Advertisement
E-Paper

নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে গর্জে উঠল বাংলাও, বিক্ষোভ-আগুন-প্রতিরোধ

হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসে পাথর নিয়ে হামলা করেন অবরোধকারীরা।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৪৭
উলুবেড়িয়া স্টেশনে। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র

উলুবেড়িয়া স্টেশনে। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে শুক্রবার বিক্ষোভ ছড়াল রাজ্যের নানা জায়গায়। তিন জেলায় সেই রোষ আছড়ে পড়ল রেলপথেও।

হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসে পাথর নিয়ে হামলা করেন অবরোধকারীরা। ভাঙচুর চালানো হয় রেলের কেবিনে এবং উলুবেড়িয়া স্টেশনে। লুট হয় টাকা। উত্তর ২৪ পরগনার কাজিপাড়া স্টেশনের কাছে একটি লোকালেও পাথর ছোড়ে জনতা। তাঁরা সংশোধিত আইনের বিরুদ্ধে একটি মিছিলে শামিল হতে লাইন ধরে যাচ্ছিলেন। ভাঙচুর চালানো হয় মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা স্টেশনে।

তিন ঘটনায় রেল পুলিশের দুই কর্মী আহত হয়েছেন। কোনও প্রাণহানি হয়নি। উলুবেড়িয়ার ঘটনার জেরে দক্ষিণ-পূর্ব রেলে ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হয়। রাত পর্যন্ত বহু স্টেশনে আপ কান্ডারি এক্সপ্রেস, ডাউন যশোবন্তপুরম এক্সপ্রেস-সহ দূরপাল্লার অনেক ট্রেন দাঁড়িয়ে যায়। বিঘ্নিত হয় লোকাল ট্রেন চলাচলও।

আরও পড়ুন: মানব না নাগরিকত্ব আইন, মমতার পর কড়া ৬ রাজ্য

এ দিন বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ উলুবেড়িয়ার আপ চার নম্বর লাইন দিয়ে আসছিল চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস। কেন্দ্রীয় সংশোধিত আইনের প্রতিবাদে সেই সময়ে জনতা প্ল্যাটফর্মের সামনে লাইন অবরোধ করেছিল জাতীয় পতাকা নিয়ে। ট্রেন আসতে দেখে তাঁরা দাঁড়িয়ে পড়েন। কিন্তু ট্রেনের গতি কমেনি। তখন অবরোধকারীরা লাইনের পাথর তুলে ট্রেনের দিকে ছুড়তে থাকেন। ট্রেনটি প্ল্যাটফর্ম পেরিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। অবরোধকারীদের কয়েক জন চালকের কেবিনে ওঠার চেষ্টা করেন। তাঁদের একাংশই অবশ্য চালককে হামলার হাত থেকে রক্ষা করেন।

অবরোধকারীরা উলুবেড়িয়া স্টেশনে এবং পশ্চিম কেবিনে ভাঙচুর চালান। রেল পুলিশ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। জনতার ছোড়া পাথরে রেল পুলিশের এক কর্মী আহত হন। তার পরেও দফায় দফায় জনতা ট্রেনটিকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে থাকে। হামলাকারীদের দখলে চলে যায় পুরো স্টেশন চত্বর। রেল লাইনের উপর টায়ার জ্বালানো হয়।

ওই ট্রেনের এস-৬ কামরায় সপরিবার ছিলেন অমিতাভ সেন নামে এক যাত্রী। তিনি ব্রহ্মপুর যাচ্ছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘সাড়ে ৩টে নাগাদ ট্রেন যখন উলুবেড়িয়া পার হচ্ছে, তখনই একদল মানুষ ট্রেনে পাথর ছুড়তে শুরু করে। জানলা বন্ধ করে দিই। বৃষ্টির মতো পাথর পড়ছিল।’’

ওই গোলমালের সময়ে মুম্বই রোডেও অবরোধ চলায় পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ সমস্যায় পড়ে। সন্ধ্যায় হাওড়া কমিশনারেট থেকে পুলিশ বাহিনী উলুবেড়িয়া রওনা দেয়। ৬টা নাগাদ জনতা নিজে থেকেই চলে যায়। করমণ্ডল এক্সপ্রেস ছাড়ে রাত ৮টা নাগাদ।

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘বিক্ষোভকারীরা উলুবেড়িয়া স্টেশনে ঢুকে অফিসের ৮টি কম্পিউটার, নগদ ৪ লক্ষ টাকা এবং সমস্ত ছাপা টিকিট লুট করে। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের একটি নতুন রেক ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে। এর জেরে ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হয়েছে।’’ অবরোধকারীদের কোনও নেতা না-থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি দাবি করেছেন জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের এক কর্তা।

বিকেল থেকে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় ট্রেন অবরোধ হয়। বেলডাঙা স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের দোকানপাট ভেঙে দেওয়া হয়। ভাঙচুর চালানো হয় স্টেশন মাস্টারের অফিসে। লাইনে বসে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। হামলায় রেল পুলিশের কর্মী জখম হন। ওই লাইনেও ট্রেন চলাচল থমকে যায়।

Citizenship Amendment Act Video
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy