চন্দনার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে বিতর্ক চললেও স্বামী কৃষ্ণর পাশেই স্ত্রী রুম্পা। ফাইল চিত্র
ডাক্তার দেখিয়ে কোনও লাভ হয়নি। চিকিৎসকেরাও নাকি জানিয়েছেন, কৃষ্ণ ‘পাগল’ হয়ে গিয়েছেন। এমনটাই দাবি করেছেন রুম্পা কুন্ডু। বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউড়ির সঙ্গে ‘পরকীয়া’ বিতর্কে জড়ানো কৃষ্ণ কুন্ডুর স্ত্রী। আনন্দবাজার অনলাইনকে রুম্পা এমনটাও জানিয়েছেন যে, স্বামীকে সুস্থ করতে এখন তিনি ঝাড়ফুঁকের উপরে ভরসা রাখছেন। শনিবারই কৃষ্ণকে নিয়ে বর্ধমান জেলার পানাগড়ে একটি ‘ঠাকুরের থান’-এ যান রুম্পা। সেখান থেকেই ফোনে আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘আমার মাথার ঠিক নেই। সারাক্ষণ চন্দনা-চন্দনা করছে। এখানে এসেছি। দেখি কী হয়।’’
চন্দনার সঙ্গে বিজেপি নেতা কৃষ্ণের পরকীয়ার অভিযোগ ওঠে গত ১৮ অগস্ট। সে দিন রাতে বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি থানায় চন্দনা ও কৃষ্ণকে দেখা যায়। সেই সময় থানায় যান চন্দনার স্বামী শ্রবণ বাউড়ি এবং কৃষ্ণের স্ত্রী রুম্পাও। পরে বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, ‘‘রুম্পা কুন্ডু একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। আমরা অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় তদন্ত ও পদক্ষেপ করব।’’ জানা যায়, গঙ্গাজলঘাটি থানার পুলিশ চন্দনা ও কৃষ্ণের বিরুদ্ধে ৪৯৮-এ ধারায় বধূ নির্যাতনের মামলা রুজু করে। এ ছাড়াও, ৫০৬ ধারায় দু’জনের বিরুদ্ধে ভয় দেখানোর অভিযোগ আনা হয়। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই ১৯ অগস্ট চন্দনা তাঁর স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে একটি ফেসবুক লাইভ করে তাঁদের বক্তব্য প্রকাশ্যে জানান। সেখানে তিনি গোটা বিষয়টিকেই ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে দাবি করেন। তবে বিজেপি দলীয় ভাবে এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেনি। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছিল, কৃষ্ণ চন্দনার গাড়ির চালক নন। তিনি শালতোড়ায় বিজেপি-র সহ-আহ্বায়ক।
গরিব পরিবারের গৃহবধূ চন্দনা বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই খবরের শিরোনামে থেকেছেন। ভোটের প্রচারে বাঁকুড়া এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও চন্দনার কথা আলাদা করে বলেছিলেন। সেই চন্দনা সম্পর্কে পরকীয়ার খবর নিয়ে জল্পনার মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন কৃষ্ণ। গত ২১ অগস্ট রাতে তাঁকে বাঁকুড়ার সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছিল, প্রথমে শ্বাসকষ্টের সঙ্গে শরীরে জ্বালা অনুভব করছিলেন কৃষ্ণ। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর উপরে হামলা হয়েছিল বলেও দাবি করেছিলেন রুম্পা।
দিন তিনেক আগে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেও কৃষ্ণ পুরোপুরি সুস্থ হননি বলেই দাবি রুম্পার। শনিবার তাঁকে দেখাতে পানাগড়ের ছিলামপুরে একটি ‘ঠাকুরের থান’-এ নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সকাল থেকে লাইনে দাঁড়ানো রুম্পা বলেন, ‘‘ওর শরীর একদম ভাল নেই। পাগল হয়ে গিয়েছে। চন্দনাকে নিয়েই পাগল। কোনও কাজকর্ম করছে না। ‘চন্দনাকে আনব’, ‘চন্দনাকে আনব’ বলে আউড়ে যাচ্ছে।’’ হাসপাতালে চিকিৎসকরা কী বললেন? রুম্পার কথায়, ‘‘ডাক্তাররা বলছেন, পুরো পাগল হয়ে গিয়েছে।’’ কিন্তু ‘ঠাকুরের থান’-এ নিয়ে এসে কি সুস্থ করা যাবে? রুম্পার জবাব, ‘‘কী হবে, কী হবে না, জানি না। লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। আমার মাথার ঠিক নেই। বাড়িতে খালি বলছে, মাথা যন্ত্রণা করছে। সারাক্ষণ চন্দনা আর চন্দনা। আমি আর মানতে পারছি না।’’
সত্যিই কি চন্দনার সঙ্গে আপনার স্বামীর সম্পর্ক ছিল বা রয়েছে? সত্যিই কি ওঁরা বিয়ে করেছেন? রুম্পা বলেন, ‘‘বিয়ে হয়েছে কিনা আমি তো চোখে দেখিনি। ওঁরাই পুলিশকে বলেছে। সবাই বলছে। তবে ওদের মধ্যে ঘটনাটা সত্যি।’’ কী হয়েছিল সে দিন? ‘‘কলকাতায় যাচ্ছি বলে রাত ১১টায় বাড়ি থেকে গিয়েছিল। পরের দিন থানায় দেখা হয়। মাঝের কিছুই আমি জানি না।’’
পুলিশ, ডাক্তার, ঠাকুরের থান— এত জায়গায় যাচ্ছেন, কিন্তু চন্দনার কাছে গিয়েছিলেন একবারও? অভিমানী রুম্পার জবাব, ‘‘চন্দনা তো সেই থেকে ঘরেই নেই। সত্যিই যদি ভালবাসে তবে একদিন তো ফোন করেও খবর নিত। আমার বরটাই পাগল হয়ে গেল।’’
রুম্পার সঙ্গে কথা হওয়ার পরেই আনন্দবাজার অনলাইনের পক্ষে যোগাযোগ করা হয় চন্দনার সঙ্গে। কিন্তু সাড়া দেননি চন্দনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy