নওসাদ সিদ্দিকী। ছবি: সংগৃহীত।
দলের জন্ম হয়েছিল গত বিধানসভা ভোটের আগে। এ বার পঞ্চায়েত ভোটে দক্ষিণবঙ্গের কিছু জায়গায় শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জোর টক্কর দিচ্ছে তারা। ভাঙড়ে ‘প্রতিরোধের মুখ’ হয়ে উঠেছেন বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী। কিন্তু রাজ্যের রাজনৈতিক পরিসরে আত্মপ্রকাশের দু’বছর পরেও পঞ্চায়েত ভোটের ব্যালটে নাম থাকছে না ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ)! বিধানসভা নির্বাচনের মতোই পঞ্চায়েত ভোটেও নির্বাচনী নথিতে বিহারের নথিভুক্ত রাষ্ট্রীয় সেক্যুলার মজলিস পার্টির (আরএসএমপি) নামেই পরিচিত হতে হচ্ছে আইএসএফ প্রার্থীদের। আরএসএমপি-র জন্য বরাদ্দ ‘খাম’ প্রতীকেই তাঁদের লড়াই হতে চলেছে বলে নওসাদের ইঙ্গিত।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, জাতীয় ও রাজ্য দলগুলির প্রতীক নির্দিষ্ট। তার বাইরে যারা আছে, গত ১৫ জুন রাজ্য নির্বাচন কমিশন নির্দেশিকা দিয়ে সেই দলগুলির জন্য প্রতীক বণ্টন সংক্রান্ত বিষয়টি উল্লেখ করেছে। সেখানে ১০টি রাজনৈতিক দলের নাম এবং প্রতীক নির্দিষ্ট করা হয়েছে। সেই তালিকায় সিপিআই থেকে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চাও আছে। আরও ১০টি দলের নাম জানানো হয়েছে, যাদের প্রতীক নির্দিষ্ট নয়। তবে নির্দলদের জন্য থাকা ‘উন্মুক্ত’ প্রতীক বণ্টনে এই দলগুলির পছন্দ অগ্রাধিকার পাবে। এই ১০টি দলগুলির তালিকায় হিন্দু সমাজ পার্টি বা অম্বেডকরাইট থাকলেও আইএসএফের নাম নেই। তারা লড়ছে আরএসএমপি-র নামে।
দু’বছর পরেও কেন আইএসএফের স্বীকৃতি না নির্দিষ্ট প্রতীক নেই? দলের চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক নওসাদের বক্তব্য, ‘‘রাজ্য দলের স্বীকৃতি পেতে গেলে নির্বাচনে একটা নির্দিষ্ট শতাংশ ভোট পেতে হয়। তবেই প্রতীক জোটে। কিন্তু সেই সুযোগ আমাদের হয়ে ওঠেনি। যে কারণে আমরা রাজ্য দলের স্বীকৃতি পাইনি।’’ তবে তাঁর দাবি, ‘‘আমরা রাজ্য নির্বাচন কমিশনে নথিভুক্ত দল। এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে যদি আমরা সব আসনে লড়াই করার সুযোগ পেতাম, তা হলে হয়তো নির্দিষ্ট শতাংশ ভোট পেয়ে যেতাম। যাতে রাজ্য দলের স্বীকৃতি পেতে সমস্যা হত না। কিন্তু আমাদের সব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি।’’ নওসাদের যুক্তি, এই পরিস্থিতিতে গত বিধানসভা নির্বাচনের মতোই আরএসএমপি-র ‘খাম’ প্রতীকে পঞ্চায়েত ভোটে তাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
দলের নাম পরিচিত হয়ে গেলেও নির্বাচনী নথিতে অন্য দলের প্রতীকে প্রতিন্দ্বন্দ্বিতা করার নজির অবশ্য রাজ্যে নতুন নয়। বামফ্রন্টের শরিক দলগুলির মধ্যে সিপিএম, সিপিআই, আরএসপি এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের নির্দিষ্ট প্রতীক আছে। মার্ক্সবাদী ফরওয়ার্ড ব্লক, আরসিপিআই বা বিপ্লবী বাংলা কংগ্রেসের মতো ছোট শরিকেরা সিপিএমের কাস্তে-হাতুড়ি প্রতীকে বহু বার ভোটে লড়েছে। বাম জমানায় সিপিএমের প্রতীকে জিতে ওই শরিক দলগুলির নেতারা মন্ত্রীও হয়েছেন। তবে কমিশনের খাতায় ওই প্রার্থীদের পরিচয় থাকত সিপিএমের প্রতিনিধি হিসেবে। এখন তেমনই আইএসএফ-কে পরিচিতি ‘ধার’ নিতে হচ্ছে আরএসএমপি-র কাছে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy