Advertisement
E-Paper

মারের মুখেও মনোনয়ন, মারমুখী আক্রান্ত পুলিশও

শাসক দলের হামলার মুখে আরও মাত্রা বাড়ল বিরোধীদের প্রতিরোধের। সেই সঙ্গেই রাজ্যের কিছু জায়গায় ঈষৎ সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গেল পুলিশকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:০৯
কাঁদানে-গ্যাস: চোপড়ায় গোলমাল থামানোর চেষ্টা। নিজস্ব চিত্র

কাঁদানে-গ্যাস: চোপড়ায় গোলমাল থামানোর চেষ্টা। নিজস্ব চিত্র

শাসক দলের হামলার মুখে আরও মাত্রা বাড়ল বিরোধীদের প্রতিরোধের। সেই সঙ্গেই রাজ্যের কিছু জায়গায় ঈষৎ সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গেল পুলিশকে।

উত্তরবঙ্গের চোপড়ায় মনোনয়ন ঘিরে শাসক ও বিরোধীর সংঘর্ষ থামাতে বৃহস্পতিবার লাঠি ও কাঁদানে গ্যাস চালিয়েছে পুলিশ। ভাঙড়-২ ব্লক দফতরে তৃণমূলেরই দুই গোষ্ঠীর কোন্দল থামাতে লাঠি চালাতে দেখা গিয়েছে পুলিশকে। মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ায় কংগ্রেসের দফতর থেকে সাতটি পিস্তল উদ্ধার করেছে পুলিশ। আবার কিছু জায়গায় হামলার হাত থেকে রেহাই পাননি পুলিশকর্মীরাও। যেমন, পুলিশের সামনেই রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল আলিপুরদুয়ার-১ বিডিও দফতর সংলগ্ন এলাকা। বিজেপি ও তৃণমূলের গোলমালে জখম হয়েছেন শচীন্দ্র বাসুনিয়া নামে এক এসআই। দক্ষিণ ২৪ পরগনার নোদাখালিতে পুলিশের গাড়ি ঘিরে সিপিএমের বিক্ষোভ ও ভাঙচুরে আহত হয়েছেন চালক। ইটাহারে বিডিও দফতরে দিনভর মারপিট, ভাঙচুরের জেরে পুলিশের এসআই শিবনাথ বর্মণের মাথা ফেটেছে।

মার এবং প্রতিরোধের মধ্যেই সামান্য বেড়েছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সংখ্যা। নবান্নের পরিসংখ্যান, এখনও বুধবার পর্যন্ত তৃণমূল যেখানে ৫,৬৪৯টি মনোনয়ন জমা দিয়েছে, সেখানে বিরোধীরা দিয়েছে ৬,৬৩৮টি। এই তথ্য দেখিয়ে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ফের প্রশ্ন তুলেছেন, বিরোধীদের অভিযোগ সত্যি হলে এত মনোনয়ন তারা জমা দিল কী ভাবে? বিমান বসু, দিলীপ ঘোষেদের পাল্টা প্রশ্ন, বাম, কংগ্রেস ও বিজেপি এবং আরও কিছু ছোট দল— সকলকে ধরলে বিরোধীদের প্রার্থীর সংখ্যা তো তৃণমূলের চেয়ে বেশি হবেই! স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে তৃণমূলের চেয়ে অন্তত তিন গুণ বেশি হওয়ার কথা বিরোধীদের মনোনয়ন!

বিরোধীরা লাগাতার রাজ্য নির্বাচন কমিশনে দরবার করছে দেখে এ দিন এক ঝাঁক মন্ত্রীকে নিয়ে সেখানে গিয়েছিল শাসক দল। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার এ কে সিংহের সঙ্গে দেখা করার পরে পার্থবাবু বলেন, ‘‘নানা ভাবে বিক্ষোভ, অভিযোগ জানিয়ে কমিশনকে চাপ দেওয়া হচ্ছে! নাগাড়ে চাপ দিয়ে কমিশনকে দুর্বল করাই বিরোধীদের লক্ষ্য!’’

বামফ্রন্টের শরিক এবং তার বাইরে পিডিএস, এসইউসি, সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের মতো ছোট শক্তি মিলে ১৭টি দল আজ, শুক্রবার কমিশনের সামনে গণ-ধর্নার ডাক দিয়েছে। বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমানবাবু এ দিন বলেন, ‘‘জেলায় জেলায় আমাদের প্রার্থী ও কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন। মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হবে না বলে এমন আক্রমণ কোনও নির্বাচনে হয়নি। গণতন্ত্রের সমাধি রচনা করা হচ্ছে!’’

নলহাটিতে সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ রামচন্দ্র ডোমের মাথা ফেটেছে হামলায়। রক্তাক্ত শরীরে রামচন্দ্রবাবু বলেছেন, ‘‘তৃণমূলের হিংস্র আক্রমণের পরেও আমাদের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে ঢুকেছেন। জোটবদ্ধ মানুষের কাছে বোমা, মাস্কেট ফিকে হয়ে যায়!’’ সোনামুখী, ছাতনা, গঙ্গাজলঘাটি, ইঁদপুর, জগৎবল্লভপুর, মালবাজার, তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক, হাঁসখালি, শান্তিপুর, রানাঘাট-২, সামশেরগঞ্জের মতো বহু জায়গাতেই আক্রান্ত হয়েছে বামেরা। সোনামুখীর সিপিএম বিধায়ক অজিত রায়ের উপরে হামলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। উত্তর দিনাজপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদের মতো বেশ কিছু জেলায় আক্রান্ত হয়েছে বিজেপিও।

Panchayat Election 2018 Nomination Opposition TMC BJP Congress CPM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy