Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকের পর এ বার প্রশ্ন ফাঁস স্নাতকেও!

মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের পরে প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে শোরগোল এখনও থামেনি। তার মধ্যেই প্রশ্নপত্র-বিভ্রাট এ বার স্নাতক বাণিজ্য শাখার পার্ট-৩ পরীক্ষায়। সেই ঘটনায় বিতর্কে জড়িয়েছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:২২
Share: Save:

মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের পরে প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে শোরগোল এখনও থামেনি। তার মধ্যেই প্রশ্নপত্র-বিভ্রাট এ বার স্নাতক বাণিজ্য শাখার পার্ট-৩ পরীক্ষায়। সেই ঘটনায় বিতর্কে জড়িয়েছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।

মাধ্যমিকে এক প্রধান শিক্ষক প্রশ্নপত্র আগেভাগে খুলে ফেলেছেন বলে অভিযোগ ওঠায় তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছিল। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, এ বারেও সমস্যার মূলে আছে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট-বিভ্রাট। সেই সঙ্গে তারিখ-বিভ্রাটও। বৃহস্পতিবার বেলা ২টো থেকে বাণিজ্য শাখার ‘কর্পোরেট অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টিং’ পরীক্ষা ছিল। আর ‘কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন ইন বিজনেস’-এর পরীক্ষা হওয়ার কথা ১৯ এপ্রিল। এ দিন প্রতিটি কলেজই নিকটবর্তী থানা থেকে ১২ এপ্রিল লেখা প্রশ্নপত্রের প্যাকেট নিয়ে আসে পরীক্ষা কেন্দ্রে। পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র দেওয়া শুরুও হয়ে যায়। তখন হঠাৎ দেখা যায়, সেগুলি ১৯ এপ্রিলের ‘কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন ইন বিজনেস’-এর প্রশ্নপত্র! তড়িঘড়ি প্রশ্নপত্র ফেরত নেওয়া হয়। যোগাযোগ করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে। তত ক্ষণে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে।

হুগলির একটি কলেজের অধ্যক্ষ জানান, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জানানো হয়, প্যাকেটের উপরে তারিখ লেখার সময়ে ভুল হয়ে গিয়েছে। ১২ এপ্রিলের প্যাকেটের ভিতরে ঢুকে গিয়েছে ১৯ এপ্রিলের পরীক্ষার প্রশ্ন। আর ১২ এপ্রিলের প্রশ্নপত্র রয়েছে ১৯ এপ্রিলের প্যাকেটে। কর্তৃপক্ষের দাবি, পরে প্রশ্নপত্র যাচাই করে ফের ‘কর্পোরেট আকাউন্টিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টিং’-এর প্রশ্ন পাঠানো হয় থানায়। বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রের কয়েক জন জানান, তাঁরা তড়িঘড়ি চলে যান সংশ্লিষ্ট থানায়। সেখান থেকে ‘১৯ এপ্রিল লেখা’ প্যাকেট (যাতে ছিল ১২ তারিখের প্রশ্ন) থেকে প্রশ্নপত্র নিয়ে শুরু হয় পরীক্ষা। এই বিভ্রাটের জেরে কোথাও ৪০ মিনিট, কোথাও কোথাও এক ঘণ্টা পরে পরীক্ষা শুরু হয়। স্নাতকের চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষায় এমন ঘটনায় তাজ্জব শিক্ষক ও পরীক্ষার্থীরা।

প্রশ্ন উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী পদক্ষেপের ব্যাপারেও। কয়েকটি কলেজের অধ্যক্ষেরা জানান, দ্রুত কলেজে প্রশ্নপত্র পৌঁছে দেওয়ার জন্য নতুন প্রশ্নপত্র ই-মেল করে পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয়। অর্থাৎ পরীক্ষা শুরুর আগেই সেই প্রশ্নপত্র খোলা হয়েছে। এটাও বিভ্রান্তি বলে মত শিক্ষা শিবিরের। বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ অবশ্য ই-মেলে প্রশ্নপত্র পাঠানোর অভিযোগ মানতে চাননি।

আরও পড়ুন:

সন্ত্রাসে ‘লাভ’ হয় না, এটাই অতীতের শিক্ষা

শিক্ষা সূত্রের খবর, এ দিন ৩৫টি কেন্দ্রে অন্তত ১৫০ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। তাঁরা এই হয়রানির শিকার হন। বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রশ্নপত্রের প্যাকেটের উপরে তারিখ সাঁটার ভুলেই এই বিভ্রাট। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক অনিন্দ্যজ্যোতি পাল জানান, বিষয়টি উপাচার্যকে জানানো হয়েছে। তিনি তদন্ত করতে বলেছেন। ১৯ এপ্রিলের যে-প্রশ্নপত্রটি এ দিন খোলা হয়েছে, সেটি বাতিল করা হচ্ছে। নতুন প্রশ্নে সে-দিন পরীক্ষা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE