ফিরহাদ হাকিমের কাছে রিনা খাতুন বিশ্বাস। — নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভায় এসে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে দেখা করে স্বামী মতিরুল বিশ্বাস খুনে সিআইডি তদন্তের দাবি জানালেন তাঁর স্ত্রী রিনা বিশ্বাস। বুধবার বিধানসভায় গিয়ে ফিরহাদের সঙ্গে দেখা করেন নদিয়ার নিহত ওই তৃণমূল নেতার স্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরাও। সূত্রের খবর, মন্ত্রীর কাছে চাকরির অনুরোধও করেছেন রিনা। তাঁর দাবি, বিষয়টি শুনে আশ্বাস দিয়েছেন ফিরহাদ।
বুধবার কলকাতা এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করবেন এমনটা আগেই জানিয়েছিলেন রিনা। স্বামী খুনের তদন্তভার সিআইডিকে দেওয়ার অনুরোধও জানানোর কথা ছিল তাঁর। সেই মতো, বুধবার রাজ্যের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহা, করিমপুরের বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহরায়, চাপড়ার বিধায়ক রুকবানুর রহমান এবং তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি কল্লোল খাঁয়ের সঙ্গে বিধানসভায় আসেন নিহত মতিরুলের স্ত্রী। তবে মুখ্যমন্ত্রী জেলাসফরে ব্যস্ত থাকায় দুপুর ১২টা ১০ নাগাদ ফিরহাদের সঙ্গে দেখা করেন রিনা। সঙ্গে ছিল তাঁর পুত্র এবং কন্যাও।
ফিরহাদের কাছে সিআইডি তদন্তের দাবি জানান রিনা। তাঁকে একটি কাজ দেওয়ার অনুরোধও করেন তিনি। রিনার দাবি, ফিরহাদ তাঁকে জানিয়েছেন, সিআইডি তদন্তের ব্যাপারে তিনি নিজে মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করবেন। পাশাপাশি, জেলা পরিষদ অথবা জেলাশাসকের দফতরে যাতে অস্থায়ী চাকরি দেওয়া যায় সে ব্যাপারটিও ফিরহাদ দেখবেন বলে দাবি রিনার। মতিরুলের স্ত্রী জানিয়েছেন, ফিরহাদ তাঁকে কথা দিয়েছেন, ওই খুনের ঘটনায় তৃণমূলের কেউ জড়িত থাকলেও রেয়াত করা হবে না। রিনার দাবি, প্রয়োজনে ফিরহাদ নিজে বিষয়টি দেখবেন বলে কথা দিয়েছেন। আগামী ১০ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হতে পারে রিনার। পরে রিনা বলেন, ‘‘আমি ১০ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছি। আস্থা রাখলেও অভিযোগের ভিত্তিতে কোনও ফল পাইনি এখনও। ওঁরা বিষয়টি দেখবেন বলেছেন। তবে আমি ছেলে-মেয়ে নিয়ে বড় অসহায়। আমি দাবি করেছি, উপযুক্ত তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হোক।’’
গত ২৪ নভেম্বর খুন হয়েছিলেন তৃণমূল নেতা মতিরুল। তাঁর দেহরক্ষী হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন সাগর ঘোষ নামে সশস্ত্র বাহিনীর নাইন ব্যাটালিয়নের এক কনস্টেবল। মতিরুলের খুনের সময় একই বাইকে সওয়ারি ছিলেন দেহরক্ষী সাগরও। প্রত্যক্ষদর্শী হিসাবে তাঁর বয়ান রেকর্ড করেছে পুলিশ। কিন্তু, তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রিনা। তাঁর কথায়, ‘‘দেহরক্ষী দেওয়া হয় রক্ষা করার জন্য। দেহরক্ষীর কাছে আগ্নেয়াস্ত্র থাকে আক্রমণ হলে তা ব্যবহার করার জন্য।’’ রিনার প্রশ্ন, ‘‘দুষ্কৃতীরা এত বার গুলি চালালেও দেহরক্ষী একটিও গুলি চালালেন না কেন?’’
পুলিশ সূত্রের জানা গিয়েছে, সাগর রাজ্য পুলিশের (২০১৯ ব্যাচ) সশস্ত্র বাহিনীর নাইন ব্যাটেলিয়ন কনস্টেবল। দীর্ঘ দিন ধরেই নিরাপত্তার কারণে দেহরক্ষী পেয়ে আসছিলেন মতিরুল। কিন্তু, মাস ছ’য়েক আগে তাঁর দীর্ঘ দিনের দেহরক্ষী লতিফ মণ্ডলকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয় সদ্য চাকরি পাওয়া ২৩ বছরের তরুণ সাগরকে। সাগরের বয়ান অনুযায়ী, মতিরুলের উপর আক্রমণ হয়েছিল ২৪ নভেম্বর ৫টা ৪১ মিনিটে। মতিরুলের উপর আক্রমণের খবর পেয়ে নওদা থানার পুলিশ পৌঁছয় সাড়ে ৬টা নাগাদ। ওই সময় সাগরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রিনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy