Advertisement
E-Paper

রাজ্যে ফের আধার-জট

কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদল ঘিরে রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্রের যথেষ্ট টানাপড়েন চলেছিল। বরাদ্দ-অনুমোদন বন্ধ রেখে সেই জটিলতা বিগত কয়েক বছর ধরেই অব্যহত। এর মধ্যে প্রকল্পগুলির আগের কেন্দ্রীয় নামই ফের চালু করতে হয়েছে রাজ্যকে।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:৫৭
Representative Image

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

ফের নাম-জট? তার জন্যই কি রাজ্যের আধার পরিচালনার অনুমোদন আটকাচ্ছে কেন্দ্র! বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা অভিন্ন ওই পরিচয়পত্রের যাচাই-সংশোধন শুরুর মুখে এ নিয়ে চর্চা তীব্র প্রশাসনের অন্দরে।

কেন্দ্র হোক বা রাজ্য—এখন সরকারি কাজ, বিশেষ করে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেতে গেলে আধার যাচাই কার্যত বাধ্যতামূলক হয়ে উঠেছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে আধার-তথ্যের গরমিল, ‘ভুয়ো’ আধারের অভিযোগ ইত্যাদি নানা কারণে উপভোক্তাদেরও হয়রান হতে হচ্ছে। তা ছাড়া প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, বাংলাদেশ পরবর্তী পরিস্থিতিতে ভুয়ো বা দাবিদারহীন আধার কার্ড চিহ্নিত করার কাজে আরও গতি বাড়ানোর কথা রাজ্যগুলিকে জানাচ্ছে কেন্দ্র। এই অবস্থায় অতীতে আধারের ‘রেজিস্ট্রার’ হতে না চাইলেও, এখন আধার পরিষেবা পরিচালনার অনুমোদন পেতে চাইছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কিন্তু তা ‘বাংলা সহায়তা কেন্দ্রের’ (বিএসকে) অধীনে। তাতে আপত্তি ছিল না কেন্দ্রের। এমনকি, প্রাথমিক ভাবে কয়েক কোটি টাকা বরাদ্দও হয়েছিল সংশ্লিষ্ট পরিকাঠামোর জন্য। তবু প্রায় দেড় বছর হতে চললেও চূড়ান্ত ছাড়পত্র এখনও দেয়নি আধার নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘ইউআইডিএআই’। সেই কারণেই প্রশাসনের অন্দরে চর্চার জন্ম নিয়েছে, তবে কি রাজ্যের স্থির করা ‘বিএসকে’-নাম আপত্তিতেই অনুমোদন অধরা থাকছে! এ নিয়ে কেন্দ্রকে চিঠিও পাঠিয়েছে রাজ্য।

রাজ্যের এক কর্তার কথায়, “এই পরিকাঠামো তৈরিতে রাজ্যের দেওয়ার কথা প্রায় ২৩ কোটি টাকা। তার মধ্যে দেওয়া হয়েছে প্রায় ১৬ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় সরকারেরও পাঁচ কোটি টাকা দেওয়ার কথা। ইতিমধ্যে তারাও প্রায় আড়াই কোটি টাকা দিয়ে দিয়েছে। যন্ত্রাংশ কেনা সম্পূর্ণ, পরিকাঠামো প্রস্তুত, কাজ পরিচালনার জন্য লোকবলও তৈরি। তার পরেও কেন কেন্দ্রের ছাড়পত্র মিলছে না, তা স্পষ্ট নয়।” যদিও আধার নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘ইউআইডিএআই’-এর তরফে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সেখানকার এক কর্তার দাবি, “বিষয়টি আমাদের জানা নেই।”

কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদল ঘিরে রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্রের যথেষ্ট টানাপড়েন চলেছিল। বরাদ্দ-অনুমোদন বন্ধ রেখে সেই জটিলতা বিগত কয়েক বছর ধরেই অব্যহত। এর মধ্যে প্রকল্পগুলির আগের কেন্দ্রীয় নামই ফের চালু করতে হয়েছে রাজ্যকে। প্রশাসনের একাংশের অনুমান, রাজ্য সরকার কেন্দ্রের তথ্যমিত্র কেন্দ্রগুলির সমান্তরাল পরিকাঠামো তৈরি করেছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র। তার লোকবল পরিচালিত হচ্ছে রাজ্যের কর্মীবর্গ ও প্রশাসনিক সংস্কার দফতরের অধীনেই। তা ছাড়া অতীতে রাজ্যকে আধারের রেজিস্ট্রার হতে বহুবার প্রস্তাব দিয়েছিল কেন্দ্র। তখন রাজ্য তাতে রাজি হয়নি। এই অবস্থায় কেন্দ্রের এই অবস্থান খুবই অর্থবহ।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, রাজ্য জুড়ে প্রায় সব জেলা মিলিয়ে ২১৩৯টি বিএসকে আধার পরিষেবার জন্য চিহ্নিত হয়েছে। তার মধ্যে প্রথম পর্যায়ে রয়েছে ১১৩৯ এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে এক হাজারটি। অনুমোদন পেতে রাজ্য যখন আলোচনা চালাচ্ছিল, তখন কেন্দ্রের প্রস্তাব ছিল, যন্ত্রাংশ এবং লোকবল দিতে হবে রাজ্যকেই। যে লোকবল নির্দিষ্ট হবে ওই কাজে, সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সংশাপত্র দেবে কেন্দ্র। তবে তাঁরা আধার-দায়িত্ব সামলাতে পারবেন। দু’বছরের মেয়াদে থাকবে সেই সংশাপত্র। তার পরে সেটির পুনর্নবীকরণ হবে। এই সব কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। এমন প্রায় চার হাজার কর্মীর সংশাপত্র এসে গিয়েছে প্রায় দেড় বছর আগেই। কিন্তু এখনও চূড়ান্ত ছাড়পত্র না থাকায় কাজটাই শুরু করা যাচ্ছে না। ফলে যন্ত্রাংশ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।

রাজ্যের এক কর্তার বক্তব্য, “আধার সহায়তা কেন্দ্রগুলিতে উপভোক্তাকে কাজের জন্য কিছু অর্থ দিতে হয় ফি হিসেবে। কিন্তু রাজ্য তা একেবারে বিনামূল্যে করতে প্রস্তুত। তা ছাড়া আধার সহায়তা কেন্দ্র নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় রয়েছে। অথচ বিএসকে-র উপস্থিতি রয়েছে প্রায় প্রতিটি এলাকাতেই। ফলে প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে সাধারণ মানুষ অনেক বেশি উপকৃত হতেন কেন্দ্রের এই ছাড়পত্র পাওয়া গেলে।”

Aadhar card West Bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy