Advertisement
E-Paper

‘আন্দোলনে লক্ষ্মণরেখা থাকা উচিত’! চাকরিহারাদের বিক্ষোভ নিয়ে মুখ খুলে ‘বহিরাগতদেরও’ নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা

বৃহস্পতিবার বিকাশ ভবনে চাকরিহারাদের অবস্থানে ধস্তাধস্তির পরিস্থিতি তৈরি হয়। আন্দোলনকারীদের উপর লাঠিচার্জের অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, সরকারি কর্মীদের কাজে বাধাদান-সহ একাধিক অভিযোগ আনা হয় আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার পর এই প্রথম বার মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২৫ ১৪:৫২
While extending solidarity, CM Mamata Banerjee says many outsiders has overtaken SSC jobless teachers’ protest, says a limit should be maintained while protesting

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

উত্তরবঙ্গ সফরের আগে বিকাশ ভবনে চাকরিহারা শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, আন্দোলনের বিপক্ষে নই। কিন্তু আন্দোলনেরও একটি লক্ষ্মণরেখা থাকা উচিত। পাশাপাশি, শিক্ষকদের আন্দোলনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক শক্তি উস্কানি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ তুললেন তিনি। বিকাশ ভবনে চাকরিহারাদের ঘেরাও অবস্থানে পুলিশের লাঠিচার্জের পর এই প্রথম তা নিয়ে মন্তব্য করতে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রীকে।

সোমবার সকালে মমতা বলেন, ‘‘আন্দোলনকারীদের জন্য আমার যথেষ্ট সহানুভূতি ছিল, আছে এবং থাকবে। কিন্তু আদালতেরও কিছু বাধ্যবাধকতা থাকে। আদালত কোনও সিদ্ধান্ত নিলে আমরা তা মানতে বাধ্য। এখনও কারও মাইনে বন্ধ হয়নি। গ্রুপ সি, ডি কর্মীদেরও টাকা দেওয়া হচ্ছে। অথচ আন্দোলনে শিক্ষকদের থেকে বহিরাগতের সংখ্যা বেশি রয়েছে। রাজনৈতিক দল উস্কানি দিচ্ছে। যারা উস্কানি দিচ্ছে, তারাই ওদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। নাটের গুরুরা যদি স্বার্থরক্ষার গুরু হয়ে যায় তা হলে মুশকিল।’’ শিক্ষকদের রাজ্য সরকারের উপর আস্থা রাখতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, আধিকারিকদের আটকে রাখা, বিশেষত অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের দীর্ঘ ক্ষণ দফতরে বন্দি করে রাখা, রাস্তা অবরোধ করে বসে থাকা ইত্যাদিরও সমালোচনা করেন তিনি। সব শেষে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘‘শিক্ষকদের কাছ থেকে ন্যূনতম সৌজন্য, সম্মান প্রত্যাশা করি। রাজনীতির ঊর্ধ্বে গিয়ে আপনারা সমাজের সেবা করুন, শিক্ষা দিন।”

যদিও মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পরেই চাকরিহারাদের সংগঠন ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের’ তরফে চিন্ময় মণ্ডল বলেছেন, ‘‘এটা পুরোপুরি ওঁর ভুল পর্যবেক্ষণ। উনি আসুন, এসে নিজের চোখে দেখে যান। এখানে প্রত্যেকেই শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। আর যাঁরা ‘বহিরাগত’, তাঁরা এঁদেরই পরিজন।’’ চিন্ময়ের দাবি, আন্দোলনে কোনও রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের উস্কানি দেওয়ার অভিযোগও অসত্য। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে চিন্ময় বলেন, ‘‘আমরা সঠিক ভাবেই লক্ষ্মণরেখা বজায় রেখে আন্দোলন করছি। সামান্য গেট অতিক্রম করে ঢোকাকে উনি ‘হিংসা’, ‘ধ্বংস’ — এ সব বলছেন। আর বিনা কারণে এত জনের চাকরি চলে গেল, এতগুলি জীবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, এটা কি ধ্বংস নয়? মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে আপনার আমাদের নিয়ে সমব্যথী হওয়া উচিত। সরকার কী কী করেছে, তা আমাদের মধ্যে এসে জানান। আমরা তো আপনারই মুখাপেক্ষী হয়ে রয়েছি!’’

বৃহস্পতিবার বিকাশ ভবনের সামনে চাকরিহারাদের অবস্থান বিক্ষোভে ধস্তাধস্তির পরিস্থিতি তৈরি হয়। আন্দোলনকারীদের উপর লাঠি চালানোর অভিযোগ ওঠে পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে। অন্য দিকে, আন্দোলনকারী ১৭ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয় বিধাননগর উত্তর থানায়। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, ভাঙচুর, সরকারি কর্মীদের কাজে বাধাদান-সহ একাধিক অভিযোগ আনা হয় আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার পর থেকে এই প্রথম বার মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, সোমবার দিল্লি যাওয়ার আগে আন্দোলনকারী এবং শিক্ষকদের সংঘাতের প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, ‘‘আন্দোলন করার অধিকার সকলের রয়েছে। কিন্তু সেই আন্দোলন হিংসাত্মক হলে তার সারমর্ম হারিয়ে যায়।’’ তিনি আরও জানান, কোনও আন্দোলনকেই তিনি ছোট করতে চান না। আন্দোলন রাজনীতির রঙে রাঙানো হোক, তা-ও চান না। তাঁর কথায়, ‘‘আন্দোলনকারীদের কাছে আমার আর্জি, আন্দোলন যেন হিংস্র না হয়।’’ বিচারব্যবস্থার উপর আস্থা রাখার পরামর্শও দেন অভিষেক।

CM Mamata Banerjee Bengal SSC Recruitment Case
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy