দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়ার ধর্ষণ মামলাটি দুর্গাপুরের আ্যডিশনাল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে থেকে দুর্গাপুরের অতিরিক্ত দায়রা আদালতে স্থানান্তরিত করা হল। চার্জশিট জমা করার পরের দিন অর্থাৎ শুক্রবার ছ’জনের এক দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল দুর্গাপুরের অতিরিক্ত দায়রা আদালত। দুই অভিযুক্তের আলাদা করে জামিনের আবেদনও খারিজ করেন বিচারক। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ফের ছ’জন অভিযুক্তকে হাজির করানো হবে আদালতে। শুরু হবে এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া।
ঘটনার ২০ দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার আদালতে চার্জশিট জমা করে পুলিশ। আদালত সূত্রে খবর, শুক্রবার এই মামলার দুই অভিযুক্তের জন্য জামিনের আবেদন করেন তাঁদের আইনজীবী পূজা কুর্মি। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দেন বিচারক। ধৃত ছ’জনের মধ্যে এক জন আদালতে জানান, বৃহস্পতিবার রাতে সংশোধনাগারে তাঁদের হাতে এক বারের জন্য চার্জ সিট দেওয়া হয়। আবার সেটা নিয়ে নেওয়া হয়। শুক্রবার সকালে আদালতে আসার আগে আবার ওই চার্জশিট তাদের দেখানো হয়।
চার্জশিট পেসের দু’মাসের মধ্যে মামলার নিষ্পত্তি করে অভিযুক্তদের সাজা দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশাবাদী এই মামলার বিশেষ সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “দ্রুত গতিতে তদন্ত চালিয়ে চার্জশিট গঠন করা হয়। আমরা চেষ্টা করছি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই মামলাটি নিষ্পতি করার। আগামী কাল দুর্গাপুরের অতিরিক্ত দায়রা আদালতে মামলা স্থানান্তর করা হয়েছে। এ বার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে।” দুই অভিযুক্তের আলাদা করে জামিনের আবেদন খারিজের বিষয়ে বিভাস বলেন, “ওই দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু নির্যাতিতা ছাত্রী যে পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন, সেই পরিস্থিতি বুঝে এবং উপযুক্ত তথ্য দেখে বিচারক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”
গত ১০ অক্টোবর রাত ৮টা নাগাদ সহপাঠী এক ছাত্রের সঙ্গে কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে বেরিয়ে একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের ওই ছাত্রী নির্যাতনের শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় ‘নির্যাতিতা’র ওই সহপাঠী এবং কলেজ লাগোয়া গ্রামের পাঁচ যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করে। আদালত সূত্রের খবর, ধৃত সহপাঠীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ, অন্য তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ এবং বাকি দু’জনের বিরুদ্ধে জোর করে টাকা আদায়ের অভিযোগ আনা হয়েছে চার্জশিটে। এই মামলায় দ্রুত বিচার প্রক্রিয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।
প্রসঙ্গত, কয়েক দিন আগেই জেলে গিয়ে টিআই প্যারেডে অংশ নিয়েছিলেন ‘নির্যাতিতা’ ছাত্রী। শনাক্ত করেছিলেন কলেজ লাগোয়া গ্রাম থেকে ধৃত পাঁচ অভিযুক্তকে। তাঁদের এক জনকে মূল অভিযুক্ত বলেও চিহ্নিত করেছিলেন নির্যাতিতা। পাশাপাশি জানিয়েছিলেন, ঘটনার রাতে কার কী ভূমিকা ছিল। সেই সময় পুলিশ সূত্রে খবর মিলেছিল, ‘নির্যাতিতা’কে তাঁর ওড়িশার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে, তিনি ফের দুর্গাপুরে আসবেন।