Advertisement
৩০ মার্চ ২০২৩
BJP

আগুন যেন নিভে না যায়! দলবল নিয়ে সামনে সুনীল, পিছনে নড্ডা-শাহের নির্দেশ পাওয়া গেরুয়া পরিবার

লড়াই আর একা বাংলার বিজেপির নয়। নবান্ন অভিযানে ‘সাফল্য’ মেলার পরে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও সুকান্ত-শুভেন্দুদের পাশে থাকতে চায় পূর্ণ শক্তি দিয়ে। তার প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে।

কলকাতায় সুনীল। লক্ষ্য নবান্ন অভিযানের ‘আগুন’ কর্মীদের মনে জিইয়ে রাখা।

কলকাতায় সুনীল। লক্ষ্য নবান্ন অভিযানের ‘আগুন’ কর্মীদের মনে জিইয়ে রাখা। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৫:২৫
Share: Save:

নবান্ন অভিযানের রেশ রেখে যেতে হবে। দলের কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ‘তাণ্ডব’ চালানো কর্মীদের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার যেমন পদক্ষেপ করে চলেছে তেমনই বিজেপির পক্ষেও পাল্টা অভিযোগ ঘিরে রাজনীতি চালিয়ে যেতে হবে। এমনটাই চাইছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই মতোই দলবল নিয়ে কলকাতায় হাজির বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা সুনীল বনসল। শাহর ভরসার সেই নেতা রবিবার সকাল থেকেই নবান্ন অভিযানে অংশ নিয়ে আক্রান্ত কর্মী-নেতাদের সঙ্গে দেখা করছেন। রাজ্যের দায়িত্ব পাওয়া তথা বিহারের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মঙ্গল পাণ্ডে প্রথম বার বাংলার পর্যবেক্ষক হিসাবে কলকাতায় পা রেখেছেন রবিবার। একই ভাবে প্রথম বার এসেছেন নতুন সহ-পর্যবেক্ষক তথা রাঁচির মেয়র আশা লাকড়া। তাঁরাও রবিবার বিভিন্ন জায়গায় আক্রান্ত কর্মীদের বাড়িতে যাওয়ার কর্মসূচি নেন।

Advertisement

বিজেপির যা পরিকল্পনা সুনীল, মঙ্গল, আশা ছাড়া সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য রবি ও সোমবার রাজ্যের নেতাদের নিয়ে টানা বৈঠক করবেন কলকাতার ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস’ (আইসিসিআর)-এর সভাকক্ষে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু রাজ্য নেতাদেরই নয়, বিভিন্ন মোর্চা এবং সেলের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আলাদা আলাদা করে বসবেন ওই চার নেতা। সেখানে দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার-সহ বাংলার শীর্ষ নেতারাও উপস্থিত থাকবেন। দু’দিন ধরে প্রতিটি মোর্চা এবং সেল কেমন কাজ করছে তা পর্যালোচনার পাশাপাশি আগামী দিনের জন্য গাইডলাইনও ঠিক হবে।

আক্রান্ত কর্মীদের বাড়িতে নেতাদের যাওয়া থেকে বৈঠকের মূল লক্ষ্য নবান্ন অভিযানকে ঘিরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে যে আগুনের আঁচ পাওয়া গিয়েছে তা টিকিয়ে রাখা। এর জন্য যে সব কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশ, প্রশাসন ব্যবস্থা নিয়েছে তাঁদের পাশে দল পূর্ণ শক্তি দিয়ে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পাশাপাশি আক্রান্তদের পাশেও দল যে রয়েছে তা কর্মীদের বুঝিয়ে দেওয়াও লক্ষ্য। এটা ঠিক করতে অভিযান কর্মসূচির পরে পরেই নড্ডা পাঁচ সদস্যের দল তৈরি করে কলকাতায় পাঠান। রবিবারই সেই দল দিল্লিতে রিপোর্ট পেশ করতে পারে। অন্য দিকে, রাজ্য নেতৃত্বও আলাদা করে রিপোর্ট তৈরি করছেন। সব কিছু নিয়ে ‘শান্তিপূর্ণ’ মিছিলে ‘নিরস্ত্র’-দের উপরে কেন হামলা হল, তা নিয়ে কী ভাবে আন্দোলন ও আইনি লড়াই চালানো যায় তার প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছে বিজেপি।

নবান্ন অভিযান সফল হয়েছে বলে রাজ্য বিজেপি যে দাবি করছে তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। অভিযানের দিনেই বার বার সুকান্তকে ফোন করেন নড্ডা। জানা গিয়েছে, হাওড়া ময়দানে বিক্ষোভে বসে থাকা সুকান্ত অনেক সময় নড্ডার ফোনই ধরতে পারেননি। পরে কথা হলে নড্ডা সাফল্যের সার্টিফিকেট দিয়েছেন বলেও জানা যায়। বিজেপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীকে একই কারণে প্রশংসাসূচক ফোন করেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষ। আবার শাহর সঙ্গে কথা হয় বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে। গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, সব নেতাই সংশ্লিষ্টদের ফোনে জানিয়েছেন, রাজ্যকে সব রকমের সাহায্য করতে তৈরি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। একই সঙ্গে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যাতে টানা কর্মসূচির মধ্যে রেখে কর্মীদের চাঙ্গা রাখা হয়। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যে পাশে রয়েছেন তা বোঝাতে নড্ডার প্রতিনিধি দল পাঠানোই শুধু নয়, দিল্লিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় দফতর থেকে শুধুই বাংলার বিষয় নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকও করা হয়।

Advertisement

রাজ্য বিজেপির নেতারা আগেই জানিয়েছিলেন এই কর্মসূচির সাফল্যের পিছনে রয়েছে দলের ‘এক জানলা’ নীতি। সেই ‘জানলা’ সুনীল বনসলের নেতৃত্বেই যাতে আগামী লড়াইগুলি চালানো যায় সেই নির্দেশও পেয়েছে রাজ্য বিজেপি। সেই কারণে, ওড়িশা ও তেলঙ্গানার দায়িত্বও তাঁর কাঁধে থাকা সত্বেও সুনীল আগামী কিছু দিন বাংলায় বেশি সময় দেবেন। একই সঙ্গে তাঁর তিন সৈনিক, মঙ্গল, আশা এবং অমিত পূর্ণ সময় দিয়ে বাংলার কাজ দেখবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.