'চাকরি প্রতিশ্রুতি কার্ড' নামক প্রচার কর্মসূচিতে মুকুল রায়, সৌমিত্র খাঁ। নিজস্ব চিত্র।
তাদেরই রাজত্বে দেশজুড়ে যখন কর্মসংস্থানের ছবি ক্রমশ ধূসর হচ্ছে, তখন পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এলে ৭৫ লক্ষ বেকারকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনী প্রচারে নামল বিজেপি। বিরোধীরা অবশ্য বিজেপি-র এই প্রচারকে নির্বাচনী ভাঁওতা বলে মনে করছে।
সামনেই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোট। সেই ভোটে রাজ্যের বেকার সমস্যাকে হাতিয়ার করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচারে নামছে বিজেপি। সেইমতো 'চাকরি প্রতিশ্রুতি কার্ড' নামক একটি প্রচার কর্মসূচি তৈরি করেছে রাজ্য বিজেপি। রবিবার বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায় এবং রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ ওই কার্ডটি প্রকাশ করেন। বাংলায় বিজেপি ক্ষমতায় এলে ৭৫ লক্ষ যুবককে চাকরি দেওয়া হবে বলে তারা জানিয়েছেন। সৌমিত্র খাঁ জানান, আমরা রাজ্যের ৭৮ হাজার বুথে ৭৫ লক্ষ যুবকের কাছে চাকরি প্রতিশ্রুতি কার্ড নিয়ে যাব। এর মাধ্যমে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে জনসংযোগ স্থাপন করব।
বিজেপির দাবি, 'চাকরি প্রতিশ্রুতি কার্ড' নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ৭৫ লক্ষ বেকার যুবকদের কাছে পৌঁছে যাবেন বিজেপি কর্মীরা। ওই কার্ডে চাকরি প্রার্থীদের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও পছন্দের কাজ নথিভুক্ত করা হবে। রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে আগামী ৫ বছরে ওই যুবকদের চাকরি দেওয়া হবে। তবে বিজেপির এই কর্মসূচি ঘিরে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বিভিন্ন মহলে। অনেকের প্রশ্ন, একটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় না এসেও কী ভাবে বেকারদের নাম নথিভুক্ত করতে পারে চাকরির জন্য? বেকারদের চাকরি দেওয়ার জন্য এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে নাম নথিভুক্ত করা যায় সরকারি ভাবে। এ ক্ষেত্রে বিজেপি তা অবলম্বন করবে কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে এ প্রসঙ্গে সৌমিত্রের দাবি, "পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন দু'কোটি মানুষকে চাকরি দেবেন। আমরা দেখতে চাই কত মানুষ চাকরি পেয়েছেন। তা জানা গেলেই রাজ্যের বর্তমান বেকারত্বের ছবিটা জানা যাবে।"
আরও পড়ুন: কনভয়ে হামলায় ‘লজ্জিত’ নড্ডার বাঙালি স্ত্রী, প্রচারে আসতে চান বঙ্গে
বিজেপির এই কর্মসূচির তীব্র সমালোচনা করেছে বিরোধী তৃণমূল, বাম ও কংগ্রেস। তৃণমূল নেতাদের দাবি, নরেন্দ্র মোদী বছরে ২ কোটি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেও, তা পূরণ করতে পারেননি। কিন্তু তৃণমূল জমানায় কেন্দ্রের তুলনায় এ রাজ্যে বেকারত্বের হার অনেক কম। দেশে বেকারত্বের হার ২৪ শতাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু এ রাজ্যে ৪০ শতাংশ বেকারত্ব কমেছে। বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায়, "তৃণমূল যেমন প্রতারণা করে, বিজেপিও একই রকম প্রতারণা করছে। মোদীজি কর্মসংস্থানের কথা বলে ফেল করেছেন, দিলীপ ঘোষ তাহলে পাশ করবেন নাকি! ভোটের জন্য অনৈতিক কাজ করা হচ্ছে। একই সুর শোনা যায় কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক মনোজ চক্রবর্তীর গলাতেও। তিনি বলেন, "সবটাই জালিয়াতি। নির্বাচনের আগে মানুষকে ভাঁওতা দেওয়া হচ্ছে। এতে মানুষ অপমানিত হচ্ছেন, অসম্মানিত হচ্ছেন।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy