের সমালোচনায় সরব হয় বিরোধী দলগুলি। রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের ইঙ্গিত, এ বার তৃণমূলের ‘মাথা’রা তদন্তকারী সংস্থার নিশানা হতে পারেন। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর অভিযোগ, রেশনকাণ্ডে প্রতি সপ্তাহে অন্তত আড়াই কোটি মানুষের রেশনের টাকা লুট করেছেন জ্যোতিপ্রিয়-সহ রাজ্যের শাসকদলের নেতারা! অন্য দিকে, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরীর দাবি, টাকার অঙ্কে রেশন দুর্নীতির তুলনায় শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি ‘ছোট শিশুর মতো’! জ্যোতিপ্রিয়র অবশ্য দাবি, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy