Advertisement
E-Paper

মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে সস্ত্রীক রাজ্যপাল, উৎসবের সেতু বেয়ে ফিরল গণতান্ত্রিক সৌজন্য

রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় নিজেই জানিয়েছিলেন যে, এ বার ভাইফোঁটার দিন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি যেতে চেয়েছিলেন তিনি, সেই মর্মে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে কালীপুজোয় নিমন্ত্রণ করেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৯ ২১:১৬
মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির পথে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। নিজস্ব চিত্র

মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির পথে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। নিজস্ব চিত্র

একের পর এক সঙ্ঘাতে বিস্তর বেড়েছিল দূরত্ব। ঘুচল উৎসবে। অন্তত আপাতদৃষ্টিতে। কালীপুজোর সন্ধ্যায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় সস্ত্রীক গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি। সঙ্ঘাতই যে শেষ কথা নয়, গণতান্ত্রিক কাঠামোয় সহাবস্থানই যে গুরুত্বপূর্ণ, সেই বার্তা মিলল দু’পক্ষ থেকেই।

রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় নিজেই জানিয়েছিলেন যে, এ বার ভাইফোঁটার দিন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি যেতে চেয়েছিলেন তিনি, সেই মর্মে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে কালীপুজোয় নিমন্ত্রণ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর নিমন্ত্রণ তিনি গ্রহণ করেছেন এবং তাঁর বাড়িতে সস্ত্রীক যাবেন বলেও রাজ্যপাল জানিয়েছিলেন। কথা মতোই হল কাজ।

রবিবার সন্ধ্যা সওয়া ৬টা নাগাদ রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এবং তাঁর স্ত্রী সুদেশ ধনখড় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে পৌঁছন। প্রতি বছরই কালীপুজোয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে দিনভর পুজোর সব জোগাড়যন্ত্রের তদারকি করেন। তাই সারা দিন বাড়িতেই থাকেন। এ দিনও তেমনই ছিলেন। রাজ্যপাল এবং তাঁর স্ত্রীকে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই স্বাগত জানান। তার পরে নিজের ঘরে নিয়ে যাওয়ার পথে আলাপ করিয়ে দেন পরিবারের কয়েক জন সদস্যার সঙ্গে। ঘরে অল্প একটু কথোপকথনের পরেই রাজ্যপাল এবং তাঁর স্ত্রীকে মুখ্যমন্ত্রী নিয়ে যান প্রতিমার সামনে। সেখানেও বসার ব্যবস্থা ছিল। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাশাপাশি বসেন সেখানে। রাজ্যপালের অন্য পাশে বসেন তাঁর স্ত্রী। আর মুখ্যমন্ত্রীর অন্য পাশে বসেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন: হ্যাঁ, বাগদাদি শেষ! ৩ সন্তান-সহ আত্মঘাতী আইএস প্রধান, ঘোষণা ট্রাম্পের

রাজ্যপাল এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে পৌঁছনোর বেশ কিছুক্ষণ আগে থেকেই অবশ্য অতিথি-অভ্যাগতদের সমাগমে ভরে গিয়েছিল বাড়ির সামনের চত্বর। ভরে গিয়েছিল সংলগ্ন হলও। দক্ষিণ কলকাতার একটি বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকরা আমন্ত্রিত ছিলেন অন্যান্য বছরের মতোই। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই তাঁদের আপ্যায়ন করেন। তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরের নেতা, বিধায়ক, সাংসদ, মন্ত্রীরাও সন্ধ্যা থেকেই একে একে হাজির হচ্ছিলেন দলনেত্রীর বাড়িতে। সাধারণ জনতাও এই দিনটায় বড় সংখ্যায় হাজির হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে। কাউকেই আটকানো হয় না। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অতএব পুজোর কাজকর্মের তদারকির পাশাপাশি অতিথি আপ্যায়নের দিকেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতটা পারছিলেন, নজর রাখছিলেন। সে সবের মাঝেই পৌঁছন রাজ্যপাল ও তাঁর স্ত্রী। যতক্ষণ তাঁরা ছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী মূলত তাঁদেরই সময় দেন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে এ দিন বেশ কয়েক জন মন্ত্রীর সঙ্গেও আলাপ হয় রাজ্যপালের। কয়েক দিন আগেই তিনি আক্ষেপ করেছিলেন যে, রাজ্যের মন্ত্রীদের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়নি।

আরও পড়ুন: সামনেই অযোধ্যা রায়, রাজনৈতিক দলগুলির দায়িত্ব স্মরণ করালেন প্রধানমন্ত্রী

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘেরাওয়ের মাঝখান থেকে বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধার করতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে হোক বা ‘লক্ষ্মণরেখা’ বিতর্ককে ঘিরে, জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষিতে পুলিশ-প্রশাসনের সমালোচনাকে ঘিরে হোক বা কার্নিভালে তাঁকে ব্ল্যাকআউট করার অভিযোগকে কেন্দ্র করে— গত তিন মাসে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় অনেক বারই সঙ্ঘাতে জড়িয়েছেন এ রাজ্যের সরকার তথা শাসক দলের সঙ্গে। রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সম্পর্ক কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে আর কয়েক মাস পরে, তা নিয়ে গবেষণা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে। এমন এক পরিস্থিতিতেই কিছুটা কমানো হল উত্তাপ। রাজ্যপাল নিজে তো সৌজন্যে বার্তা দিলেনই। মুখ্যমন্ত্রীও তাতে সাড়া দিলেন। ফলে কালীপুজোর রাতে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির উঠোন সাক্ষী হয়ে রইল গণতান্ত্রিক সৌজন্যের।

Mamata Banerjee Jagdeep Dhankhar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy