Advertisement
E-Paper

শাসকের দলাদলিতেই তাতছে কেশপুর, অভিযোগ

তৃণমূলের অন্দরের খবর, কেশপুরে দলের দুই গোষ্ঠী সক্রিয়। এক দিকে ব্লক সভাপতি প্রদ্যোৎ পাঁজার অনুগামীরা, অন্য দিকে দলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি উত্তম ত্রিপাঠীর ঘনিষ্ঠরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২২ ০৬:৫৬
বিরোধীদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত নির্বাচনকে রক্তাক্ত করার চক্রান্ত এখন থেকে শুরু করেছে তৃণমূল।

বিরোধীদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত নির্বাচনকে রক্তাক্ত করার চক্রান্ত এখন থেকে শুরু করেছে তৃণমূল। ফাইল চিত্র।

পঞ্চায়েত ভোটের দেরি আছে। তবে বোমাবাজি-অশান্তির চেনা চেহারা ফিরছে কেশপুরে।

বুধবার কেশপুরের চরকায় শেখ রফিক আলি নামে এক তৃণমূলকর্মীর ডান হাতের একটি আঙুল উড়ে গিয়েছে বোমায়। অভিযোগ, তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বোমাবাজিতে ই এই কাণ্ড। রফিক মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি। তবে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত জেলা তৃণমূলের প্রথম সারির কেউ দেখা করতে আসেননি। কেশপুরের তৃণমূল বিধায়ক শিউলি সাহা তো তাঁকে দলের কর্মী বলেই মানতে নারাজ। শিউলি সাফ বলছেন, ‘‘কেন যাব হাসপাতালে? ও কি তৃণমূল করে না কি, যে যেতে হবে!’’

রফিকের স্ত্রী রোকসানা বিবির বক্তব্য, ‘‘স্বামী টোটো চালাতেন। কিন্তু বোমায় হাতটাই চলে গেল। এখন দল না দেখলে তিনটে মেয়ে নিয়ে পথে বসতে হবে।’’ রোকসানার দাবি, ‘‘আমার স্বামী তৃণমূল করেন। যারা ওকে বোমা মেরেছে, তারাও তৃণমূল করে। তৃণমূলের দু’টো দল এখানে— একটা পুরনো, আরেকটা নতুন।’’

২০০১ সালে কেশপুরে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্লোগান তুলেছিলেন, ‘কেশপুর/সিপিএমের শেষপুর।’ সেই সিপিএম গিয়ে তৃণমূল এসেছে। তবে কেশপুর বদলায়নি। অভিযোগ, বিরোধীরা এখানে কোণঠাসা এবং বছরভরই চলে তৃণমূলের নিজেদের কোন্দল, যা গড়ায় মারামারি, বোমাবাজিতে।

তৃণমূলের অন্দরের খবর, কেশপুরে দলের দুই গোষ্ঠী সক্রিয়। এক দিকে ব্লক সভাপতি প্রদ্যোৎ পাঁজার অনুগামীরা, অন্য দিকে দলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি উত্তম ত্রিপাঠীর ঘনিষ্ঠরা। শিউলি সাহার ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত প্রদ্যোৎ। এক সময়ে উত্তমও শিউলির অনুগামী ছিলেন। তবে এখন দু’জনের দূরত্ব বেড়েছে। জখম রফিকের দলীয় যোগ নিয়েও প্রদ্যোৎ ও উত্তমের বয়ান ভিন্ন। প্রদ্যোতের দাবি, ‘‘রফিক দলের কেউ নন।’’ অথচ উত্তম বলছেন, ‘‘রফিক দলের সক্রিয় কর্মী। ওঁরাই তো খেটেখুটে গত বিধানসভা নির্বাচনে ওই অঞ্চলে ৩ হাজার ভোটের লিড দিয়েছেন।’’ এর মধ্যে চরকায় ২৫টি তাজা বোমা উদ্ধার হয়েছে। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, ‘‘আরও কত যে বোমা জমে রয়েছে এখানে-সেখানে!’’ স্থানীয় সূত্রে খবর, অশান্তিতে ধৃতেরা সকলেই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক বলে পরিচিত।

বিরোধীদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত নির্বাচনকে রক্তাক্ত করার চক্রান্ত এখন থেকে শুরু করেছে তৃণমূল। বিজেপির রাজ্য নেতা তুষার মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘গোটা বাংলা বারুদের স্তূপের উপরে বসে আছে। কেশপুরের চরকার ঘটনাই তার প্রমাণ।’’ তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি অবশ্য বলেন, ‘‘বোমা কী ভাবে, কোথা থেকে আসছে, পুলিশ নিশ্চয়ই তদন্ত করে দেখছে।’’ পাশাপাশি চরকার গন্ডগোলের জন্য সিপিএমকে দুষছে তৃণমূল। যা শুনে সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূল এখন সবেতেই সিপিএমের ভূত দেখছে।’’

এরই মাঝে শান্তি খুঁজছে কেশপুর।

TMC Keshpur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy