রাজ্যের ডিএ বা মহার্ঘ ভাতার মামলার এজলাস বদল হল সুপ্রিম কোর্টে। নতুন বেঞ্চে গেল ডিএ মামলা। বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে ডিএ মামলাটি তালিকাভুক্ত হয়েছে। তবে শুনানি নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। আগামী বুধবার দুপুর ২টোয় ওই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নতুন বেঞ্চে ডিএ মামলা তালিকার প্রায় শেষে রয়েছে। ক্রমতালিকায় মেনে শুনানি হলে আবার পিছিয়ে যেতে পারে ডিএ মামলার শুনানি।
২০২২ সালের ২৮ নভেম্বর রাজ্যের ডিএ মামলা প্রথম বার সুপ্রিম কোর্টে উঠেছিল। গত বছর ১ ডিসেম্বর মামলাটির শেষ বার শুনানি হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ নিয়ে বিস্তারিত শুনানি প্রয়োজন। সময় নিয়ে সব পক্ষের বক্তব্য শোনা হবে। তবে সময়ের অভাবে মামলাটির আর পূর্ণাঙ্গ শুনানি হয়ে ওঠেনি। আড়াই বছর ধরে প্রায় ১৭ বার মামলাটির শুনানি পিছিয়েছে। তার মধ্যে রাজ্য সরকারের আইনজীবীর অনুরোধ মেনে শুনানি কয়েক বার পিছিয়ে যায়। গত বুধবার সুপ্রিম কোর্টের ৫ নম্বর আদালত কক্ষে তালিকার প্রায় শীর্ষে ওই মামলার শুনানি ছিল। মামলাটি তালিকাভুক্ত ছিল বিচারপতি বিক্রম নাথ, বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চে। সে দিন রাজ্য সরকারের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আবেদন করেন, অন্য এজলাসে মামলার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। তাই ডিএ মামলাটি অন্য কোনও দিন শুনানি করা হোক।
রাজ্য সরকারের আইনজীবীর আর্জি মেনে শুনানি এক সপ্তাহ পিছিয়ে যায়। ১৪ মে দুপুর ২টোয় শুনানির দিন ধার্য করা হয়। রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের একাংশ আশা করছিলেন, এ বার হয়তো মামলার দ্রুত শুনানি শুরু হবে। কিন্তু নতুন তালিকা দেখে তাঁদের অনেকে হতাশ। দ্বিতীয় বার মামলাটির এজলাস পরিবর্তন করল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের নতুন তালিকা বলছে, নতুন বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে রাজ্যের ডিএ মামলা। মামলাটি ৫ নম্বর কোর্ট থেকে গিয়েছে ১৫ নম্বর কোর্টে। আগামী বুধবার বিচারপতি করোল এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে তালিকায় ৪০ নম্বরে রয়েছে মামলাটি। তবে শুনানি নিয়ে আশাবাদী রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের আইনজীবীরা। আইনজীবী বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘শুধু এজলাস পরিবর্তন হয়েছে। পূর্বের বেঞ্চে বিচারপতি করোল ছিলেন। নতুন বেঞ্চেও তিনি রয়েছেন। ফলে ১৪ মে দুপুরে শুনানি হবে।’’ একই মত আইনজীবী ফিরদৌস শামিমেরও। তিনি বলেন, ‘‘আশা করি ওই দিন শুনানি হবে। এর আগে পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য বার বার সময় নেওয়া হয়েছে। গত শুনানির দিন পিছিয়ে যাওয়া নিয়ে আমরা বিরোধিতা করেছিলাম। আদালত আমাদের আবেদন শুনেছে। ফলে আবার পিছিয়ে যেতে পারে এমনটা এখনই মনে করছি না।’’
আরও পড়ুন:
কেন্দ্রীয় হারে এবং বকেয়া ডিএ-র দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। ২০২২ সালের ২০ মে হাই কোর্ট রাজ্যকে কেন্দ্রের সমতুল ৩১ শতাংশ হারে ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। হাই কোর্টে জয়ী হয় রাজ্য সরকারি কর্মীদের কনফেডারেশন, ইউনিটি ফোরাম এবং সরকারি কর্মচারী পরিষদ। কিন্তু হাই কোর্টের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। ২০২২ সালের ৩ নভেম্বর মামলা দায়ের হয় শীর্ষ আদালতে। প্রথম শুনানি হয় সে বছরের ২৮ নভেম্বর। রাজ্যের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। অন্য দিকে, মামলাটি বিচারাধীন থাকা অবস্থায় কয়েক দফায় ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।