Advertisement
E-Paper

ফরাক্কা রেকর্ড জল ছাড়লেই বাড়বে বন্যা

পরিস্থিতি আরও বিগড়োতে পারে মালদহের ভূতনির চরে। এ দিন উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে শিলিগুড়ির বৈঠকে এই আশঙ্কাই প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:১৯
জলের তোড়ে ভিত ভেঙে উল্টে গিয়েছিল কংসাবতীর বাঁধের পাশে থাকা  দোতলা পাকা বাড়ি। জল কিছুটা নামার পরে রবিবার সেই বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আক্ষেপ।পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার ভরতপুরের বীরসিংপুরে।

জলের তোড়ে ভিত ভেঙে উল্টে গিয়েছিল কংসাবতীর বাঁধের পাশে থাকা দোতলা পাকা বাড়ি। জল কিছুটা নামার পরে রবিবার সেই বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আক্ষেপ।পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার ভরতপুরের বীরসিংপুরে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

নেপাল থেকে ছাড়া জল এবং সেখানে ভারী বৃষ্টিতে উদ্বেগে পশ্চিমবঙ্গ। নেপাল থেকে কোশী নদীর জল বিহার হয়ে মেশার কথা মুর্শিদাবাদে গঙ্গা ও পদ্মায়। রবিবার গভীর রাতে ফরাক্কা ব্যারাজ থেকে ১৯.৯ লক্ষ কিউসেক হারে (রেকর্ড পরিমাণ) জল ছাড়ার কথা। সেচ বিভাগের আশঙ্কা, এর জেরে মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জ, সুতি, লালগোলার অনেক এলাকা ভাসতে পারে। ভাঙনের সম্ভাবনাও বাড়বে।

পরিস্থিতি আরও বিগড়োতে পারে মালদহের ভূতনির চরে। এ দিন উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে শিলিগুড়ির বৈঠকে এই আশঙ্কাই প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্র ফরাক্কা ব্যারাজে ‘ড্রেজ়িং’ না করায় নেপালের জল বাংলায় এলে বিপত্তি বাধাতে পারে বলে অভিযোগ তাঁর। যদিও হুগলির খানাকুলে এ দিনই ত্রাণ বিলি করতে গিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের পাল্টা অভিযোগ, রাজ্যের নিজস্ব জলাধারগুলিতেও গত ১০ বছরে কোথাও পলি তোলা হয়নি।

ফরাক্কা ব্যারাজ তৈরির পরে ২০০৬ সালে সর্বোচ্চ জল ছাড়া হয়েছিল ১৮.৮৫ লক্ষ কিউসেক হারে। রঘুনাথগঞ্জে সেচ বিভাগের এগ্‌জ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় সিংহ বলেন, “বর্তমানে গঙ্গায় জল বিপদসীমার উপরে থাকলেও স্থিতাবস্থা রয়েছে। নেপাল ও বিহারের জল আসায় গঙ্গা ও পদ্মার পারে ভাঙন ও প্লাবনের আশঙ্কা রয়েছে। তাই সতর্ক করা হয়েছে নদীপারের বাসিন্দাদের।’’

প্রশাসন সূত্রের খবর, নেপালের মেচি নদীর জলে ও ভারী বৃষ্টিতে মালদহে ফুলহার নদীর পাশাপাশি বেড়েছে টাঙন, পুনর্ভবা, মহানন্দার জলও। শনিবার মানিকচক ব্লক অফিসে রাতভর বৈঠক করেন জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া, এসপি প্রদীপকুমার যাদব ও সেচ আধিকারিকেরা। গঙ্গা ও ফুলহার নদীপারের ভূতনি, কালিয়াচক ৩ ব্লক, রতুয়া, হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরতে বলে প্রচার করে প্রশাসন। দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর ও বংশীহারিতে পুনর্ভবা এবং টাঙনের জল বিপদসীমার উপরে বইছে। উত্তর দিনাজপুরের রাধিকাপুরেও টাঙনে বেড়েছে জলস্তর।

রবিবার ভাঙন দেখা দেয় কোচবিহারের তুফানগঞ্জের জালধোঁয়া এলাকার রায়ডাক (২) নদীর পারে। দিনহাটার ধরলা নদীতে জল বাড়ায় ভাঙন দরিবস এলাকাতেও। মুখ্যমন্ত্রী মেখলিগঞ্জ, দিনহাটা, সিতাই, তুফানগঞ্জের পরিস্থিতির দিকে আধিকারিকদের নজর দিতে বলেন। সেচ দফতর জানিয়েছে, আলিপুরদুয়ারের সব নদীর জলই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। তবে টানা বৃষ্টিতে ধস নামছে বক্সা পাহাড়ে। মেখলিগঞ্জ থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত অসংরক্ষিত এলাকায় ‘রেড অ্যালার্ট’ ছাড়া, আর কোনও সর্তকবার্তা নেই তিস্তায়। কমেছে গজলডোবা থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ।

পশ্চিম মেদিনীপুরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। তবে ঘাটাল শহরের একাংশ এবং ঘাটাল ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। ডেবরাতে জল-যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মেলেনি, ত্রাণের চাহিদাও মেটেনি বলে অভিযোগ। এ দিন ডেবরার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত খাজুরি এবং দাসপুরে ত্রাণ বিলি করেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত। খাজুরিতে ত্রাণের পরিমাণ নিয়ে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসীর একাংশ। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার দু’জায়গায় বেআইনি নির্মাণ ভেঙে বন্ধ ‘স্লুস গেট’ চালু করা হয়।

মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে এ দিন ২৬ হাজার কিউসেক হারে জল ছেড়েছে ডিভিসি, যা শনিবারের তুলনায় কম। তবে সেচ দফতর দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার হার কিছুটা বাড়িয়ে ৪৪,৯৫০ কিউসেক করেছে।

flood West Bengal farakka
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy