Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Supreme Court

ডিএ মামলার শুনানি ফের দীর্ঘ সময়ের জন্য পিছিয়ে গেল সুপ্রিম কোর্টে, বিষয়টি কবে শুনবে আদালত?

সুপ্রিম কোর্টে আবার পিছিয়ে গেল মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) মামলার শুনানি। ২০২২ সালের ৩ নভেম্বরের পর শীর্ষ আদালতে এই নিয়ে দশম বারের জন্য পিছিয়ে গেল ডিএ মামলার শুনানি।

সুপ্রিম কোর্ট।

সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৩ ১৩:২৯
Share: Save:

সুপ্রিম কোর্টে আবার পিছিয়ে গেল মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) মামলার শুনানি। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে ফের এই মামলাটি শুনবে শীর্ষ আদালত। এই নিয়ে দশম বারের জন্য শীর্ষ আদালতে ডিএ মামলার শুনানি পিছিয়ে গেল।

শুক্রবার সওয়াল-জবাব পর্বে রাজ্যের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আদালতে জানান, এর আগে আদালত জানিয়েছিল, বিস্তারিত শুনানির জন্য অন্য কোনও দিন নির্ধারিত করা হবে। অন্য কোনও দিন এই মামলার শুনানি হোক। কর্মচারী সংগঠন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং ফিরদৌস শামিম জানান, বার বার শুনানি পিছিয়ে যাচ্ছে। যে কোনও একটি দিন শুনানির জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া হোক। বিজেপির কর্মচারী সংগঠন সরকারি কর্মচারী পরিষদের আইনজীবী পিএস পাটোয়ালির বক্তব্য, সরকারি কর্মচারীদের মামলা। তাঁরা ডিএ পাচ্ছেন না। হাই কোর্ট চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে। শুনানি বার বার পিছিয়ে গেলে সমস্যা বাড়বে।

সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি হৃষিকেশ রায় এবং সঞ্জয় করোলের বেঞ্চ জানায়, আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে মামলাটির শুনানি হবে।

এর আগে কলকাতা হাই কোর্ট মামলাকারী রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের পক্ষে রায় দেওয়ার পরে সুপ্রিম কোর্টে যায় সরকার। ২০২২ সালের ৩ নভেম্বর মামলা দায়ের হয় শীর্ষ আদালতে। প্রথম শুনানি হয় ২৮ নভেম্বর। রাজ্যের পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী মুকুল রোহতগি। সেই দিনেই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয় পরবর্তী শুনানি ৫ ডিসেম্বরেই মামলা শেষ হবে। পরে রাজ্য আইনজীবী বদল করে অভিষেক মনু সিঙঘভিকে দায়িত্ব দেয়। এর পর থেকে একের পর এক তারিখ দেওয়া হলেও নানা কারণে শুনানি পিছিয়ে গিয়েছে। গত ১৪ জুলাইয়ে নবম বার পিছিয়ে পরবর্তী শুনানির তারিখ দেওয়া হয় ৩ নভেম্বর।

২০২২ সালের ২০ মে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের ৩১ শতাংশ হারে ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল রাজ্য। রাজ্যের যুক্তি ছিল, হাই কোর্টের সিদ্ধান্ত মেনে ডিএ দিতে হলে প্রায় ৪১ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। যা রাজ্য সরকারের পক্ষে এই মুহূর্তে বহন করা কঠিন। প্রসঙ্গত, হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বকেয়া ডিএ না-দেওয়ার জন্য নবান্নের বিরুদ্ধে একটি আদালত অবমাননার মামলাও হয়। তবে সেটির শুনানি আপাতত হাই কোর্টে স্থগিত রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের অনুরোধে।

সম্প্রতি আরও চার শতাংশ হারে ডিএ দেওয়ার ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। অক্টোবরে ঘোষণা হলেও নতুন হারে ডিএ কার্যকর হবে জুলাই মাস থেকেই। এর আগে ২৪ মার্চের ঘোষণায় ১ জানুয়ারি থেকে মিলেছিল বর্ধিত ডিএ। তাতে ডিএ বেড়ে হয়েছিল ৪২ শতাংশ। এখন তা চার শতাংশ বেড়ে হল ৪৬ শতাংশ। আর তাতে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের ফারাক বেড়ে দাঁড়ায় ৪০ শতাংশ।

বাংলায় ২০২০ সালে রাজ্য ষষ্ঠ বেতন কমিশন চালু হওয়ার পরে ৩ শতাংশ ডিএ বেড়েছিল। এর পরে চলতি বছর বাজেটের সময়ে আরও ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এই সময়ের মধ্যে দফায় দফায় ডিএ বাড়িয়েছে কেন্দ্রও।

কেন্দ্রীয় হারে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বেশ কিছু সরকারি কর্মচারী সংগঠন। এই দাবিতে ১০ এবং ১১ অক্টোবর কর্মবিরতি পালন করেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সদস্যেরা। কর্মবিরতি শেষে সংগঠনের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ দাবি করেন, তাঁদের কর্মসূচি পুরোপুরি সফল হয়েছে। পুজোর আগে যে উদ্দেশ্য নিয়ে তাঁরা কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন, তা সফল হয়েছে। পাল্টা তৃণমূল সমর্থিত সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন দাবি করে যে, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ডাকা কর্মবিরতি ব্যর্থ করে সরকারি কর্মচারীরা কাজে যোগ দিয়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

DA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE