Advertisement
E-Paper

সেতু দেখভালে রাজ্যের সঙ্গে চুক্তি চাইছে রেল

রেল মন্ত্রকের এই প্রস্তাব মেনে নিয়েছে রাজ্যের পূর্ত দফতর। তবে এই নিয়ে চুক্তি সইয়ের আগে রাজ্যের সব রেলসেতুর স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য যৌথ পরিদর্শন করতে রেল ও রাজ্য সরকার উভয়েই রাজি হয়েছে।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:০৯

মাঝেরহাট রেলসেতু ভেঙে পড়ার পরে রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে রেল এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে ব্যাপক টানাপড়েন হয়েছিল। এই ধরনের দুর্ঘটনায় প্রায়ই তা হয়ে থাকে। সেই সম্ভাবনা কমাতে রেলসেতু (আরওবি)-র রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রাজ্য‌ের সঙ্গে নির্দিষ্ট চুক্তি করার দাবি তুলল রেল মন্ত্রক। সেই সঙ্গে রেলসেতুগুলির নীচে দখলদার তুলতে রাজ্যের সাহায্য চেয়েছে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেল। চুক্তি হলে কোনও রেলসেতু ভেঙে পড়লে কার রক্ষণাবেক্ষণের গাফিলতিতে ভেঙে পড়েছে তা নিয়ে চাপান-উতোরের সুযোগ থাকবে না বলে মনে করে রেল।

রেল মন্ত্রকের এই প্রস্তাব মেনে নিয়েছে রাজ্যের পূর্ত দফতর। তবে এই নিয়ে চুক্তি সইয়ের আগে রাজ্যের সব রেলসেতুর স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য যৌথ পরিদর্শন করতে রেল ও রাজ্য সরকার উভয়েই রাজি হয়েছে।

নবান্ন সূত্রের খবর, মাঝেরহাটে সেতুভঙ্গের পরে রেলের দাবি ছিল, ওখানে রেললাইনের ঠিক উপরের অংশটি রেলের তরফে দেখাশোনা করা হত। সেই অংশ ভেঙে পড়েনি। যে-অংশ ভেঙে পড়েছে, সেটির দায়িত্ব ছিল রাজ্যের হাতে। মাঝেরহাটে রেকর্ড সময়ে ফের সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। কিন্তু রাজ্যের আরও কিছু রেলসেতু নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় পূর্ত দফতর রেলের সঙ্গে যৌথ পরিদর্শনের প্রস্তাব দেয় নবান্ন।

ফেব্রুয়ারির শেষে পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে রেল ও পূর্তকর্তাদের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে পূর্তমন্ত্রী রেলকর্তাদের জানান, যাত্রী নিরাপত্তার খাতিরে বছরে অন্তত চার বার রেলসেতুগুলির পরিদর্শন জরুরি। সে-কথা মাথায় রেখে তিন মাসের মধ্যে সব সেতু পরিদর্শন করার সিদ্ধান্ত হয়।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

রেল সূত্রের খবর, কয়েকটি ডিভিশনে সেতুর স্বাস্থ্যপরীক্ষার কাজ শুরু হলেও আর্থিক বছরের শেষে তাতে কিছুটা ঢিলেমি হয়েছে। নির্বাচন ঘোষণার পরে সেই কাজ আর হয়নি। পূর্তমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, পরিদর্শনের পরে যে-সব ক্ষেত্রে গাফিলতি দেখা যাবে, সেখানে পূর্ত ও রেল নিজেদের দায়িত্ব অনুযায়ী দ্রুততার সঙ্গে তার মেরামতির কাজ সারবে। নবান্ন বা রেল কোনও তরফেই এমন মেরামতির কাজ হয়েছে বলে কর্তারা অবশ্য মনে করতে পারেননি। ঠিক হয়েছে, সমন্বয় বাড়াতে দু’তরফে এক জন করে নোডাল অফিসার রাখা হবে। রেলসেতু নিয়ে সমস্যা হলে তা মেটানো হবে তাঁদের মাধ্যমেই। এক বা একাধিক ভ্রাম্যমাণ সেতু পরিদর্শন শাখা গড়া হবে, মই কেনা হবে।

রেলসেতুর নিরাপত্তার প্রশ্নে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কর্তারা জবরদখলের প্রশ্নটি তোলেন। তাঁদের অভিযোগ, প্রায় প্রতিটি রেলসেতুর নীচের অংশ এবং আশপাশের এলাকা দখল হয়ে গিয়েছে। তা সরানোর জন্য বারবার রাজ্য প্রশাসনকে অনুরোধ করা হলেও কোনও সহযোগিতা মেলেনি। রাজ্য দখলদার সরাতে সরাসরি কোনও আশ্বাস দেয়নি। নিরাপত্তার প্রশ্নে প্রয়োজন হলে ধাপে ধাপে দখলদার উচ্ছেদের কথা ভেবে দেখার আশ্বাস দিয়েছে তারা।

রেলের বক্তব্য, রেলসেতুর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রাজ্যকে নির্দিষ্ট দায়িত্ব নিতে হবে। সেই জন্য চুক্তি করা হোক। তাতেই বলা থাকবে, রেলসেতুর ক্ষেত্রে রাজ্যের দায়িত্ব কতটা। রেলকর্তাদের মতে, সেতুর নির্মাণ-খরচের অর্ধেক এখন রাজ্যকে বহন করতে হয়। অ্যাপ্রোচ রোডের জমিও জোগাড় করে দিতে হয়। কিন্তু সেতু নির্মাণ হয়ে গেলে তার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সমন্বয় রাখে না রাজ্য। চুক্তি হলে সেই সমস্যা
মিটে যেতে পারে। পূর্তমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ঠিক হয়েছে, যাত্রী নিরাপত্তার স্বার্থে নবান্ন চুক্তি করে সেই দায়িত্ব নেবে।

Rail Bridge Administration
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy