ফাইল চিত্র।
প্রান্তিক ফেরিওয়ালা থেকে একেবারে ভোট প্রচারের ‘মুখ’!
সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে দুবরাজপুরের বাদাম বিক্রেতা ভুবন বাদ্যকরের ভুবনটাই বদলে গিয়েছে। সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া তাঁর ‘কাঁচা বাদাম...’ গান এই কপাল খোলার কারণ। ভুবন এখন কলকাতা পুরভোটে তৃণমূলের প্রচারের মুখ। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের জোড়া ফুল প্রার্থী অমল চক্রবর্তী থেকে তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র ভোট প্রচারে এখন ‘ভুবন-মুখী’।
শনিবার সকালে কলকাতায় অমল চক্রবর্তীর হয়ে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রচার করেছেন। সন্ধ্যায় আবার ‘কাঁচা বাদাম’ খ্যাত ভুবনকে দেখা গিয়েছে মদন মিত্রের সঙ্গে। গান গাওয়া তো ছিলই। রাতারাতি সাড়া ফেলা ভুবনের হালের জনপ্রিয়তাকে তৃণমূলের নেতারা যেমন কাজে লাগাতে চেয়েছেন, তেমন প্রান্তিক ফেরিওয়ালা ভুবনও পরিচিতি ও উপার্জনের একটা বিকল্প রাস্তা খুঁজে পাচ্ছেন। কোনও পক্ষ তা আড়ালও করছেন না। তৃণমূল সূত্রের খবর, মদন মিত্র ২০ হাজার টাকা দেওয়ার পাশাপাশি ফল প্রকাশের দিন ১৪৪ কেজি কাঁচা বাদামের অর্ডার দিয়েছেন ভুবনকে।
যা অত্যন্ত খুশি করেছে ভুবনকে। বলছেন, ‘‘যা চেয়েছিলাম সেটা পাচ্ছি। মানুষের ভালবাসা আশীর্বাদও পাচ্ছি।’’ এই উত্তরণে খুশি পরিবারও। দুবরাজপুরের লক্ষ্মীনারায়ণ গ্রাম পঞ্চায়েতের কুড়ালজুড়ি গ্রামে দুই ছেলে, স্ত্রী, এক পুত্রবধূ নিয়ে ভরা সংসারে মুখ্য উপার্জনকারী ভুবনই। ভুবনের স্ত্রী আদরি বাদ্যকর বলছেন, ‘‘আয় বাড়ায় এখন আমরা ভাল আছি।’’ তবে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় পাওয়া বাড়ি তৈরি সম্পূর্ণ হয়নি বলেও জানালেন।
মেয়েদের চুল, নকল সোনার চুরি-মালা, পায়ের তোড়া বালা এবং মোবাইল-ভাঙার বিনিময়ে কাঁচা বাদাম বিক্রি করতেন ভুবন। খদ্দেরের নজর টানতে কথার পিঠে কথা সাজিয়ে ফেলে বলতেন তিনি। বাদাম বিক্রেতার ‘মেঠো’ সেই সুর পছন্দ হয়ে গিয়েছিল কোনও পথ চলতি যুবকের। সেই গানের ভিডিয়ো ছড়িয়ে দেন সমাজ মাধ্যমে। তার পর থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়েছেন তিনি। নানা মাধ্যম ছেয়েছে গানটি। এ দিকে, ছোট থেকে গায়ক হওয়ার স্বপ্ন লালন করে এসেছেন ভুবন। হয়েছে তা-ও। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক বার গানটি রেকর্ড করেছেন।
পেশার টানে গেয়ে ফেলা পাঁচ লাইনের গান যে তৃণমূলের ভোট প্রচারের ময়দানে পৌঁছে দেবে সেটা কেমন যেন বিশ্বাস হচ্ছে না ভুবনের। দুবরাজপুরের বিধায়ক অনুপ সাহা, যিনি সবার আগে প্রান্তিক মানুষটির বাড়ি পৌঁছে গিয়েছিলেন, তিনি বলেন, ‘‘যে ভাবেই হোক শিল্পীর অবস্থা ফিরুক সেটাই চাই। কে তাঁকে কাজে লাগাচ্ছে সেটা বড় কথা নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy