Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
weather

ভরা মাঘ মাসে বাঘা ব্যাটিং শীতের

এ বছর পারদ পতনের আশায় শীতপ্রত্যাশী বাঙালির হাহাকার বোধ হয় একটু বেশিই শোনা গিয়েছিল। স্লগ ওভারের ঝোড়ো ব্যাটিং কি সেই ক্ষতে প্রলেপ দিতে পারবে?

মাঘ মাসের মাঝামাঝি শীতের দৌড়ে কালিম্পংকে টক্কর দিচ্ছে পানাগড়, পুরুলিয়া!

মাঘ মাসের মাঝামাঝি শীতের দৌড়ে কালিম্পংকে টক্কর দিচ্ছে পানাগড়, পুরুলিয়া! ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:৪৪
Share: Save:

শীতকালে কালিম্প‌ং পাহাড়ে জাঁকিয়ে ঠান্ডা — অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু মাঘ মাসের মাঝামাঝি শীতের দৌড়ে কালিম্পংকে টক্কর দিচ্ছে পানাগড়, পুরুলিয়া! এমনকি, কাঁথিতেও পারদ পতন পৌঁছে গিয়েছে কালিম্পঙের কাছাকাছি! উত্তরবঙ্গের তরাই-ডুয়ার্সেও হাড়কাঁপানো ঠান্ডা পড়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলেন, ‘‘আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এমন ঠান্ডা বজায় থাকবে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গেও। সোমবার তাপমাত্রা সামান্য কমতেও পারে।’’

আলিপুর হাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, রবিবার কালিম্পঙের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দক্ষিণবঙ্গের পানাগড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬.২ ডিগ্রি! পুরুলিয়া ৬.৭! পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে রাতের তাপমাত্রা নেমেছিল ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। কলকাতাতেও জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়েছে। মহানগরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শহরের উপকণ্ঠে দমদম এবং সল্টলেকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

হাওয়া অফিসের খবর, উত্তরে দার্জিলিঙে রাতের তাপমাত্রা নেমেছে ২.৪ ডিগ্রিতে। কোচবিহার ছাপিয়ে গিয়েছে কালিম্পংকে। সেখানে এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। জলপাইগুড়িতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা অবশ্য কলকাতায় সার্বিক ভাবে ‘বিরল’ নয়। ১৮৯৯ সালের ২০ জানুয়ারি কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছিল ৬.৭ ডিগ্রিতে। সেটাই সর্বকালের রেকর্ড। এমনকি, গত এক দশকেও জানুয়ারি মাসে ১২ ডিগ্রির নীচে তাপমাত্রা নেমেছে। কিন্তু এ বছর যে বিষয়টি লক্ষ্যণীয় তা হল জানুয়ারির শেষে এমন জাঁকিয়ে ঠান্ডা। গত দশ বছরে জানুয়ারির শেষ লগ্নে এমন ঠান্ডা দেখা যায়নি বললেই চলে। একমাত্র ব্যতিক্রম ২০১৬ সাল। সে বার ২৫ জানুয়ারি কলকাতার তাপমাত্রা নেমেছিল ১১.৩ ডিগ্রিতে। কিন্তু অনেকেই বলছেন, এ বার জানুয়ারি তো বটেই, আজ, সোমবার পারদ পতন হলে ফেব্রুয়ারিতেও রেকর্ড গড়ে ফেলতে পারে শীত!

কেন এমন ঠান্ডা? গণেশবাবু বলছেন, ‘‘মাঝেমধ্যে কয়েক দিন এমন ঠান্ডার দাপট দেখা যায়। তবে এ বার একটু বেশি জোরালো ধাক্কা দেখা যাচ্ছে।’’ আবহবিদদের ব্যাখ্যা, দুর্বল উত্তুরে হাওয়া এবং বঙ্গোপসাগর থেকে ঢুকে পড়া জোলো হাওয়ায় শীতের দাপট কমেছিল। কিন্তু শেষ লগ্নে উত্তুরে হাওয়ার পথ খুলে যেতেই জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়তে শুরু করেছে। অনেকেই বলছেন, অন্যান্য বছর প্রজাতন্ত্র দিবস থেকেই ধীরে ধীরে শীত কমতে থাকে। বাক্সবন্দি হতে থাকে শীতের পোশাক। এ বার জানুয়ারির শেষ রবিবারেও রাজ্যের পথেঘাটে মোটা সোয়েটার, জ্যাকেট, মাফলারের ছড়াছড়ি।

এ বছর পারদ পতনের আশায় শীতপ্রত্যাশী বাঙালির হাহাকার বোধ হয় একটু বেশিই শোনা গিয়েছিল। স্লগ ওভারের ঝোড়ো ব্যাটিং কি সেই ক্ষতে প্রলেপ দিতে পারবে?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

weather Winter
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE