Advertisement
০৫ মে ২০২৪

ব্যাঙ্কেই তো ১২ লক্ষ, আত্মঘাতী কেন হবেন প্রসেনজিৎ

১৭ অগস্ট ওয়াটগঞ্জ থানা এলাকায় আলিপুর বডিগার্ড লাইন্সের ভিতরের পুকুরে প্রসেনজিতের মৃতদেহ ভাসতে দেখা যায়।

নিথর: প্রসেনজিৎ সিংহ। আলিপুর বডিগার্ড লাইন্সে। —নিজস্ব চিত্র।

নিথর: প্রসেনজিৎ সিংহ। আলিপুর বডিগার্ড লাইন্সে। —নিজস্ব চিত্র।

নীলোৎপল বিশ্বাস
শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৯ ০৩:২৫
Share: Save:

নিকটজনদের অভিযোগ, তাঁকে খুন করা হয়েছে। তবে পুলিশের একাংশের বক্তব্য, আলিপুর বডিগার্ড লাইন্সে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন মালদহের কর্মপ্রার্থী যুবক প্রসেনজিৎ সিংহ (২৮)। কিন্তু ব্যাঙ্কে যাঁর ১২ লক্ষ টাকা রয়েছে, চাকরির জন্য দেওয়া তিন লক্ষ টাকা ফেরত না-পেয়ে তিনি আত্মহত্যা করবেন কেন, প্রশ্নটা ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদেরও।

কলকাতা পুলিশে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে টাকা হাতানোর অভিযোগের জেরে প্রসেনজিতের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তে নতুন কিছু তথ্য পেয়েছে পুলিশ। বুধবার মালদহে ওই যুবকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করে এবং পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া নতুন তথ্যই বলছে, ব্যাঙ্কে ১২ লক্ষ টাকা আছে প্রসেনজিতের।

১৭ অগস্ট ওয়াটগঞ্জ থানা এলাকায় আলিপুর বডিগার্ড লাইন্সের ভিতরের পুকুরে প্রসেনজিতের মৃতদেহ ভাসতে দেখা যায়। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে তাদের পাশের গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ মণ্ডল ও ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল নামে দুই ভাই তিন লক্ষ টাকা নেন প্রসেনজিতের কাছ থেকে। চাকরি না-পেয়ে টাকা ফেরত চাইতে বডিগার্ড লাইন্সে যান প্রসেনজিৎ। তার পরেই তিনি খুন হন। ইন্দ্রজিৎ কলকাতা পুলিশের রিজার্ভ ফোর্সের কর্মী এবং বিশ্বজিৎ ডাক বিভাগে কাজ করেন। খুন, ষড়যন্ত্র, তথ্য লোপাট নিয়ে অভিযোগের তদন্তের পাশাপাশি টাকার বিনিময়ে পুলিশে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কোনও চক্র সক্রিয় কি না, তারও অনুসন্ধান চলছে।

পুলিশি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওয়াটগঞ্জ থানার তদন্তকারী দল মালদহে গিয়ে জেনেছে, সেখানকার পুখুরিয়ায় একটি ব্যাঙ্কে মৃতের অ্যাকাউন্টে বুধবারেও ১২ লক্ষ টাকা ছিল। তদন্তকারীদের প্রশ্ন, ব্যাঙ্কে ১২ লক্ষ টাকা রয়েছে। তা সত্ত্বেও চাকরির জন্য দেওয়া তিন লক্ষ টাকা ফেরত না-পেয়ে মানসিক অবসাদে কেউ আত্মহত্যা করবেন কেন?

প্রসেনজিৎ বডিগার্ড লাইন্সে সাত দিন ছিলেন। সেই সময় এটিএম থেকে তিনি প্রতিদিন ৫০০ টাকা তুলতেন। সেই লেনদেনের হিসেব থাকলেও ওই সময় বড় অঙ্কের টাকার লেনদেন হয়নি। প্রসেনজিৎকে টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে বলে বিশ্বজিৎ যে-দাবি করছেন, ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করে তার প্রমাণ পায়নি পুলিশ।

তদন্তকারীরা বুধবার প্রসেনজিতের বাড়ি গিয়ে পরিবারের প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলেন। জানতে পারেন, প্রসেনজিৎকে ছোটবেলা থেকেই তাঁর বাবা উত্তমকুমার সিংহ প্রতি মাসে ১০ হাজারেরও বেশি টাকা হাতখরচ দিতেন। সেই টাকাই তাঁর ছেলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রয়েছে বলে জানান পুলিশকর্মী উত্তমবাবু। প্রসেনজিতের ঘনিষ্ঠ জেঠতুতো ভাই জয়কৃষ্ণ সিংহ তদন্তকারীদের জানান, মৃত্যুর আগে প্রসেনজিতের সঙ্গে তাঁর কয়েক বার কথা হয়েছেল। টাকা ফেরত না-পেয়ে খুবই উদ্বিগ্ন ছিলেন প্রসেনজিৎ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Prasenjit Sinha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE