Advertisement
০৪ মে ২০২৪
TMC Brigade Rally

নেতাদের গাড়ি নয়, ব্রিগেডে মানুষের ভিড় চায় তৃণমূল, ট্রেনে-বাসে লোক আনায় জোর, মূল লক্ষ্য ‘বঞ্চিতেরা’

২০১৯ লোকসভা ভোটের আগে ১৯ জানুয়ারি ব্রিগেডে সভা ডেকেছিল তৃণমূল। কিন্তু সেই সভায় দেখা গিয়েছিল, মাঠ কিছুটা ফাঁকা। লোকের ভিড়ের বদলে নানাবিধ এসইউভি-র মেলা বসেছিল ময়দানে।

ব্রিগেডে ভিড় চান মুখ্যমন্ত্রী।

ব্রিগেডে ভিড় চান মুখ্যমন্ত্রী। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:১৩
Share: Save:

আগামী ১০ মার্চ ব্রিগেডে সমাবেশ ডেকেছে শাসকদল তৃণমূল। সভার পোশাকি নাম ‘জনগর্জন সভা’। সেই সভায় ‘জনতা’র ভিড় আনতে চায় বাংলার শাসকদল। নেতাদের গাড়ির ভিড় নয়, মানুষের ভিড়ে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড উপচে দিতে চায় তৃণমূল। এ বিষয়ে দলীয় স্তরে নির্দেশ যেতে শুরু করেছে।

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে ১৯ জানুয়ারি ব্রিগে়ডে সভা ডেকেছিল তৃণমূল। সেই ব্রিগেডের ঘোষণা হয়েছিল ২০১৮ সালের ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে। কিন্তু দেখা গিয়েছিল, মাঠের মাঝে ‘টাক’ পড়ে রয়েছে। কিছুটা ফাঁকা ফাঁকা। পাশাপাশি এ-ও দেখা গিয়েছিল, লোকের ভিড়ের বদলে নানাবিধ এসইউভি-র মেলা বসেছিল ময়দানে। জমায়েতের ময়নাতদন্ত করে শাসকদলের নেতারা সেই সময়ে জানিয়েছিলেন, জমায়েতে নিচুতলার দুর্বলতার কথা। সেই সমাবেশে দেখা গিয়েছিল, পঞ্চায়েত স্তরের নেতারা নিজেরা গাড়ি করে চার-পাঁচ জন ঘনিষ্ঠকে নিয়ে ব্রিগেডে পৌঁছে গিয়েছিলেন। কিন্তু স্থানীয় স্তরের জমায়েত আশানুরূপ হয়নি।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব বিলক্ষণ জানেন, গ্রামে-গঞ্জে নেতাদের এসইউভি-র ‘দাপাদাপি’ সাধারণ মানুষ ভাল চোখে দেখেন না। তাতে ‘দুর্নীতি’র যে অভিযোগ, তা আরও পোক্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। এমনিতেই ২০১১ সাল এবং তার পরবর্তী সময়ে সাদা ‘স্কর্পিও’ গাড়ি কার্যত ‘তৃণমূলের গাড়ি’ বলে চিহ্নিত হয়ে গিয়েছে। গ্রামাঞ্চলে সেই গাড়ি এবং তার ড্যাশবোর্ডে রাখা তেরঙা ব্যাজ হল ক্ষমতার ‘সূচক’। কিন্তু তাতে জনতার থেকে দূরত্ব বাড়ে বলেই দলের একাংশের বক্তব্য।

এ বার তাই দলের পক্ষ থেকে বিধায়ক, সাংসদ, জেলা সভাপতি, ব্লক সভাপতিদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, এলাকার মানুষকে সঙ্গে নিয়েই ব্রিগেডে আসতে হবে। নিজের মতো করে মাঠে চলে এলে হবে না। তৃণমূলের শ্রীরামপুর-হুগলি সাংগঠনিক দেলার সভাপতি তথা চাঁপদানির বিধায়ক অরিন্দম গুঁইন বলেন, ‘‘আমাদের জেলার মূল জমায়েত বাসে ও ট্রেনে করে‌ই যাবে। সর্ব স্তরের নেতৃত্ব সেই কাজ করা শুরু করে দিয়েছেন। প্রতি বার হুগলি থেকে যে লোক যায়, এ বার তার থেকে বেশি যাবে।’’ তৃণমূল মুখপাত্র তথা রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘এটা কর্মীদের ব্রিগেড। নেতাদের মুখ দেখানোর ব্রিগেড নয়। ফলে যা যা করার সব করা হচ্ছে।’’

তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর তৃতীয় ব্রিগেড হতে চলেছে ১০ মার্চ। ২০১১ সালে সরকারে আসার পর ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ হয়েছিল ব্রিগেডে। তার পর ব্রিগেডে সভা হয় পাঁচ বছর আগের ১৯ জানুয়ারি।

তৃণমূল সূত্রের খবর, এ বারে ব্রিগেডের জমায়েতে ১০০ দিনের কাজে বঞ্চিতদের আনার ব্যাপারে সাংগঠনিক ভাবে জোর দেওয়া হচ্ছে। সেই সংখ্যাটা প্রায় ২৪ লক্ষ। এঁরা হলেন তাঁরা, যাঁদের টাকা দেওয়া শুরু করছে রাজ্য সরকার। শাসকদলের বক্তব্য, বঞ্চিতদের অর্ধেককেও যদি ব্রিগেডমুখী করানো যায়, তা হলেই কলকাতা স্তব্ধ হয়ে যাবে। তা হলেই ব্রিগেড তথা ‘জনগর্জন’ সভা ‘সফল’ বলে মেনে নিতে কারও কোনও অসুবিধা থাকবে না। যে কোনও রাজনৈতিক দলই বড় সমাবেশ করে সাংগঠনিক শক্তি জানান দিতে চায়। তৃণমূলও চাইছে লোকসভার আগে তা দেখাতে। পাশাপাশি, সন্দেশখালির নিরন্তর ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে সামগ্রিক ভাবে জনমানসে যে ‘প্রভাব’-এর কথা দলের নেতা-কর্মীদের একাংশ বলছেন, ব্রিগেড সমাবেশ করে সেই উদ্বেগেও রাশ টানতে চান দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব। পাশাপাশি, লোকসভা ভোটের আগে গোটা দলকে রাস্তায় নামিয়ে, চাঙ্গা করতে চান সংগঠনকেও। তবে স্থানীয় স্তরের নেতারা যাতে সেই জমায়েত নিশ্চিত করেন, তা যাতে যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে হয়, তাতেই বেশি জোর দিচ্ছে শাসকদল। সমস্ত শাখা সংগঠনকেও পৃথক ভাবে জমায়েতের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হচ্ছে দলের তরফে। তাতে যেন গাড়ির ‘বাড়াবাড়ি’ না-থাকে, সেই মর্মে আগে থেকেই সতর্কীকরণ জারি করা হয়েছে।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

অন্য বিষয়গুলি:

Brigade Rally TMC Lok Sabha Election 2024
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE