সরকার কিংবা শাসকদলকে চাপে ফেলতে স্লোগান দিচ্ছেন কিংবা কৌশলী হইহট্টগোল করছেন বিরোধী দলের বিধায়কেরা। দেশ কিংবা বিভিন্ন রাজ্যের আইনসভায় এ অতি পরিচিত দৃশ্য। কিন্তু শাসক বিধায়কদের হইহট্টগোলে বিরোধী বিধায়কেরা কক্ষত্যাগ করছেন, এই দৃশ্য খুব একটা দেখা যায় না। শুক্রবার এমন দৃশ্যেরই সাক্ষী থাকল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা। শাসক তৃণমূলের বিধায়ক-মন্ত্রীদের হইহট্টগোলে বিধানসভা কক্ষত্যাগ করে বেরিয়ে গেলেন বিজেপি বিধায়কেরা। এমন ঘটনা শেষ কবে বিধানসভায় ঘটেছে, তা মনে করতে পারছেন না অনেকেই।
বৃহস্পতিবার স্পোর্টস ইউনিভার্সিটি বিল নিয়ে বলতে উঠেছিলেন বিজেপির পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতক শঙ্কর ঘোষ। শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক বক্তৃতা শুরু করতেই রাজ্যের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বলেন, “গত কাল (বৃহস্পতিবার) যখন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য সেল্স ট্যাক্স নিয়ে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন, সেই সময় বিজেপি বিধায়কেরা বেরিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে ছিলেন শঙ্কর ঘোষ। তাই আজ আমরা তাঁর বক্তৃতা শুনব না।” বাবুলের কথা শেষ হতেই শাসকদলের বিধায়কেরা হইচই শুরু করে দেন। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে হাতের ইশারায় কিছু বলতে দেখা যায়। তার পর হইচইয়ের প্রাবল্য আরও বাড়ে। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বিধায়কদের সংযত হতে বললেও কাজের কাজ হয়নি। চিৎকার-চেঁচামেচির মধ্যেই বক্তৃতা শেষ করেন শঙ্কর।
যে সময় এই ঘটনা ঘটে, সেই সময় শঙ্কর ছাড়া আর কোনও বিজেপি বিধায়ক অধিবেশন কক্ষে ছিলেন না। তবে ঘটনার খবর পেয়ে অধিবেশন কক্ষে যান বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউড়ি, হিরণ চট্টোপাধ্যায়, অসীম সরকার, অনুপ সাহা, মধুসূদন বাগ প্রমুখেরা। তৃণমূলের মহিলা বিধায়কদের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন চন্দনা। তাঁকে সরিয়ে নিয়ে যান হিরণ।
পরে কক্ষত্যাগ করে বিধানসভা চত্বরে মুখে কালো কাপড় বেঁধে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়কেরা। হাতে পোস্টার নিয়েও বিক্ষোভ দেখানো হয়। পোস্টারে লেখা ছিল, ‘চুপ, বিধানসভা চলছে!’। শুক্রবার বেলায় দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসানসোলের উদ্দেশে রওনা দেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপি সূত্রে খবর, তাঁকে গোটা ঘটনার কথা জানানো হয়েছে।