Advertisement
E-Paper

ঠেঙাতে কেন সাদা পোশাক, ক্ষুব্ধ প্রাক্তনরা

ভিড়ের মধ্যে যাতে সাংবাদিকদের সহজেই চিহ্নিত করা যায় তাই কোনও গোলমালের ঘটনায় তাঁদের বিশেষ জ্যাকেট পরার পরামর্শ দিয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার।

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৭ ০৪:০৬
লাঠিধারী: প্রশ্ন এই যুবকদের নিয়ে। বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে। নিজস্ব চিত্র

লাঠিধারী: প্রশ্ন এই যুবকদের নিয়ে। বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে। নিজস্ব চিত্র

ভিড়ের মধ্যে যাতে সাংবাদিকদের সহজেই চিহ্নিত করা যায় তাই কোনও গোলমালের ঘটনায় তাঁদের বিশেষ জ্যাকেট পরার পরামর্শ দিয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। বৃহস্পতিবার বিজেপির লালবাজার অভিযানের আগে পুলিশ সাংবাদিকদের মধ্যে সেই জ্যাকেট বিলিও করেছে।

পুলিশ কমিশনারের এই পরামর্শের পরে এ বার প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভিড়ে মিশে থাকা মাথায় হেলমেট, পায়ে স্নিকার্স, জিন‌্স-টি শার্ট পরা লাঠিধারী যুবকদের পরিচয় নিয়ে। সোমবার বাম দলগুলির নবান্ন অভিযানে বিক্ষোভকারী ও সাংবাদিকদের পেটানোয় এদের অনেককে অগ্রণী ভূমিকায় দেখা গিয়েছে। এ দিন বিজেপির লালবাজার অভিযানেও বিস্তর লাফালাফি করতে দেখা গিয়েছে ওই যুবকদের। এঁদের কেউ কেউ চটিজুতোও পরে এসেছিল।

রাজ্যের এক প্রাক্তন পুলিশ কর্তার মন্তব্য, ‘‘নন্দীগ্রামে যে পুলিশেরা গুলি চালিয়েছিল, সেই দলেও অনেক সাদা পোশাকের, হাওয়াই চটি পরা লোককে দেখা গিয়েছিল। পুলিশের সঙ্গে শাসক দলের ক্যাডাররাও গুলি চালিয়েছিলেন কী না, উঠেছিল সেই প্রশ্ন।’’ এই ধরনের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সাদা পোশাকের পুলিশ নামানো কতটা যুক্তিযুক্ত, সেই প্রশ্ন তুলছেন ওই প্রাক্তন পুলিশ কর্তা।

বিক্ষোভে: ব্রেবোর্ন রোডে লকেট চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সুমন বল্লভ

বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটে এক বিজেপিকে সমর্থককে এ দিন চেঁচিয়ে বলতে শোনা গিয়েছে— ‘‘তৃণমূলের লোক মিশে রয়েছে পুলিশের মধ্যে। ওরাই লাঠি মারছে!’’ লালবাজারের এক কর্তা সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, ‘‘ওঁরা আমাদেরই লোক!’’ তাঁরা যে পুলিশের লোক, তা চেনা যাবে কী করে? সাংবাদিকদের না হয় নির্দিষ্ট পোশাক থাকে না। কিন্তু পুলিশের তো উর্দি রয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে— সাংবাদিকদের চিহ্নিত করার আগে নিজের বাহিনীর চিহ্নিতকরণ কেন নগরপাল করছেন না!

কিন্তু মূল প্রশ্ন, আইন রক্ষায় সাদা পোশাকের পুলিশ থাকার কি প্রয়োজন রয়েছে? প্রাক্তন পুলিশ কর্তারা খোলাখুলি জানাচ্ছেন, কোনও যৌক্তিকতাই তাঁরা দেখছেন না। কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন গোয়েন্দা প্রধান নজরুল ইসলামের কথায়, ‘‘আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় রাস্তায় যে পুলিশ থাকবেন, তাঁর পোশাক পরে থাকাটাই দস্তুর। সাদা পোশাকের পুলিশ গোয়েন্দা বিভাগ, স্পেশাল ব্রাঞ্চে রয়েছেন। কিন্তু তাঁদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ডাকলে তাঁদের পোশাক পরে আসতে হবে, এটাই নিয়ম।’’ কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার সুজয় চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘প্রতিটি থানায় ‘স্পেশ্যাল’ বলে কিছু সাদা পোশাকের পুলিশ থাকেন। ওই থানা এলাকায় বিভিন্ন খবর রাখাটাই মূলত তাঁদের কাজ। আমরা সাদা পোশাকের পুলিশদের ভিড়ের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে দেখতাম সেখানে পরিচিত কোনও অপরাধী রয়েছে কি না। তাঁরা কখনই লাঠি হাতে লোক পেটানোর কাজ করতেন না।’’ একই মত প্রাক্তন কমিশনার প্রসূন মুখোপাধ্যায়েরও। তাঁর কথায়, ‘‘আন্দোলনের অভিমুখ জানতে আমরা সাদা পোশাকের পুলিশের সাহায্য নিতাম। কিন্তু ওঁদের কখনই লাঠি হাতে জনতাকে তাড়া করতে বলতাম না।’’

কিন্তু এখন ওই সাদা পোশাকের পুলিশের অন্য কাজ কেন? লালবাজারের কর্তারা যথারীতি মুখে কুলুপ এঁটেছেন।

BJP Rally Lalbazar West Bengal Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy