Advertisement
E-Paper

কেন্দ্র-বিরোধী আন্দোলনের ডাক দিল কংগ্রেস, রাজি বাম-তৃণমূল

জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা প্রকল্প বা একশো দিনের কাজের পরিধি কমিয়ে আনার কেন্দ্রীয় সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একযোগে আন্দোলনে নামার প্রস্তাব দিল কংগ্রেস। বিজেপি সরকারের ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় এবং রাজ্যের স্বার্থে এমন আন্দোলনে আপত্তির কিছু দেখছে না শাসক দল তৃণমূল এবং প্রধান বিরোধী দল সিপিএম-ও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৪ ০৩:২২

জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা প্রকল্প বা একশো দিনের কাজের পরিধি কমিয়ে আনার কেন্দ্রীয় সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একযোগে আন্দোলনে নামার প্রস্তাব দিল কংগ্রেস। বিজেপি সরকারের ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় এবং রাজ্যের স্বার্থে এমন আন্দোলনে আপত্তির কিছু দেখছে না শাসক দল তৃণমূল এবং প্রধান বিরোধী দল সিপিএম-ও। একশো দিনের কাজের প্রকল্পকে উপলক্ষ করে কংগ্রেস, তৃণমূল এবং সিপিএমের যে ভাবে এক সুর ধরা পড়ছে, তাতে বিজেপি-বিরোধিতায় তাৎপর্যপূর্ণ রাজনৈতিক সমীকরণই দেখা যাচ্ছে।

একশো দিনের কাজ ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধীর স্বপ্নের প্রকল্প। তাঁর উদ্যোগে এবং প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের তৎপরতায় ইউপিএ-১ জমানায় দেশ জুড়ে ওই প্রকল্প চালু হয়েছিল। কাজের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সংসদে আইনও পাশ করা হয়েছিল। তখন ইউপিএ-র সমর্থক ছিল বামেরা। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সরকার সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জানুয়ারি, ২০১৫ থেকে শুধু অনগ্রসর ব্লকগুলিতে ওই প্রকল্প চালু থাকবে। অর্থাৎ দেশের সর্বত্র গরিব বা কর্মহীন মানুষ একশো দিনের কাজের আওতায় আসবেন না। মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্ত গ্রামীণ মানুষের রুজি-রোজগারের উপরে সরাসরি আঘাত এবং এর বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলনে নামা উচিত বলে সনিয়ার সঙ্গে দিল্লিতে মঙ্গলবার দেখা করে প্রস্তাব দেন কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়া। দলের সর্বভারতীয় সভানেত্রীর সবুজ সঙ্কেত পেয়েই মানসবাবু বুধবার এই নিয়ে আন্দোলনে ‘ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী’ দলগুলিকে পাশে চেয়েছেন। সেই আহ্বানেই ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে সিপিএম এবং তৃণমূল।

সনিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরে ফিরে মানসবাবু এ দিন বলেন, “যে পরিকল্পনা গরিব মানুষের রুটি-রুজির ব্যবস্থা করছিল, গ্রামীণ অর্থনীতির বুনিয়াদ তৈরি করছিল, তার উদ্দেশ্যই এই সিদ্ধান্তের ফলে ব্যাহত হবে। এর বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সনিয়া গাঁধীর নির্দেশ চেয়েছিলাম। আমরা মনে করি, গরিব মানুষের

রুটি-রুজি কেড়ে নেওয়ার এই অভিপ্রায়ের বিরুদ্ধে সব ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী দলের আন্দোলন করা উচিত।” গোটা দেশের ৯১৬টি জেলায় এখন এই প্রকল্প চলে। সেই হিসাবে পশ্চিমবঙ্গের ৩৪১টি ব্লকের প্রায় ৪১ হাজার গ্রাম এর আওতায় পড়ে। কেন্দ্রের নয়া সিদ্ধান্তের জেরে আগামী বছর জানুয়ারি থেকে রাজ্যে ১০০ দিনের কাজের আওতাধীন ব্লকের সংখ্যা নেমে আসবে ১২৪-এ।

মোদী সরকারের ওই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে মঙ্গলবারই ফেসবুকে বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সূত্র ধরেই মানসবাবু এ দিন বলেছেন, “এটাকে শুধু সনিয়া গাঁধী বা কংগ্রেসের প্রকল্প হিসাবে না দেখে গ্রামীণ মানুষের রোজগারের দিক থেকে ভাবুন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রে কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে যে ভাবে ঝাঁঝালো বিরোধিতা তিনি করতেন, আশা করি মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও তা-ই করবেন। প্রয়োজনে দিল্লিতে সর্বদল প্রতিনিধি নিয়েও প্রতিবাদ জানানো যেতে পারে।” কংগ্রেসের এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলার উন্নয়নই তৃণমূলের মূল লক্ষ্য। বাংলার উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, এমন কোনও কিছুই মেনে নেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। এ ব্যাপারে যারা সঙ্গে আসতে চান, তাঁদের সহযোগিতা নিতে কোনও অসুবিধা নেই। দেরিতে হলেও তাঁদের যে বোধোদয় হয়েছে, এটা ভাল লক্ষণ!”

একই ভাবে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র জানিয়েছেন, সিপিএমের পলিটব্যুরো বিবৃতি দিয়ে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে। এই উদ্যোগে তৃণমূল থাকলেও বিশেষ আপত্তির কিছু নেই বলে সূর্যবাবুর মত। উদাহরণ দেন, ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি আন্দোলনের উদ্যোগে ট্রেড ইউনিয়নগুলি তৃণমূলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। যদিও তারা আসেনি।

তবে ‘জেশপ বাঁচাও’-এর দাবিতে অন্যদের সঙ্গেই আন্দোলনে সামিল হয়েছে তৃণমূল।

central government congress cpm tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy