Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
State News

মনোনয়ন ঘিরে উত্তপ্ত সন্দেশখালি, চলল গুলি, বোমা

ন্যাজাট থানা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রাতে হঠাৎই এলাকার সমস্ত ঘরে আলো নিভে যায়। অভিযোগ, এলাকার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেয় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা।

চলছে পথ অবরোধ। —নিজস্ব চিত্র।

চলছে পথ অবরোধ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সন্দেশখালি শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৮ ১০:১৮
Share: Save:

পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজ্য জুড়ে অশান্তি অব্যাহত। এ বার উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি। বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দেওয়া ঠেকাতে চলল বোমা-গুলি-লুঠপাট-ভাঙচুর। অভিযোগের তির শাসক দলের নেতা-কর্মীদের দিকে। যদিও সে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।

সন্ত্রাসের প্রতিবাদে বুধবার ভোর থেকেই সন্দেশখালিতে পথ অবরোধ শুরু করেন স্থানীয় আদিবাসী মহিলারা। কোনও রাজনৈতিক দলের ছাতার তলায় না হলেও মিছিল করে ঝাঁটা-প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দিতে দিতে এলাকায় জমায়েত হন তাঁরা। তৃণমূলের দাবি, এই অবরোধের পিছনে মদত রয়েছে এলাকার সিপিএম এবং বিজেপি নেতৃত্বের। অবরোধকারী মহিলাদের দাবি, স্থানীয় তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের নেতৃত্বেই হামলা চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। পরিস্থিতি সামলাতে বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে এলাকায় পৌঁছেছেন সন্দেশখালির এসডিপিও আশিস মৌর্য। তবে হামলার প্রতিকার চেয়ে অবরোধে অনড় ওই মহিলারা।

ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার রাত ৮টা নাগাদ। সন্দেশখালির ১ নম্বর ব্লকের মেটিয়াখালিতে। ন্যাজাট থানা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রাতে হঠাৎই এলাকার সমস্ত ঘরে আলো নিভে যায়। অভিযোগ, এলাকার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেয় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। অন্ধকারে সুযোগে ঘরে ঢুকে পড়ে তারা। এর পর চলে বেধড়ক মারধর। ঠিক কী হয়েছে বোঝার আগেই ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় জিনিসপত্র। এ ভাবেই একের পর এক ঘরে ঢুকে ভাঙচুর চালাতে শুরু করে ওই দুষ্কৃতীরা। চলে যথেচ্ছ মারধর এবং লুঠপাট। দুষ্কৃতীদের মারের হাত থেকে রেহাই পায়নি স্কুল পড়ুয়ারাও। ভাঙচুর করা হয় ৩টি গাড়ি। চালানো হয় গুলি। এর পর একাধিক বোমার আওয়াজে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। বোমার ঘায়ে অল্পবিস্তর আহত হয়েছেন চার জন বাসিন্দা। সন্দেশখালি ছাড়াও ভাঙচুর চালানো হয় হাসনাবাদের ভেড়িয়া চৌমাথায় সিপিএম এবং বিজেপি পার্টি অফিস। ভেঙে দেওয়া হয় কাঠের আসবাবপত্র। তছনছ করা হয় পার্টি অফিসের জিনিসপত্রও।

আরও পড়ুন
বাড়ছে হামলা, পাল্টা মার বিজেপিরও

ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বিরোধী দলের পার্টি অফিসের আসবাবপত্র। —নিজস্ব চিত্র।

এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের নেতৃত্বেই হামলা চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। এ দিনের অবরোধে শাহজাহানের গ্রেফতারের দাবিও ওঠে। তবে এ সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছে শাসক দল। স্থানীয় তৃণমূল নেতা ফিরোজ কামাল গাজি ওরফে বাবু মাস্টারের কথায়, “এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই।” বরং তাঁর পাল্টা দাবি, “বামপন্থী লোকজনই এ সব ঘটিয়েছে।”

আরও পড়ুন
মনোনয়নে অস্ত্রের খোঁচা, জখম বিজেপি নেতা

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। —নিজস্ব চিত্র।

ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিজেপি নেতারা। স্থানীয় নেতা হাজারি লাল সরকারের মন্তব্য, “পঞ্চায়েত ভোটে আমাদের দাঁড়াতে দেবে না তৃণমূল। তাই এ সব ঘটিয়েছে ওরা।” সিপিএমের সদস্য শর্মিলা সর্দার বলেন, “গত কাল রাতে নিজের দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরছিলাম। হঠাৎ এলাকায় সমস্ত আলো চলে যায়। এর পর সেই অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে চলে ভাঙচুর-লুঠপাট-বোমা-গুলি।”​

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE