E-Paper

বিজেপির ‘ভোট-চুরি’ বাংলায় চলবে না, হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর

ভোটার তালিকার অস্বচ্ছতা নিয়ে কংগ্রেস এবং শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে অংশ) যে অভিযোগ তুলেছিল, তা নিয়েই সুর চড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৬:১৬
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

চুরি করেই বিজেপি মহারাষ্ট্র এবং দিল্লির ভোটে জিতেছে — এই দাবি করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পরে দিন তিন-চার নীরব থাকলেও বুধবার তিনি বললেন, ‘‘আমরা এই চুরিটা ধরে ফেলেছি।’’ এই ‘চুরি’তে বিজেপি, নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে একযোগে কাঠগড়ায় তুলে তাঁর হুঁশিয়ারি, এ রাজ্যে তা হতে দেবেন না তিনি।

ভোটার তালিকার অস্বচ্ছতা নিয়ে কংগ্রেস এবং শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে অংশ) যে অভিযোগ তুলেছিল, তা নিয়েই সুর চড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য বাজেটের পরে বিজেপির সমালোচনার সূত্রেই মমতা বলেন, ‘‘ভোটার তালিকা নিয়ে দিল্লিতে কী করেছেন? অঙ্ক কষেছেন।’’ তৃণমূল নেত্রীর অভিযোগ, ‘অনলাইন ব্যবস্থা’য় ভোটার তালিকা নাম তোলা এবং বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়ায় ‘চুরি’ করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘প্রকৃত ভোটারের নাম বাদ দিয়ে বাইরে থেকে ভোটারের নাম তুলেছে বিজেপি। মহারাষ্ট্রে বিজেপির ৪০ লক্ষ ভোট বাড়ল কী করে, তা আমরা অঙ্ক কষে দেখে নিয়েছি।’’ বিজেপির নাম না-করেই তিনি বলেন, ‘‘কমিশন এবং ইডি, সিবিআইয়ের সাহায্য নিয়েছে ভুতুড়ে দল! ‘অনলাইনে’র নাম করে কেন ভুতুড়ে ভোটারের নাম তোলা হবে?’’ তৃণমূল নেত্রীর মন্তব্যে স্পষ্ট, এ বার বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে ভোটার তালিকায় কারচুপির অভিযোগে পথে নামতে চলেছে শাসকদল তৃণমূল।

আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে সেই চেষ্টা এ রাজ্যেও শুরু হয়েছে বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘এখানেও (পশ্চিমবঙ্গে) বিধানসভা কেন্দ্রে এসে বসে আছেন। সব হিসেব করে ২০- ৩০ হাজার লোক ঢোকাবেন। তার পর কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে কমিশন ভোট করাবে। বাইরে থেকে লোক এনে ভোট করাবে।’’ এ রাজ্যে তিনি তা করতে দেবেন না জানিয়ে মমতার হুঙ্কার, ‘‘বাংলায় তা হবে না। আমরা তা করতে দেব না। অন্যরা যা পারে না, বাংলা তা পারে। বাংলা স্বাধীনতা আন্দোলনের পীঠস্থান।’’

বিরোধীরা অবশ্য আগেই অভিযোগ করেছে, এ রাজ্যে ভোটার তালিকায় প্রায় ১৫ লক্ষ এমন ব্যক্তি আছেন, যাঁদের নাম একাধিক জায়গায় নথিভুক্ত। এর দায় শাসক দল এবং রাজ্য প্রশাসনের, এমনই অভিযোগ তাদের। মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘পরাজিতের আর্তনাদ! মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চিত হয়ে গিয়েছেন, দিল্লি গিয়েছে, এ বার বাংলা যাবে!’’ তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ভোটার তালিকায় নাম তুলছে তাঁর দলই।’

বাজেটের সূত্রেই এ দিন রাজ্যের প্রতি বঞ্চনা, যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ভাঙার মতো পুরনো অভিযোগগুলিও সামনে এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী। দুর্নীতির জন্য তৃণমূলকে নিশানা করে সংসদে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন যে ‘বঞ্চনা’র অভিযোগের জবাব দিয়েছিলেন, তার পাল্টা মমতার তোপ, ‘‘নিজেদের দুর্নীতি দেখুন! ‘উজালা’র কী হল? নির্বাচনের জন্য করেছিলেন!’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘শুধু ভাষণ। এখন তো গুজরাতও বলছে টাকা দেয় না। কিচ্ছু করেন না। শুধু ইডি, সিবিআই পাঠিয়ে দেন।’’ রাজ্যের বাজেট বক্তৃতারও একাধিক জায়গায় ‘কেন্দ্রীয় সরকার অন্যায় ভাবে’ টাকা বন্ধ করে দিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

পাশাপাশি কুম্ভমেলায় পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা টেনে মমতা বলেছেন, ‘‘কত দেহ নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে জানা নেই! করোনার সময়ও দেহ ভাসিয়ে দিয়েছে, বিহারে পাওয়া গিয়েছে।’’ এই দুর্ঘটনার দায় নিয়ে প্রশ্নের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কুম্ভ-স্নানের দিকে ইঙ্গিত করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘গঙ্গাসাগরে স্নানের দিন আমি কখনও যাই না। ভিড়ের সময়ে ভিআইপি-রা গেলে সমস্যা হতে পারে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mamata Banerjee Election BJP TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy