হুগলি নদীপথের পূর্ব-পশ্চিম বরাবর যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য বিশ্বব্যাঙ্কের দ্বারস্থ হচ্ছে রাজ্য সরকার। বুধবার বাজেট প্রস্তাবে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ইলাহাবাদ থেকে হলদিয়া পর্যন্ত জলপথ পরিবহণের উপর বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছেন। নবান্ন সূত্রের খবর, ওই পথের যে অংশ পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে রয়েছে, তার দু’ধারের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য বিশ্বব্যাঙ্কের কাছে এক হাজার কোটি টাকা ঋণ নিতে চলেছে রাজ্য সরকার।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা অনুয়ায়ী, ইলাহাবাদ থেকে হলদিয়া পর্যন্ত গঙ্গার উপর জলপথ তৈরির জন্য পরিকাঠামো নির্মাণ করবে নরেন্দ্র মোদী সরকার। এবং এই নির্মাণ হবে নদীর উত্তর-দক্ষিণ বরাবর। ইতিমধ্যে এই জলপথকে ১ নম্বর জাতীয় জলপথ হিসেবে ঘোষণাও করেছে কেন্দ্র।
কেন্দ্রের পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নদীর পূর্ব-পশ্চিম ধার বরাবর উন্নয়ন করতে চায় রাজ্য। পরিবহণ দফতরের এক কর্তা জানান, রাজ্যের পরিকল্পনা নিয়ে ইতিমধ্যে বিশ্বব্যাঙ্কের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক দফা আলোচনা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ঋণ দিতে সম্মতও হয়েছে তারা।
ঠিক কী করতে চায় রাজ্য?
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, কেন্দ্রের প্রস্তাবিত জলপথ-মানচিত্রে ফরাক্কা থেকে হলদিয়া পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের আওতায়। উন্নয়নের জন্য হুগলি নদীর দু’পারের মধ্যে সেতু, ‘রো-রো’ (রোল অন রোল অফ), জেটি-সহ নানা যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করাই রাজ্য সরকারের মূল কাজ। নবান্নের যুক্তি, গঙ্গার দু’পারের মধ্যে পণ্য পরিবহণ বাড়াতে পারলে সড়কপথে চাপ যেমন কমবে, তেমন খরচেও সাশ্রয় হবে। পণ্য পরিবহণের কথা ভেবে ফরাক্কা থেকে হলদিয়া পর্যন্ত বেশ কয়েকটি জায়গায় ‘রো-রো’ পরিষেবা চালু করা হবে। সে জন্য প্রয়োজনীয় জেটিও তৈরি হবে বিশ্বব্যাঙ্কের সহযোগিতায়।
পাশাপাশি, বর্তমানে যে সব জেটি রয়েছে, সেগুলির নিরাপত্তা এবং পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করতে চায় রাজ্য সরকার। সরকারি সূত্রের খবর, যাত্রী পরিবহণে ব্যবহৃত ভুটভুটিগুলি দুর্ঘটনাপ্রবণ। সেগুলির বদলে যাত্রী পরিবহণে উন্নত জলযান আনার কাজও করা হবে বিশ্বব্যাঙ্কের সহযোগিতায়।
এ বারের বাজেটে জল, সড়ক এবং রেল পরিবহণকে এক সূত্রে গাঁথার উপরে বাড়তি জোর দিয়েছে কেন্দ্র। সে কথা মাথায় রেখে বিশ্বব্যাঙ্কের সহায়তায় যে প্রকল্প করা হবে, তাতে জলপথের সঙ্গে স়ড়ক ও রেলের যোগসূত্র তৈরির বিষয়টিও মাথায় রাখা হয়েছে।
পরিবহণ দফতরের ওই কর্তা জানান, ইতিমধ্যেই ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)-র অধ্যাপকদের একটি প্রতিনিধিদল কলকাতায় ঘুরে গিয়েছে। তাঁরা হুগলি নদী বরাবর যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিকাঠামো দেখেছেন। ওই কর্তা বলেন, ‘‘এমআইটি ফিরে গিয়ে ওরা আমাদের রিপোর্ট দেবে। সেই রিপোর্টে কী ভাবে তিনটি পরিবহণের মধ্যে একটা যোগসূত্র গড়ে তোলা যায়, একই টিকিটে তিনটি পরিবহণেই যাত্রীরা যাতায়াত করতে পারেন— সে সব নিয়েও পরামর্শ দেবে প্রতিনিধিদলটি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy