পার্থ চট্টোপাধ্যায়, শান্তিপ্রসাদ সিন্হা ও কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
এসএসসির গ্রুপ-সি কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং পাঁচ জন বর্তমান ও প্রাক্তন সরকারি কর্মীর নাম চার্জশিটে রাখার জন্য এখনও অনুমতি দেয়নি রাজ্য সরকার। এমনটাই দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই)-এর একটি সূত্রের। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অনুমতি চেয়ে আগেই রাজ্যের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছিল, যার উত্তর আসেনি এখনও।
দুর্নীতি দমন আইনের ১৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী, কোনও রাজ্য সরকারি কর্মী বা আধিকারিকের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়ার জন্য রাজ্যের অনুমতি প্রয়োজন। তদন্ত শুরুর সময় যাঁরা কোনও রকম সরকারি দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা চার্জশিট পেশের সময় অবসর নিয়ে নিলেও এই নিয়ম প্রযোজ্য। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, আইনের এই ধারার উপর ভিত্তি করেই এসএসসি গ্রুপ সি নিয়োগ মামলায় পার্থ-সহ ছ’জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়ার জন্য রাজ্যের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছিল সপ্তাহ দু’য়েক আগে। কিন্তু তার কোনও উত্তর আসেনি বলে সিবিআই সূত্রের দাবি। আইনজীবীদের একাংশের মতে, চার্জশিটে বিধায়ক পার্থর নাম রাখার জন্য বিধানসভার স্পিকারেরও অনুমতি নিতে হবে।
গ্রুপ-সি পদে শিক্ষাকর্মী নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শুক্রবার চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই। তাতে পার্থ ছাড়াও নাম রয়েছে ১৫ ডনের। নাম রয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিন্হা, সমরজিৎ আচার্য, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার, অশোককুমার সাহা, অ্যাডহক কমিটির সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন বেআইনি ভাবে নিযুক্ত বলে অভিযুক্ত প্রার্থী দীপঙ্কর ঘোষ, সুব্রত খাঁ, অক্ষয় মণি, সমরেশ মণ্ডল, সৌম্য কান্তি মৃধ্যা, অভিজিৎ দলুই, সুকান্ত মল্লিক, ইদ্রিশ আলি মোল্লা, অজিত বর, ফরিদ হোসেন কাসকার। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, এর মধ্যে পার্থ, শান্তিপ্রসাদ, অশোক, কল্যাণময়, সৌমিত্র এবং সমরজিতের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা নিয়ে রাজ্যের অনুমতি চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছিল।
এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে, সিবিআইয়ের দেওয়া ওই চার্জশিট আদালতে গ্রহণযোগ্য হবে কি না। এ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের এক আইনজীবী বলেন, ‘‘কোনও সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান অনুমতি না দিলেও চার্জশিট দাখিল করা যায়। তবে সে ক্ষেত্রে বিচারপ্রক্রিয়া থমকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’’
আবার উল্টো যুক্তি দিচ্ছেন কলকাতা হাই কোর্টের অন্য এক আইনজীবী। তাঁর কথায়, ‘‘এই বিষয়টি নির্ভর করে মামলার উপর। যে হেতু এই মামলায় সরাসরি বেআইনি চাকরির অভিযোগ অনেকাংশে প্রমাণিত, তাই এ ক্ষেত্রে কোনও অনুমতি প্রয়োজন নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy