Advertisement
E-Paper

সংগঠন দিয়ে কমিশনকে ঘিরবে তৃণমূল, কঠোর ‘ম্যান মার্কিং’ করার বার্তা দিলেন অভিষেক, প্রতি বিধানসভায় তৈরি যুদ্ধঘর

এনুমারেশন ফর্ম পূরণে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন তৃণমূলের ‘সেনাপতি’। সূত্রের খবর, অভিষেক বৈঠকে বলেছেন, রাস্তার আন্দোলন হবে। আইনি লড়াইয়ের জন্যও তৃণমূল তৈরি। কিন্তু আসল কাজ বৈধ সব ভোটারের ফর্ম পূরণ করা। প্রয়োজনীয় নথি প্রস্তুত করে দেওয়া। সেই কাজে যেন ফাঁক না-থেকে যায়।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ১৯:৪৭
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।

লোকসভা ভোটের ফলাফলে দেখা গিয়েছিল, গ্রাম দিয়ে শহর ঘিরেছিল তৃণমূল। বিধানসভা ভোটের আগে সংগঠন দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে ঘেরার পথে হাঁটতে চলেছে শাসকদল।

আগামী ৪ নভেম্বর থেকে কমিশনের নিযুক্ত বুথ লেভেল অফিসারেরা (বিএলও) এনুমারেশন ফর্ম নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাওয়া শুরু করবেন। তার আগে শুক্রবার দলের প্রায় ১৮ হাজার নেতার সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করে তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিলেন, বিএলও-কে সারা ক্ষণ নজরের মধ্যে রাখতে হবে। তিনি যখন যাঁর বাড়িতে যাবেন, তখন সঙ্গে থাকতে হবে দলের নিযুক্ত বুথ লেভেল এজেন্ট-২কে (বিএলএ-২)। সূত্রের খবর, অভিষেক বার্তা দিয়েছেন, এই কয়েক মাস সব ভুলে বিএলও-দের সঙ্গে থেকে কাজ করতে হবে বিএলএ-দের। যাতে কারও নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ না যায়। ১০০ শতাংশ ফর্ম যাতে পূরণ হয়, তা-ও নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

তৃণমূল সূত্রের খবর, অভিষেকের নির্দেশ, আগামী ৩ নভেম্বর, সোমবারের মধ্যে রাজ্যের সমস্ত বুথে বিএলএ-২’দের নাম কমিশনে জমা দিয়ে দিতে হবে। তিনি এ-ও বলেছেন যে, যদি কোনও বিএলও সহযোগিতা না-করেন, তাঁর নামও দলকে জানাতে হবে। তার পরে রাজ্য স্তর থেকে বিষয়টি দেখা হবে।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

প্রত্যেক বিধানসভায় একটি করে যুদ্ধঘর (ওয়ার রুম) খোলার নির্দেশ দিয়েছেন অভিষেক। তার গঠন কেমন হবে তা-ও বলে দেওয়া হয়েছে। ব্লক সভাপতি, বিধায়ক এবং সাংসদেরা সেই যুদ্ধঘরের তদারকি করবেন। ১৫ জন থাকবেন প্রতিটি যুদ্ধঘরের দায়িত্বে। ১০ জন বিএলএ-২’দের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। পাঁচ জন ‘ডাটা এন্ট্রি’ করার কাজ করবেন। দলের তরফে জেলাভিত্তিক এক জন করে বিএলএ-১ নিয়োগ করার কাজ ইতিমধ্যেই সেরে ফেলেছে তৃণমূল। যিনি জেলা স্তরের নির্বাচনী আধিকারিক এবং দলের নেতৃত্বের সঙ্গে সমন্বয়ের কাজ করবেন। শুক্রবারের বৈঠক থেকে ব্লক ও পঞ্চায়েত স্তরে আরও দু’টি পদ তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাদের পোশাকি নাম ‘ব্লক ইলেক্টোরাল রোল সুপারভাইজ়ার’ (বিইআরও) এবং ‘পঞ্চায়েত ইলেক্টোরাল রোল সুপারভাইজ়ার’ (পিইআরএস)। পুরসভা স্তরে এই কাজের জন্য ওয়ার্ড ভিত্তিক এক জনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

অভিষেক ভার্চুয়াল বৈঠকে বলে দিয়েছেন, আগামী ছ’মাস তৃণমূলের সর্ব স্তরের নেতাকর্মীদের ‘অ্যাসিড টেস্ট’ দিতে হবে। কোনও রকম গা-ছাড়া মনোভাব দেখানো যাবে না। প্রতিটি অঞ্চলে আগামী তিন মাস তৃণমূলের তরফে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ‘সহায়তা শিবির’ খোলা হবে।

আরও এক বার দলকে দিল্লিতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকার কথাও বলেছেন অভিষেক। সেই সঙ্গে জেলা ভিত্তিক পৃথক পৃথক নির্দেশও দিয়েছেন। বৈঠকের শুরুতে বক্তব্য পেশ করেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। তার পরেই বলা শুরু করেন অভিষেক। পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম যাতে ভোটার তালিকা থেকে বাদ না যায়, সে ব্যাপারে মালদহ, মুর্শিদাবাদের মতো জেলা নেতৃত্বকে এখন থেকেই সতর্ক হতে বলেছেন তিনি। বলেছেন, সশরীরে থেকে এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করাতে হবে। যে পরিযায়ী শ্রমিকেরা রাজ্যের বাইরে রয়েছেন, তাঁদের রাজ্যে ফিরিয়ে এনে ফর্ম পূরণ করানোর নির্দেশও দিয়েছেন অভিষেক।

সূত্রের খবর, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারের নেতৃত্বকে অভিষেক জানিয়ে দিয়েছেন, শুধু চা বাগানে বসে থাকলে হবে না। শ্রমিক বস্তির ঘরে ঘরে যেতে হবে। বীরভূমের নেতা অনুব্রত মণ্ডলের উদ্দেশে সকলকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করার কথা বলেছেন। পূর্ব মেদিনীপুরে জন্য দল পৃথক আইনি সেল খুলবে বলেও জানিয়েছেন।

এনুমারেশন ফর্ম পূরণের উপরেই সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন তৃণমূলের ‘সেনাপতি’। সূত্রের খবর, অভিষেক বৈঠকে বলেছেন, রাস্তার আন্দোলন হবে। আইনি লড়াইয়ের জন্যও তৃণমূল তৈরি। কিন্তু আসল কাজ বৈধ সব ভোটারের ফর্ম পূরণ করা। প্রয়োজনীয় নথি প্রস্তুত করে দেওয়া। সেই কাজটায় যেন ফাঁক না-থেকে যায়। মতুয়া অধ্যুষিত বনগাঁ, রনাঘাটেও হিন্দুদের মধ্যে যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, ঠারেঠোরে সেই বিষয়টিও সাংগঠনিক ভাবে ব্যবহার করার বার্তা দিয়েছেন অভিষেক।

TMC Abhishek Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy