নসিব শেখ। দশম শ্রেণি, ইউনিয়ন অ্যাকাডেমি, কালচিনি
স্কুলে যাব বলে কাজটাই আপাতত ছেড়ে দিলাম।
টানাটানির সংসার আমাদের। কালচিনির রায়মাটাং চা বাগানে বাইশ লাইনে থাকি ঠিকই, কিন্তু বাবা বাগানে কাজ করেন না। তিনি মিস্ত্রি। তাঁর সামান্য আয়ে আমাদের সংসার কষ্টেসৃষ্টে চলে। তবু বাবা আমাদের কখনও পড়াশোনা ছেড়ে কাজ করতে বলেননি। বরং পড়াশোনাতেই উৎসাহ দেন। কিন্তু করোনায় স্কুল বন্ধ হল। কবে খুলবে, তারও কোনও নিশ্চয়তা ছিল না। তখনই কাজ করার কথা প্রথম আমার মাথায় আসে। মনে হয়েছিল, এতে সংসারেরও সুরাহা হবে। একটি গ্যারাজে ঢুকলাম। কাজ তো জানি না। প্রথমেই হাত পাকানোর কাজ পড়ল। তাতে দৈনিক হাজিরাও ছিল মোটে পঞ্চাশ টাকা। ওই সামান্য ক’টা টাকার জন্য সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কাজ করতাম। যখন বাড়ি ফিরতাম, খাটুনির পরে আর বেশিরভাগ দিন পড়তে বসতে ইচ্ছে করত না।
এরই মধ্যে দিন কয়েক আগে বন্ধুদের কাছে শুনলাম, আবার নাকি স্কুল খুলছে। মনটা খুশি হয়ে গেল। দৌড়ে গিয়ে বাবাকে জানাই। বাবা আমায় আবার স্কুলে যেতে বলেন। তাই গ্যারাজের কাজ ছেড়ে প্রথম দিনই স্কুলে গিয়েছি। অনেক দিন পর শিক্ষক ও বন্ধুদের সঙ্গে দেখা। সামনেই মাধ্যমিক পরীক্ষা। তাই এখন রোজই স্কুলে যাব। তবে যখন স্কুল ছুটি থাকবে, তখন গ্যারাজে কাজ করব। গ্যারাজের মালিককে সেটাই জানিয়েছি। বাবার সঙ্গে আলোচনাতেও তেমনটাই ঠিক হয়েছে। এই দেড় বছরে একটাই অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার। বইয়ের থেকে বড় বন্ধু আর কেউ নেই।
নসিব শেখ
দশম শ্রেণি, ইউনিয়ন অ্যাকাডেমি, কালচিনি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy