রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও)-র দফতরকে দ্রুত ‘স্বাধীন দফতর’ হিসাবে ঘোষণা করার নির্দেশ আগেই দিয়েছিল কমিশন। এ বার কলকাতায় সেই দফতর স্থানান্তরিত হতে পারে বলে কমিশন সূত্রে খবর। ইতিমধ্যে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে এই নিয়ে দিল্লি থেকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এখন কলকাতার স্ট্র্যান্ড রোডে বালমার লরি ভবনে রয়েছে রাজ্যের সিইও-র দফতর। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সরকারের দফতর রয়েছে, এমন কোনও ভবনে স্থানান্তরিত করা হতে পারে সেই দফতর। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, দফতরের কর্মীসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন যেখানে দফতর রয়েছে, সেখানে গাড়ি রাখার (পার্কিং) সমস্যা রয়েছে। তাই দফতর স্থানান্তরিত করার ভাবনাচিন্তা চলছে।
কমিশন সূত্রে খবর, এই রাজ্যে সামনেই ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা (এসআইআর) শুরু হবে। শুক্রবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ একটি সাংবাদিক বৈঠক করে জানান ইতিমধ্যেই বিএলও (বুথ স্তরের সরকারি আধিকারিক)-দের প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কমিশন সূত্রে খবর, পুজোর আগে সিইও-র দফতর স্থানান্তরিত করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। সিইও দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এই অফিসে জায়গার তুলনায় লোকসংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। এ ছাড়া গাড়ি পার্কিংয়ের সমস্যা রয়েছে। তাই বড় জায়গা নিয়ে অনেক দিন ধরেই ভাবনাচিন্তা চলছে।’’
এর আগে রাজ্যের সিইও-র দফতরকে দ্রুত ‘স্বাধীন দফতর’ হিসেবে ঘোষণা করার নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন। নবান্ন সূত্রের খবর, এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন চিঠি দিয়েছে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের অধস্তন সচিব এম আশুতোষ চিঠিতে জানিয়েছেন, সিইও-র দফতরের উপর বর্তমানে রাজ্যের অর্থ, স্বরাষ্ট্র এবং পার্বত্য অঞ্চল বিষয়ক দফতরের যে ‘অর্থনৈতিক এবং প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ’ রয়েছে, তার পরিবর্তন করতে হবে। কারণ, বর্তমান ব্যবস্থায় সিইও দফতরের প্রয়োজনীয় স্বশাসনের ক্ষমতা নেই। পাশাপাশি, রাজ্যের সঙ্গে সম্পর্কহীন সিইও দফতর গড়া এবং পৃথক প্রশিক্ষণ পরিকাঠামোর কথা বলা হয়েছে চিঠিতে। বর্তমান ব্যবস্থায় রাজ্যের সিইও দফতরের পর্যাপ্ত অর্থনৈতিক ক্ষমতা নেই বলেও নবান্নকে চিঠিতে জানিয়েছে কমিশন।
আরও পড়ুন:
পাশাপাশি জানানো হয়েছে, বর্তমানে রাজ্যের সিইও-র দফতরকে স্বরাষ্ট্র এবং পার্বত্য অঞ্চল বিষয়ক দফতরের প্রিন্সিপাল সচিব পর্যায়ের দফতরের ‘অধীনস্থ দফতর’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই ব্যবস্থার অবসান ঘটাতে হবে। অর্থাৎ, রাজ্যের সিইও পদাধিকারবলে অতিরিক্ত মুখ্যসচিব (এসিএস) পর্যায়ের আধিকারিক হলেও তিনি মুখ্যসচিব বা অন্য কোনও প্রিন্সিপাল সচিব পর্যায়ের আমলার নিয়ন্ত্রণে থাকবেন না। এ ছাড়া, পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে উপ, অতিরিক্ত এবং যুগ্ম সিইও-র চারটি পদ পূরণ করার বার্তা দেওয়া হয়েছে নবান্নকে।
প্রসঙ্গত, ১৯৫০ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী, কোনও রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) দফতর সংশ্লিষ্ট রাজ্যের অর্থ বা স্বরাষ্ট্র দফতরের অধীনে থাকে না। এটি একটি স্বতন্ত্র সাংবিধানিক সংস্থা, যা ভারতের নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে কাজ করে।