Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Tapan

একই পরিবারের ৪ জনের ক্ষতবিক্ষত, ১ জনের ঝুলন্ত দেহ, রহস্য তপনে

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শনিবার রাতে অনুদের বাড়িতে একটি অনুষ্ঠান উপলক্ষে জমায়েত হয়েছিলেন আত্মীয়-পরিজনেরা। সেই অনুষ্ঠানের পরের দিনই ৫ জনের দেহ উদ্ধার হয়।

তপনের পরিবারের সকলকেই খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন গৃহকর্তার পরিজন। —নিজস্ব চিত্র।

তপনের পরিবারের সকলকেই খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন গৃহকর্তার পরিজন। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তপন শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২০ ১২:৪৫
Share: Save:

পারিবারিক অনুষ্ঠানের পরদিনই একই পরিবারের ৫ সদস্যের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে রহস্য ঘনাল দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনে। রবিবার সকালে তপন থানা এলাকার দক্ষিণ জামালপুরের ওই পরিবারের কর্তা ছাড়াও তাঁর মা, স্ত্রী এবং ২ নাবালিকা সন্তানের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এই ঘটনার পিছনে কী কারণ রয়েছে, তা নিয়ে ধন্দে পড়েছে পুলিশ। গৃহকর্তাই কি নিজের পরিবারের সদস্যদের নিকেশ করে আত্মঘাতী হয়েছেন না সম্পত্তির লোভেই ৫ জনকে খুন করা হয়েছে, তা নিয়েও এলাকাবাসীর মধ্যে চলছে জল্পনা।

পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতরা হলেন মৃত উলোবালা বর্মণ (৬০), তাঁর ছেলে অনু বর্মণ (৩২), অনু বর্মণের স্ত্রী মল্লিকা বর্মণ (২৮) ও তাঁদের মেয়ে বিউটি বর্মণ (১০) এবং স্নিগ্ধা বর্মণ (৭)।

দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত বলেন, ‘‘এ দিন সকাল ৬টা-সাড়ে ৬টা নাগাদ অনুর ভাইপো তাঁদের খোঁজ করতে যান। তবে অনেকক্ষণ ডাকাডাকি করেও বাড়ির ভিতর থেকে কোনও সাড়াশব্দ না পেলে পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢোকেন। দরজা বন্ধ থাকায় জনাকয়েক গ্রামবাসীকে ডেকে নিয়ে আসেন তিনি। এরপর দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে অনুর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। বাকি দেহগুলিতে ধারাল অস্ত্রের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত ছিল। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।’’

আরও পড়ুন: ট্রেন বাড়াতে ফের অনুরোধ রাজ্যের

৭টা নাগাদ ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ দেখে, সিলিং থেকে ১টি নাইলনের দড়ির ফাঁসে ঝুলছে অনুর দেহ। অনুর মা-স্ত্রী এবং দু’মেয়ের দেহ বিশেষ করে মাথায় ধারাল অস্ত্রের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত ছিল। দেহ উদ্ধার করে তা ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শনিবার রাতে অনুদের বাড়িতে একটি অনুষ্ঠান উপলক্ষে জমায়েত হয়েছিলেন আত্মীয়-পরিজনেরা। সেই অনুষ্ঠানের পরের দিনই ৫ জনের দেহ উদ্ধার হওয়ায় হতবাক অনেকেই। গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যরাই পুলিশে খবর দেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছন জেলা প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তারা। অনুর বোন ললিতা সরকারের দাবি, ‘‘সম্পত্তির লোভেই দাদাকে খুন করা হয়েছে।’’ তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত এ নিয়ে মন্তব্য করতে নারাজ তদন্তকারীরা। এলাকায় প্রশ্ন উঠছে, রাতারাতি কী ঘটল যাতে পরিবারের সকলের এই পরিণতি হল?

আরও পড়ুন: পথদুর্ঘটনায় মৃত্যু জাতীয় দলের ফুটবলারের

ঘটনার তদন্তে পুলিশ আধিকারিকেরা। —নিজস্ব চিত্র।

গোটা ঘটনা নিয়ে এলাকাবাসীর মতো ধন্দে পড়েছেন তদন্তকারীরাও। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ আধিকারিকেরা জানতে পেরেছেন, ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন অনু। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘গত সেপ্টেম্বরে ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য মণিপাল গিয়েছিলেন অনু।’’ সেই সঙ্গে গত ৭-৮ দিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। অনুবাবুর গত কয়েক দিনের গতিবিধি নিয়েও তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।

তবে একই পরিবারের ৫ সদস্যের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পিছনে ঠিক কী কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে হলে জানিয়েছেন তাঁরা। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘প্রাথমিক অনুমান, পরিবারের সদস্যদের খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন অনু।’’ তবে তদন্তের পরই মৃত্যুর কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। যদিও সম্পত্তির লোভেই তাঁদের খুন করা হয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tapan Murder Crime Crime Cases
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE