E-Paper

আমরাও বুঝে নেব কড়ায়-গণ্ডায়: মমতা

শাহের সভা ঘিরে প্রচারের জবাবে এ দিন সকাল থেকেই দলের পাল্টা প্রচারের ব্যবস্থা করেছিল তৃণমূল। শাহের উদ্দেশে শহর জুড়ে ‘মোটা ভাই, ভোট নাই’ লেখা ফ্লেক্স ও ব্যানার ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৭
Mamata Banerjee.

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

রাজ্যে এসে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যে দুর্নীতির অস্ত্রে শান দেবেন, তা প্রত্যাশিতই ছিল। তার পাল্টা হিসেবে বঞ্চনার পাশাপাশি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে দুর্নীতির পাল্টা অভিযোগ তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘তোমাদের কাটমানি তো কাটে কাটে!’’ সেই সঙ্গেই তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘আমরাও কড়ায়-গণ্ডায় বুঝে নেব। আমাকে মোদী (প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী), শাহের ভয় দেখিও না!’’

শাহ যখন ধর্মতলায় বুধবার বিজেপির সভায় তৃণমূলকে বিঁধছেন, তার আগে বিধানসভায় বিল-বিতর্কে অংশগ্রহণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে চুরি, দুর্নীতির অভিযোগ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দু-এক জন সব দলেই থাকে। তৃণমূলকে বলে চোর! সিপিএম বা অন্য দল থেকে যারা তৃণমূলে এসেছিল, তাদের দু-ক জন এ দিক-ও দিক করতে পারে। তৃণমূল চোর হয়ে গেল!’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘গেরুয়া পরলেই সাধু হয় না। সাধু হতে গেলে সাধনা করতে হয়। কেউ একটার জায়গায় দু’টো বিড়ি খেলেই চোর! যাদের কাছে ভূরি ভূরি, তারাই করে বেশি চুরি।’’ কেন্দ্রীয় সংস্থার ‘অপব্যবহার’ প্রসঙ্গও ফের তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘যাঁরা করছেন, মনে রাখবেন, চির দিন ক্ষমতায় থাকবেন না। আগামী দিনের জন্য অপেক্ষা করুন। কে, কোথায় বিদেশে টাকা রেখেছেন, আমরা দেখে নেব। উদ্ধার করব।’’

দুর্নীতি নিয়ে তৃণমূলের উপরে লাগাতার চাপ তৈরি করে চলেছে বিজেপি। জবাবে ‘বঞ্চনা’র পাশাপাশি কেন্দ্রের শাসক বিজেপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন মমতা। তবে ‘বঞ্চনা’র অভিযোগে তৃণমূল নেত্রী ছিলে বেশি ঝাঁজালো। বিধানসভার ভিতরে তিনি বলেন, ‘‘কী না করেছে বাংলার সঙ্গে! অত্যাচার, অনাচার। জিএসটি-র মাধ্যমে রাজ্যের সব টাকা নিয়ে যাচ্ছে। আর দেওয়ার সময় মনে হচ্ছে, জমিদারির টাকা দিচ্ছে!’’ বিজেপির রাজ্য নেতাদের ইঙ্গিত করে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘‘আমাদের রাজ্যে এমন বিরোধী দল যে, দিল্লিতে গিয়ে বলে আসছে, রাজ্যের টাকা বন্ধ করে দাও।’’ তার পরেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘এ সবের পরেও রাজ্যের এক জন মানুষও যে কেন তাঁদের সমর্থন করেন, বুঝি না!’’ পরে একশো দিনের কাজে বকেয়া টাকা’র দাবিতে লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে বিধানসভায় পরিষদীয় দলের ধর্নাতেও শামিল হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

শাহের সভা ঘিরে প্রচারের জবাবে এ দিন সকাল থেকেই দলের পাল্টা প্রচারের ব্যবস্থা করেছিল তৃণমূল। শাহের উদ্দেশে শহর জুড়ে ‘মোটা ভাই, ভোট নাই’ লেখা ফ্লেক্স ও ব্যানার ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। দলের একাধিক নেতা, মন্ত্রী সকাল থেকেই রাজ্যের দাবি-দাওয়া সংক্রান্ত একগুচ্ছ ‘প্রশ্ন’ রাখেন শাহের জন্য। তবে উল্লেখযোগ্য ভাবে এ দিন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও বক্তব্য সামনে আসেনি। বরাবর সমাজমাধ্যমে সক্রিয় অভিষেক কিন্তু এ দিন প্রকাশ্যে শাহ বা বিজেপি সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করেননি। দলের তরফে দুই মন্ত্রী শশী পাঁজা ও পার্থ ভৌমিক এবং রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেছেন, শাহেরা এখন ‘সাধু’ সেজে তৃণমূলকে ‘চোর’ বলছেন!

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mamata Banerjee TMC BJP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy