E-Paper

আচার মেনে খোয়া সংগ্রহে আধিকারিকেরা কেন, কটাক্ষ

রথযাত্রায় রাজ্যের প্রতি বাড়িতে জগন্নাথের প্রসাদ পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। এ দিন সকালে কলকাতা থেকে ‘ফ্রিজ়ার ভ্যান’-এ প্রায় ৩০০ কেজি খোয়া পৌঁছয় দিঘার মন্দিরে। ইসকনের কলকাতা শাখার সহ-সভাপতি রাধারমণ দাসের নেতৃত্বে সন্ন্যাসীরা বিশেষ নাম সংকীর্তন করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২৫ ০৯:২০
বিগ্রহের সামনে রাখা প্রসাদী খোয়া।

বিগ্রহের সামনে রাখা প্রসাদী খোয়া। —নিজস্ব চিত্র।

রাজ্য সরকারের ব্যবস্থাপনায় প্রসাদী খোয়া (মূল প্রসাদ) বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হল। প্রশাসনিক আধিকারিকেরা আচার মেনে তা হাতে নিলেন। কারও কারও সঙ্গে থাকলেন পুরোহিতও। সোমবার দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের সে ঘটনায় কটাক্ষ করেছে বিজেপি। ঘটনাচক্রে, এ দিন বিকেলে আবার সে মন্দিরেই নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে থানায় বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের একাংশ।

রথযাত্রায় রাজ্যের প্রতি বাড়িতে জগন্নাথের প্রসাদ পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। এ দিন সকালে কলকাতা থেকে ‘ফ্রিজ়ার ভ্যান’-এ প্রায় ৩০০ কেজি খোয়া পৌঁছয় দিঘার মন্দিরে। ইসকনের কলকাতা শাখার সহ-সভাপতি রাধারমণ দাসের নেতৃত্বে সন্ন্যাসীরা বিশেষ নাম সংকীর্তন করেন। তথ্য-সংস্কৃতি দফতরের উদ্যোগে স্থানীয় মহিলারা হলুদ কাপড়ে ঢাকা ডালায় খোয়ার বাক্সগুলি মন্দিরে নিয়ে যান। বিগ্রহের সামনে কাঁসার থালায় নিবেদন করে খোয়ার বিশেষ পুজো হয়। পরে, প্রসাদী খোয়ার বাক্সে প্রতিটি জেলার নাম সাঁটানো হয়। মূল মন্দিরের ভিতরে গোটা পর্ব তদারক করেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি। সহযোগিতায় ছিলেন দুই অতিরিক্ত জেলাশাসক সৌভিক ভট্টাচার্য এবং নেহা আগরওয়াল এবং মহকুমাশাসক (কাঁথি) প্রতীকঅশোক ধুমল।

দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের প্রতিনিধিরা প্রসাদী খোয়ার বাক্স এ দিনই সংগ্রহ করেন। বাকি খোয়া ফের ‘ফ্রিজ়ার ভ্যান’-এ কলকাতায় ফিরেছে। পূর্ব মেদিনীপুরের বিডিও, যুগ্ম বিডিওরা লাইনে দাঁড়িয়ে, ধর্মীয় আচার মেনে প্রসাদী খোয়া সংগ্রহ করেন। কেউ কেউ পুরোহিতও এনেছিলেন। কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের যুগ্ম বিডিও তাপস মিত্র বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছিল, সম্ভব হলে পুরোহিত ডেকে পবিত্র প্রসাদী খোয়া নিয়ে যেতে হবে। সেই মতো পুরোহিত এনেছি।’’

প্রসাদী খোয়া নিয়ে যাচ্ছেন কাঁথি দেশপ্রাণের যুগ্ম বিডিও তাপস মিত্র (মাঝে)।

প্রসাদী খোয়া নিয়ে যাচ্ছেন কাঁথি দেশপ্রাণের যুগ্ম বিডিও তাপস মিত্র (মাঝে)। —নিজস্ব চিত্র।

সরকারি আধিকারিকদের ভূমিকায় কটাক্ষ করে দক্ষিণ কাঁথির বিজেপি বিধায়ক অরূপকুমার দাসের কটাক্ষ, ‘‘নিরুপায় হয়ে রাজ্য সরকার পুজোআচ্চায় ব্যস্ত হয়েছে। আধিকারিকদেরও ছাড়া হচ্ছে না।’’ তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘মন্দির পরিচালন কমিটিই প্রসাদী খোয়া বিতরণের কাজ করেছে। তা সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করতে আধিকারিকেরা ছিলেন।’’

এই বিতর্কের মধ্যেই বিকেলে তৃণমূলের কিছু স্থানীয় নেতার নেতৃত্বে দিঘা থানায় বিক্ষোভ হয়। ফের দাবি ওঠে, জগন্নাথ মন্দিরে কর্মসংস্থানে স্থানীয়দের প্রাধান্য দিতে হবে। সেখানে অর্থের বিনিময়ে নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ। বিক্ষোভে শামিল রামনগর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের নিতাই সার বলেন, ‘‘যে সংস্থা রক্ষী নিয়োগ করছে, তারা বৈধ কি না এবং কারা এই সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছে তা জানতে স্মারকলিপি দিয়েছি।’’ জেলার পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ খতিয়ে দেখবে।’’ আর মন্দির কমিটির তরফে রাধারমণের বক্তব্য, ‘‘নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগের বিষয়ে জানি না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Digha Jagannath Temple BJP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy